নূরের স্থান নিতে চায় নূর উদ্দিন

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে মাঠে নেমেছে বহুল আলোচিত ৭ খুন মামলার প্রধান আসামি ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত কারাবন্ধি নূর হোসনের সন্ত্রাসী বাহিনী। স্থানীয়দের সাথে যোগ দিচ্ছে বহিরাগত সন্ত্রাসীরাও। নূর হোসেনের হারানো সা¤্রাজ্য পুনরুদ্ধার করতে চার নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচন করছেন নূরের ভাই নূর উদ্দিন মিয়া। আধিপত্য ঠিকিয়ে রাখতে ৩নং ওয়ার্ডকে সহিংস করে তুলছে নূর হোসেনের ভাতিজা শাহজালাল বাদল। প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে ঘায়েল ও ভোটারদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে কিশোরগ্যাং ও সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়েছে চাচা ভাতিজা। জানা গেছে, বিগত ২০১১ সালের নির্বাচনে নাসিক ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হয়ে অপরাধ জগতের স¤্রাট বনে যায় নূর হোসেন। সাত খুনের পর নূরের রাজত্ব তছনছ হয়ে যায়। নূর বাহিনীর কেহ গ্রেপ্তার ও কেহ পালিয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক ও কাউন্সিলর পদ হারায় নূর হোসেন। রাজত্ব ধরে রাখতে উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়ে জয়ী হয় নূর বাহিনীর অন্যতম সদস্য অরিফুল হক হাসান। কিন্তু সিংহাসনে বসার পর হাসান পল্টি দেয় নূরকে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে কাজে আসেনি নূর বাহিনীর কৌশল। সিংহাসনের বহাল থাকেন হাসান। নূরের সেই হারানো রাজত্ব পুনরুদ্ধার করে সিংহাসনে বসতে নির্বাচন করছেন আপন ভাই নূর উদ্দিন। তার গায়ে বিএনপির সিল মারা। তাই নির্বাচনের অনেক আগেই বিএনপি ত্যাগের বিজ্ঞপ্তি দেয় গণমাধ্যমে। আওয়ামীলীগে মিশতে চাইলেও সুবিধা করতে পারেনি। তবে অনুপ্রবেশকারী নব্য আওয়ামীলীগরা রয়েছে নূরউদ্দিনের সাথে। ডাকাতি ও পুলিশের অস্ত্রলোডসহ একাধিক মামলার আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন আশিক এখন নূর উদ্দিনের প্রধান সেনাপতি। সবসময় থাকেন শোডাউনের আগে। নাসিকের ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডে নূর হোসেনের যত সন্ত্রাসী বাহিনী আছে, সবাই এখন নূর উদ্দিনের ঠেলাগাড়ি মার্কার শোডাউন, মিছিল ও গণসংযোগ করছে। এদের সাথে যোগ দিয়েছে ডেমরা, সোনারগাঁয়ের অনুসারীরা। এসব সন্ত্রাসীরা ভোটের আগেই ঘোষনা দিচ্ছে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে নূর উদ্দিন। সাধরণ ভোটাররা যাদের নাম শোনলে ভয় পায় তারা কোন কায়দায় নূরউদ্দিনের জয় নিশ্চিত করছে তা নিয়ে ভাবনায় পড়েছে ওয়ার্ডবাসী। অপর দিকে ৩নং ওয়ার্ডকে সহিংস করে তুলছে নূরের ভাতিজা শাহজালাল বাদল। প্রতিপক্ষ প্রার্থীর লোকজনকে হুমকি ধমকি, মারধর করছে। দিচ্ছেনা প্রচার প্রচারণা চালাতে। নির্বাচনি আচরণ বিধিও মানছেনা বাদল ও তার লোকজন। দুই বারের নির্বাচিত বাদলের মনে ঢুকেছে পরাজয়ের ভয়। কারণ, বাদল বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনের অতিষ্ট ওয়ার্ডবাসী। অবাদ সুষ্ট ভোট হলে পরাজিত হবার ভয় করছে বাদল। যে কারণে প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের নির্বাচনী মাঠে নামতে দিচ্ছেনা। পেষি শক্তি খাটিয়ে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার চেষ্টা করছে। মাঠে নামিয়েছে কিশোরগ্যাং ও সন্ত্রাসীদের। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় মহড়া দিচ্ছে তার বাহিনী। ভোটারদের মাঝে সৃষ্টি করছে আতঙ্ক। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাদল। স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, পাশাপাশি দুইটি ওয়ার্ডে নূর হোসেনের ভাই ভাতিজা কাউন্সিলর হতে পারলে সহজেই ফিরে পাবে নূরের হারানো রাজত্ব। তাই অর্থের গরম ও পেশি শক্তি খাটিয়ে সহিংসতা করে হলেও কাউন্সিলর হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে চাচা ভাতিজা। ফলে এই দুইটি ওয়ার্ডে যে কোন সময় ঘটতে পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। ইতোমধ্যে তিন নং ওয়ার্ডে বাদল বাহিনীর হামলায় কয়েকজন রক্তাক্ত জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছে। তাই ভোটাররা আতঙ্কবোধ করছেন। ভোট না দিলে পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে এমন বহু অভিযোগ উঠেছে। তাই এই দুইটি ওয়ার্ডে প্রশাসনিক নজরধারী বৃদ্ধি ও অবাদ সুষ্ট এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহণের দাবি তুলেছেন বিভিন্ন প্রার্থী ও সাধারণ ভোটাররা।
Leave a Reply