আস্থাহীনতায় ভূগছে জাকির!

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
দুইবার মতিউর রহমান মতি এবং একবার জাকির হোসেন ওরফে ঘি জাকির আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাদের দুজনের সেবা, মানসিকতা সম্পর্কে সবারই জানা। স্থানীয়দের মতে, তারা দুজনই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ি বাস্তবায়ন করতে পারেননি। দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন সমানতালে এগিয়ে গেলেও এই ইউনিয়নটি ছিলো বরাবরই অবহেলিত। স্থানীয়দের একটি হাসপাতালের দাবি থাকলেও সেটি পুরণ করতে পারেননি তারা কেউই। সূত্র বলছে এসব কারণে উভয়ের দিক থেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। যার জ্বলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত মতিউর রহমান মতি। তিনি নৌকা প্রতীক পেয়েও গণসংযোগ করার জন্য কোনো লোকজন পাননি। ফলশ্রুতিতে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান এবং নৌকা প্রতীক পান হেফাজত জামাত ঘেঁষা বিএনপির সমর্থক জাকির হোসেন ওরফে ঘি জাকির। তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ভাড়া করে এনে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে, এবারের নির্বাচনে সাধারণ মানুষের উৎসাহ, অনুপ্রেরণা আর আশীর্বাদ পাচ্ছেন সায়েম আহমেদ নামে একজন যুবক। তিনি এই ইউনিয়নে আনারস প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। সাধারণ ভোটাররা তাকে ঘিরেই নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন। তারা বলছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সায়েম নির্বাচিত হবেন। কেননা, পুরো আলীরটেকজুড়েই তার পক্ষে জনজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যা গেল কদিনের গণসংযোগেই প্রতীয়মান হয়েছে। সূত্র জানায়, সায়েম আহমেদ দীর্ঘদিন ধরেই আলীরটেকবাসীর সুখে দুঃখে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। দরিদ্র, অসহায় কেউ তার কাছে সহযোগিতার জন্য এসে ফিরে গেছেন এমন নজির নেই বলেই স্থানীয়দের দাবি। বয়সে যুবক হলেও সামাজিক কার্যকলাপের দিক দিয়ে তিনি মতিউর রহমান মতি ও জাকির হোসেন ওরফে ঘি জাকিরের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছেন আগের থেকেই। জাকির কিংবা মতি নির্বাচন কেন্দ্রিক জনদরদী হয়ে যান বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে একটি সূত্র জানায়, জাকির হোসেন নৌকা প্রতীক পেলেও জনসমর্থন সেভাবে আদায় করতে পারছেন না। যার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারি হেফাজতে ইসলামের উপর তিনি ভর করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার মনোনয়নপত্র জমা থেকে শুরু করে গণসংযোগে দেখা গেছে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের। যার নেতৃত্বে ছিলেন মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান। তিনি নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদের সভাপতি এবং হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সূত্র জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনায় একে একে নয়টি মামলা দায়ের হলেও জাদুরকাঠির স্পর্শে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন ফেরদাউসুর রহমান। তবে, ওই ঘটনার পর থেকে তিনি আড়ালে চলে গিয়েছিলেন। বর্তমানে জাকির হোসেনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কচ্ছপের মত মাথা বের করে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছেন এই ফেরদাউস। স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, জাকির হেফাজতে ভর যেমন করেছেন তেমনি জাকিরকে ঘিরে হেফাজতে ইসলাম আবারও পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে। যা দেশ ও জাতির জন্য দুঃখজনক। এদিকে নির্বাচন থেকে সায়েমকে সরাতে শুরুতেই মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিলো তার বিরুদ্ধে। এর নেপথ্যে ছিলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাকির হোসেন ওরফে ঘি জাকির। যার কারণে প্রচার প্রচারণায় নামতে পারেননি আলীরটেকবাসীকে স্বপ্ন দেখানো যুবক সায়েম। পরবর্তীতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে নিয়ে এলাকায় ফিরেন। প্রথম গণসংযোগেই তিনি বাজিমাত করেন। হাজারও মানুষ এসে তার গণসংযোগে যুক্ত হোন। এভাবে প্রতিদিনই তার গণসংযোগে সাধারণ ভোটাররা যুক্ত হচ্ছেন এবং আনারস প্রতীকে তার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন সকলের কাছে। অপরদিকে সায়েমদ আহমেদও প্রতিদিন বিরামহীনভাবে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সালাম দিচ্ছেন এবং তাকে যোগ্য মনে হলে তাদের ভোট প্রত্যাশার দাবিও রাখছেন। এতে তিনি যথেষ্ট পরিমাণের সাড়াও পাচ্ছেন। এখন অপেক্ষা কেবল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের। প্রশাসন যদি নিরপেক্ষতা অবলম্বন করে এবং ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে পারে তবে, সায়েম আহমেদ নির্বাচিত হতে পারেন বলে বহুজনই মতামত ব্যক্ত করেছেন। কেননা, আলীরটেকবাসীর কাছে তিনি এরমধ্যেই অত্যন্ত জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য। বিপরীতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ঘি জাকিরের প্রতি মানুষ সেভাবে আস্থা রাখতে পারছেন না। তারা বলছেন, এরপূর্বেও জাকির হোসেনের প্রতি মানুষ আস্থা রেখেছিলেন। মতিকে নির্বাচিত না করে জাকিরকে জয়ী করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর জাকির হোসেন সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। তিনি রাখতে পারেননি তার প্রতিশ্রুতি। এছাড়াও নির্বাচন না থাকার কারণে সাধারণ মানুষও তার দেখা পায়নি। বর্তমানে নির্বাচন বলেই মানুষ তাকে দেখতে পাচ্ছেন। এসব কারণে মানুষ তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
Leave a Reply