নাসিক নির্বাচনে নানামুখি তৎপরতা

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
স্থানীয় নির্বাচন আসলে দেশের অন্য জেলার তুলনায় নারায়ণগঞ্জে চিত্র থাকে ভিন্ন। গত ১১ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান বেশি নির্বাচিত হলেও বন্দরের চিত্র উল্টো দেখা মিলেছে। বিভিন্ন মেকানীজমের মাধ্যমে বিতর্কিতরাও আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছেন। এদের মধ্যে উল্লেখ্য কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল আলম সেন্টু নৌকা প্রতীক পাওয়ায় জেলা জুড়েই সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দু হলেও অবশেষে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছে। কেননা সেন্টু বিএনপি থেকে বহিষ্কার হলেও আনুষ্ঠনিক ভাবে আওয়ামীলীগে যোগ না দিয়েই নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান হন। সেন্টু ছাড়াও বিতর্কিত ব্যক্তি, হত্যা মামলার আসামীরাও নৌকা প্রতীক পেয়েছিল। মূলত প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিশেষ মেকানীজমে অযোগ্য অনেকেই নৌকা প্রতীক বাগিয়ে নিয়েছেন। ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে বন্দর উপজেলার চিত্র হতাশাজনক। বন্দরে ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ১টি আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গাজী এম এ সালাম। আর বাকি ৪টি কৌশলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সত্তত্ব প্রার্থী কামাল হোসেন হলেও তিনি জেলা যুব সংহতির নেতা। নিজ দল, শরীক দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির কুটকৌশলে আওয়ামীলীগের পরাজয় হয়। নৌকা প্রতীক নিয়ে মাসুম আহম্মদ পরাজিত হয়েছে। এটা মাসুম আহম্মেদের পরাজয় না, এটা বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের পরাজয় বলে মনে করেন তৃনমুল নেতাকর্মীরা। আগামী ২৮নভেম্বর সোনারগাঁও উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। একই সাথে নাসিক নির্বাচন নিয়ে চলছে নির্বাচনী মেকানীজম। মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনী মেকানীজমে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। তবে মনোনয়ন প্রতিযোগীতায় বর্তমান মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন। মূলত আগামী জানুয়ারি মাসে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এরইমধ্যে নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী। পাড়া-মহল্লায় উন্নয়ণ কাজ পরিদর্শনে ছুটছেন তিনি। পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নেও কাজ করছেন মেয়র আইভী। আইভী ছাড়াও বর্তমান কাউন্সিলররাও উন্নয়ণমূলক কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। এদিকে আইভীর পাশাপাশি আগামীতে মেয়র পদে নির্বাচনে মাঠে নেমেছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা। নির্বাচনী মেকানীজমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনসহ মেয়র আইভীকে ইঙ্গিত করে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন। বিশেষ করে ২৭টি ওয়ার্ডে কর্মীসভায় বর্তমান মেয়রের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হয়েছে। উন্নয়ণের মানে মেয়রের অনিয়মের কথাও তুলে ধরছেন খোকন সাহা। এতে চুপ করে বসে থাকেননি মেয়র আইভীও। সূত্র বলছে, নির্বাচনের আগে আরো কয়েকজন প্রার্থী দলীয় প্রতীক পেতে মাঠে নামবেন বলে জানাগেছে। যদিও তা নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন প্রার্থী মাঠে নামেনি। শুধুমাত্র খোকন সাহাই মাঠে নেমেছেন। তবে সাংসদ শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর বিরোধের কারণে শামীম ওসমানের পক্ষ থেকে নাসিক নির্বাচনে শক্ত প্রার্থীর সন্ধানে করা হচ্ছে। তবে শামীম ওসমানের অনুসারিরা বলছেন, দল যাকেই মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই কাজ করবে। গত নাসিক নির্বাচনেও মেয়র আইভীর সাথে শামীম ওসমানের বিরোধ থাকা সত্বেও শামীম অনুসারিরা দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। এমনকি সাংসদ শামীম ওসমানও প্রকাশ্যেই মেয়র আইভীকে ভোট দেয়ার ছবি ভাইরাল হয়েছিল। ঐসময় আইন অমান্য করে প্রকাশ্যে ভোট দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। তবে শামীম ওসমান বলেছিলেন, দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করা আমাদের দায়িত্ব। তবে আগামী নাসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে নানামুখী মেকানীজম চলছে।
Leave a Reply