Home » শেষের পাতা » বাজার মনিটরিংয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত

অচল হয়ে পড়েছে না’গঞ্জ

২৮ জুন, ২০২২ | ৯:৩২ পূর্বাহ্ণ | ডান্ডিবার্তা | 359 Views

হাবিবুর রহমান বাদল

প্রশাসনিক অদক্ষতা আর আইন প্রয়োগে শিথিলতার কারণে নারায়ণগঞ্জ শহর এখন চলাচলের সম্পূর্ন অযোগ্য হয়ে পড়েছে বলে নগরবাসীর অভিযোগ। মাঝে মধ্যে পুলিশের লোক দেখানো তৎপরতা দেখা গেলেও বাস্তবে নারায়ণগঞ্জ শহরকে চলাচল উপযোগি করে গড়ে তোলার উদ্যোগ প্রশাসন কিংবা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মধ্যে দেখা যায় না। যে কারণে যত্রতত্র অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড, ব্যাটারী চালিত রিকশায় যেমন সয়লাব শহর তেমনই ফুটপাত দখল করে দোকান পাট এখন মূল সড়ক দখল করে চলছে। এ ব্যপারে নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী একাধিক বার তার অসায়ত্ব প্রকাশ করলেও প্রশাসন রহস্যজনক কারণে নির্বিকার। ফুটপাত আর সড়ক দখলকারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন চাঁদা উঠছে কয়েক লাখ টাকা। গত রমজানে এক মাসে ফুটপাত থেকে ৩ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের সচিত্র প্রতিবেদন দৈনিক ডান্ডিবার্তায় প্রকাশের পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যপারে কোন উদ্যোগী ভ’মিকা দেখা যায়নি। ফুটপাত ও সড়ক দখল করে অবৈধ দোকানপাট বসার কারণে শহরে চলাচল দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। এসকল চাঁদার ভাগ পুলিশের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতার পকেটেও যায় বলে খোদ হকার নেতাদের বক্তব্য। নারায়ণগঞ্জ শহরে ব্যাটারী চালিত রিকশা ও ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ অথচ কয়েকটি গলি মুখে তাদের বাধা দিলেও এইসব অবৈধ রিকশা ও ইজিবাইক শহর দখল করে দাপটের সাথে চলছে। আর পুলিশ এসব দেখেও না দেখার ভান করছে। শহরে চলাচলকারী ব্যটারী চালিত রিকশা ও ইজিবাইকের কাছ থেকে বিশেষ টোকেনের মাধ্যমে মাসে ১৫শ’ টাকা নেয়ার বদলে এইসব ইজিবাইক ও অটো রিকশা অবাধে চলছে। ফলে প্রতিনিয়ত ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে আর সেই সাথে চোরাই পথে এইসব অটো রিকশা ও ইজিবাইকের ব্যটারী চার্জ দিয়ে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ এমন একটা শহর যেখানে নতুন করে সড়ক নির্মাণের কোন সম্ভাবনা নেই। একমাত্র বঙ্গবন্ধু সড়কটি যাতায়াতের উপযোগি বলা চলে।  তাও এই সড়কের ফুটপাত অধিকাংশ সময় হকারদের দখলে থাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা শহরময় যানজট থাকায় তা থেকে বাঁচতে পায়ে হেঁটে চলাও দুস্কর। অপরদিকে অনেক দেন দরবার আর সংবাদ প্রকাশের পর মীরজুমলা সড়কটি তৎকালিন পৌরসভা সংস্কার করে যান চলাচলের উপযোগি করে তুললেও বর্তমানে সেই মীরজুমলা সড়কটি মাছ বাজার থেকে শুরু করে মুরগী ও তরিতরকারীর বাজারে পরিনত হয়েছে। এই পথটি দিয়ে গাড়িতো দূরের কথা রিকশা চলাচলেও চরম দুভোর্গ পোহাতে হয়। অথচ কোন প্রকার ইজারা ছাড়াই একটি মহল সড়ক দখল করে কাঁচাবাজার বসিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। শহরের ১নং রেল গেইট থেকে চাড়ারগোপ পর্যন্ত সিরাজদৌল্লাহ সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ১নং রেল গেইট থেকে চাড়ারগোপ পর্যন্ত সড়কের অর্ধেক দখল করে বিভিন্ন দোকানপাটা বসিয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি করেছে যে কারণে এই সড়কের পুরোচাপ এসে পড়ে বঙ্গবন্ধু সড়কে। একই অবস্থা শায়েস্তাখান সড়কের। এই সড়কের ২ পাশে অবৈধ দোকানপাট বসিয়ে নির্বিঘেœ ব্যবসা চালাচ্ছে এক শ্রেনীর হকার। গতকাল সোমবার রাত ৮টায় নারায়ণঞ্জ হাই স্কুলের সামনে অর্ধেক সড়ক দখল করে দোকানপাট বসার কারণে অটো রিকশা ও বাসের দাপটে পথচারিদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায়। অথচ পিছনে আটকে পড়া টহল পুলিশ জরুরী সাইরেন বাজিয়ে চললেও যাদের কারণে আটকে পড়া তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। একই অবস্থা সমস্ত নারায়গঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র গুলিতে। যে কারণে প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা সাধারণ মানুষকে যানজটে আটকে চরম দুভোর্গ পোহাতে হয়। অথচ হকার নেতাদের দাপুটে বক্তব্য আমরা পুলিশ ও কতিপয় নেতাদের নিয়মিত মাসোহারা দিয়েই এই ভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি। যদিও মেয়র একাধিক বার এসব ফুটপাত উচ্ছেদের কথা বললেও সড়ক ৩টি যান চলাচলের জন্য প্রশাসনের কোন সহযোগিতা চেয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। তবে ফুটপাত দখল মুক্ত করতে নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী সুবিধা ভোগিদের আক্রমনের শিকার হয়েছে এটা বাস্তব সত্য। এ ব্যপারে পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, ফুটপাত হকার মুক্ত করতে আমরা সবসময় কাজ করে চলেছি। কেউ যদি অর্থের বিনিময়ে এদের সুবিধা দেয় তবে তা তদন্ত করে দেখা হবে। এত কিছুর পরও নগরবাসী চায় স্থানীয় সাংসদ, মেয়র ও প্রশাসন যৌথ উদ্যোগ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরকে চলাচলের উপযোগি করে তোলা হউক। অন্যথায় এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই নারায়ণগঞ্জ শহর শুধু চলাচলের অযোগ্য নয়, বরং বসবাসের অযোগ্য হয়ে একটি যানজটের নগরীতে পরিনত হবে।

Comment Heare

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *