এশিয়ার মঞ্চে স্বর্ণ জিতলেন বাংলাদেশের ইমরানুর

কাজাখাস্তানে এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে ৬০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ পাওয়া ইমরানুর রহমান খেলা শেষে শনিবার রাতে ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন। সেখানে ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবকদের প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন ইমরানুর রহমান। ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে ইমরানুর রহমান নিজের কোনো কথা বলেননি। কিংবা বলতে পারলেন না।
একটা সাফল্য এলে খেলোয়াড়রা তার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করেন। সমস্যার কথা উল্লেখ করেন। সামনে এগিয়ে যেতে হলে কী প্রয়োজন সেই কথাগুলো তুলে ধরেন। খেলাটাকে উন্নয়নের পথে নিতে হলে নানা দাবির কথা বলেন। কিন্তু কোনো কথা ছাড়াই ইমরানুরের ভিডিও বার্তা শেষ হয়।
ইমরানুর বলতে চেয়েছিলেন কিনা তা জানা যায়নি। তবে তার কণ্ঠের বক্তব্য যে কারো মন্ত্র, সেটা পরিষ্কার। অন্যের সাজানো কথাগুলো হুবহু ইমরানুরের কণ্ঠে শোনা গেল। কারণ তিনি যে কথাগুলো বলেছেন সেই একই কথা ৬০ মিটার স্প্রিন্টের পর পরই ফেডারেশনের একজন কর্মকর্তার কণ্ঠে শোনা গিয়েছিল। শেখানো কথা বলতে গিয়ে নিজের অন্তর নিহিত কথাগুলো চাপা পড়ে গেল।
ইমরানুর ঢাকায় আসবেন। আজ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের দুই কর্মকর্তা আসবেন আর আগামীকাল ঢাকায় আসবেন ইমরানুর রহমান-কাজাখাস্তান থেকে ফোনে জানিয়েছেন অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব মন্টু।
সিলেটের সন্তান ইমরানুর রহমান লন্ডন প্রবাসী। সেখানেই থাকেন। ওখানে চাকরি করেন। আর উন্নত ক্রীড়াসামগ্রী ব্যবহার করে অনুশীলন করেন। বাংলাদেশে থাকলে ইউরোপের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া কঠিন। অনুশীলন করতে গেলে উন্নত ব্যবস্থা নেই। ইমরানুর লন্ডনে থাকেন বলে সেখানকার সুযোগ-সুবিধাগুলো সহজেই কাজে লাগাতে পারেন। তারপর অসুবিধাও কম না। কারণ জীবিকা নির্বাহের জন্য ইমরানুরকে চাকরি করতে হয়। বাংলাদেশে খেলতে এসে জানিয়েছিলেন তার স্পন্সর দরকার। কিন্তু অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন সেটা করে দিতে পারেনি। স্পন্সর ছাড়া ইমরানুর কেনই বা নিজের চাকরি ছেড়ে দিয়ে শুধু অনুশীলনে ধ্যান-মগ্ন থাকবেন।
কোথাও আন্তর্জাতিক খেলা থাকলে ইমরানুর রহমান লন্ডন থেকে সেই দেশে চলে যান। অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনও তাকে সেই সুযোগ দিয়ে রেখেছে। ইমরানুর একটা সাফল্য দিয়েছে। যেটা আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিকসে অতীতের রেকর্ডে নেই। নজির না থাকা দেশের অ্যাথলেটিকস এশিয়ার মঞ্চ হতে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছেন এই কৃতিত্ব পুরোপুরি ইমরানুর রহমানের। একটা বিতর্কিত পরিস্থিতির মধ্যে লন্ডন থেকে ইমরানুরকে এনে বাংলাদেশে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেটি ২০২১ সালে। বাংলাদেশে খেলানো যায় কিনা সেটা যাচাই করা হয়েছিল বিকেএসপিতে। যাচাই করে ইমরানুরকে বাংলাদেশে খেলার পথ খুলে দেওয়া হয়। দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক আসরে খেলেছেন দেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমান। তার হাত ধরে সিনিয়র লেভেলে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে স্বর্ণ পেল বাংলাদেশ, মুখ উজ্জ্বল হলো বাংলাদেশের।
Leave a Reply