ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পোষাক খাতে প্রভাব

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির মধ্যেই বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। গত বৃহস্পতিবার থেকেই কার্যকর হয়েছে ডিজেল ও কেরোসিনের নতুন দাম। এক লাফে লিটার প্রতি বেড়েছে ১৫ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে করে পরিবহন ও কৃষি ব্যয় বাড়বে, প্রভাব পড়তে পারে বিদ্যুতের দামেও; সবমিলিয়ে চাপ বাড়বে সাধারণ মানুষের। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি যেমন থমকে গিয়েছিল, একইভাবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আয়ের ওপরও এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন, অনেকের ব্যবসাও বন্ধ হয়েছে। ফলে আয় কমে এসেছে দেশের একটি বড় অংশের মানুষের। এর বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার মধ্যেই জ্বালানি তেলের এই দামের প্রভাব সাধারণ মানুষের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব থেকে বাদ পরবে না তৈরি পোষাক শিল্পও। কেননা পোষাক শিল্পের প্রতিটি কারখানায় জ্বালানি তেলের ব্যবহার রয়েছে উৎপাদন থেকে শুরু করে এর স্থানান্তর পর্যন্ত। যেকোন একটি গার্মেন্টস বা কারখানার উৎপাদনের পেছনে সবচেয়ে প্রয়োজনিয় বিষয়টি হচ্ছে বিদুৎ, যার বেশ বড় একটি অংশ পূরণ করে জেনেরেটর, যা ডিজেল দ্বারা চালিত হয়। অন্য দিকে, উৎপাদিত পন্য এক স্থান হতে অন্যস্থানে পৌছাতে (স্থানান্তর) বাংলাদেশে ব্যবহৃত বেশির ভাগ পরিবহন চালিত হয় ডিজেলের মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পরেছে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রূটে চলাচল করা গণপরিবহনেও। তাই গার্মেন্টেসর পরিবহন খরচও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এরই মাঝে নারায়ণগঞ্জে জ্বালানী তেলের দাম ও ঢাকা-নারায়গঞ্জ রুটে বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের নেতৃবৃন্দ। তারা বলছে, এখানে প্রশাসন বিভিন্ন সময় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় জনগণকে বার বার এই পরিবহন মালিকদের মুখোমুখি হতে হয়েছে। ‘ডিজেলের দাম বৃদ্ধি, উৎপাদন ও স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কী রূপ প্রভাব ফেলতে পারে’ এমন প্রশ্নের উত্তরে এমবি নিট ফ্যাশন লিমিটেড এর কর্নধার ও দেশের নিট ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের দেশেও এর দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই যে তারা দাম বাড়ায়ে দিলো, এতে পরিবহনের খরচটাও বেড়ে গেছে, পাশাপাশি আমাদের উৎপাদন খরচ বাড়বে। তেলের দাম এভাবে বৃদ্ধি পেলে সব কিছুরেই দাম বেড়ে যায়। আমদানি এবং রপ্তানি দুটোতেই আমাদের খরচ বেড়ে যায়। সব রকমের এক্সেসারিজ এর দাম বেড়ে যাচ্ছে। এতে আমরা আর্ন্তজাতিক বাজারে আমাদের জিডিপি হারাচ্ছি। বিকেএমইএ’র শীর্ষ এ নেতা আরও বলেন, আল্টিমেটলি আমাদের কস্টিং বেড়ে যাচ্ছে। দ্রব্য মুল্যের দামও বেড়ে যাচ্ছে। আজকে দেখলাম কথা নাই বার্তা নাই ৩৬ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা হয়ে যাচ্ছে। আমাদের মার্কেটের যে কম্পিটেটিভ, সেটি হারাচ্ছি। আমরা সরকারকে এ বিষয়ে চিঠি দিবো। এখন সরকার যদি মনে করে তাহলে দাম কমাবে। উল্লেখ্য, গত বুধবার রাত ১০টায় পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটার ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এর আগে সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছিল। সেই সময় ডিজেলের দাম ৬৫ টাকা, কেরোসিনের দাম ৬৫ টাকা, অকটেনের দাম ৮৯ টাকা ও পেট্রলের দাম ৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
Leave a Reply