নাসিক নির্বাচনে দ্বিধা দ্বন্দ্বে তৃণমূলে

ডান্ডিবার্তা রির্পোট
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারাদের ধ্রুমজালে দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়েছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। একদিকে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের অনৈক্য অপরদিকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা রয়েছেন বেকায়দায়। স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারকে দল থেকে অব্যাহতি দিলেও স্থানীয় নেতারা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভীর বিপক্ষে তৈমূরকেই বেছে নিয়েছেন। স্থানীয় নেতাদের মতে, র্দীঘদিন ক্ষমতার বাহিরে থাকায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের চাপে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে বিএনপি। তাই নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে শক্তির জানান দিতে ও প্রতিবাদের অংশ হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূরের পক্ষে কাজ কারণের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। মূলত নাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধান দুই দলের কেন্দ্রীয় অবস্থান স্পষ্ট নয় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের কাছে। আওয়ামী লীগ ঘরোয়া বৈঠকে দলবিরোধী তৎপরতা বন্ধে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। কিন্তু দলটি দায়িত্বশীল নেতাদের বিতর্কিত ভূমিকা দূর করতে পারছে না। অন্যদিকে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ায় প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হলেও তাঁর সঙ্গে থাকা নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বিএনপি। নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। তাঁরা বলছেন, আওয়ামী লীগের একটি অংশ নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে সরব নেই। কেউ কেউ ভেতরে-ভেতরে বিরোধী পক্ষকে সমর্থন দিচ্ছে। আবার বিএনপির নেতাদেরও একটি অংশ তৈমুর আলম খন্দকারের পক্ষে মাঠে নেই। এই পরিস্থিতিতে দল দুটির কেন্দ্রীয় বার্তা নিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংশয় আছে। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তবে দলটির নেতা তৈমুর আলম খন্দকার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে লড়ছেন। গত মঙ্গলবার দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিএনপি। এর আগে ২৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা আহ্বায়কের পদ থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভী দীর্ঘদিন চেয়ার দখলে রাখায় তার ভিতরে অহমীকা চলে আসার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বিগত সময়ে মামলায় করায় নৌকা প্রতীক পাওয়ার পরও আইভীর পক্ষে মাঠে নামার অনীহা প্রকাশ করছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের একাংশ নেতারা। বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের কেন্দ্রীয় অবস্থান নিয়ে বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের কিছুটা বিভ্রান্তি আছে। দলীয় সিদ্ধান্তে কেউ কেউ ক্ষুব্ধও হয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, নির্বাচনের সুযোগে নেতা-কর্মীরা ঘর থেকে বের হতে পারছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির স্লোগানও দিতে পারছেন। অথচ তৈমুরকে দলীয় পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আবার অন্য নেতাদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এর আগে ২০১১ সালে শেষ মুহূর্তে তৈমুর আলম সিটি নির্বাচন থেকে সরে যান দলের সিদ্ধান্তে। তবে এবার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করার ঘোষনা দিয়েছেন তৈমূর আলম খন্দকার। তার দাবী, এবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে সাধারণ মানুষ কবরে গিয়েও আমার বিচার করবে। তবে তৈমূরকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়ে আইভীর দাবী, নির্বাচনের কৌশল হিসেবে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত বিএনপির। তাই তৈমুরকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি কোনো কোনো নেতা বিএনপির কৌশল হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মনে করেন, তৈমুরের নির্বাচন করার ফায়দা নিতে পারে সরকার। এ কারণে তাঁকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে, আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা বলছেন, কেন্দ্রীয় নেতারা নিয়মিত নারায়ণগঞ্জে আসছেন। সরকারি দলের স্থানীয় সাংসদ শামীম ওসমানের সঙ্গে এখন পর্যন্ত তাঁদের কোনো বৈঠকের কথা জানা যায়নি। তবে গত সোমবার রাতে স্থানীয় থানা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
Leave a Reply