Home » প্রথম পাতা » সিদ্ধিরগঞ্জে মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়

বাঁকা পথে না’গঞ্জের রাজনীতি!

২৬ জানুয়ারি, ২০২২ | ৮:৪৫ পূর্বাহ্ণ | ডান্ডিবার্তা | 233 Views

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চমক দেখেছে রাজনীতিবিদরা। এই চমক আইভীর তৃতীয় জয়কে ঘিরে নয়। এই চমক নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতির পরিবর্তন। রাতারাতি দুইটি দল নারায়ণগঞ্জে নিজেদের আমূল বদলে নিয়েছেন। আর দুইটি পরিবর্তনই ঘটেছে সরাসরি কেন্দ্রীয় কমিটির হাত ধরে। নারায়ণগঞ্জে যারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করেছেন তাদের পর্যবেক্ষনে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ জটিলতার পর অবশেষে সোজা পথে হাটছে। এতে করে কর্মীবান্ধব ও ব্যক্তি রাজনীতির বাইরে দলীয় রাজনীতি করতে বাধ্য হবে দলের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে বিএনপি হাটছে উল্টো পথে। আহবায়ক কমিটি গঠনের পর যেই আশা আকাঙ্ক্ষা তৈরী হয়েছিলো সেই আশা ভেস্তে গেছে পুরোপুরি। যারা ত্যাগী রাজনীতি বাদ দিয়ে টাকার মাধ্যমে পদ পদবী কিনে আনেন তারাই এবার থাকবেন চালকের আসনে। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরেই ছন্নছাড়া ভাবে চলছিলো। জেলা কমিটির বৈঠকে এক নেতা আসেন তো আরেক নেতা আসেন না। নির্বাচনে একনেতা একজণের জন্য সুপারিশ করেন, অন্যজন আরেকজনের জন্য। কেউ সিগনেচার করেন আবার কেউ করেন না। বিশেষ করে প্রধান দুটি পদে এমন ঝামেলা লেগেই থাকতো। আব্দুল হাই ও আবু হাসনাত শহীদ বাদলের মাঝে সাংগঠনিক মতবিরোধের কারনে কমিটির সার্বিক কার্যক্রমও এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছিলো। নামকাওয়াস্তে মিটিং হলেও তাতে বলয়ের কারনে কখনও কখনও দুই বলয়ের এক বলয়ের নেতাকর্মীরা থাকতেন অনুপস্থিত। আর এভাবেই চলছে বছরজুড়ে। একই চিত্র ছিলো মহানগর আওয়ামী লীগেও। একদিকে আনোয়ার হোসেন অন্যদিকে খোকন সাহা। একসাথে দুজনের বসাই যেন দায়। দুজনের দ্বিমতের কারনে একটিও ওয়ার্ড কমিটি করতে পারেনি মহানগর আওয়ামী লীগ। সবশেষ আনোয়ার হোসেনকে ছাড়াই ২৭ ওয়ার্ডে কর্মীসভা ঘোষণা দিয়ে বিতর্ক জন্ম দেয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই কমিটি অচিরেই ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে কমিটি দেয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের নেতৃবৃন্দরা। এর অন্যতম কারন হিসেবে নেতারা বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের চাইতে ব্যক্তি রাজনীতির চর্চা বেশী হয়। আর সেই কারনেই ঢেলে সাজানো হবে দল। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং শ্রমিক লীগের ৪ টি কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। বাকি কমিটিকেও নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার ফলে দল সুসংগঠিত ভাবে পরিচালিত হবে বলে ধারনা সকলের। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিগত কমিটির সভাপতির দেখা কেউ পেয়েছে কিনা তা বলা দুষ্কর। একমাত্র সাধারণ সম্পাদকের উপর ভর করে চলেছে এই কমিটি। সেই কমিটি বিলুপ্ত হয়ে নতুন করে দেয়া হয় আহবায়ক কমিটি। সেখানে গুরুদায়িত্ব দেয়া হয় তৈমূর আলম খন্দকারকে। তিনি বেশ শক্ত ভাবেই পরিচালনা করছিলেন দলটি। কমিটি প্রনয়নের প্রায় দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছিলেন। দলের কর্মসূচী পালন গলি থেকে নিয়ে আসেন রাজপথে। মাঝে চলে আসে সিটি নির্বাচন। স্বতন্ত্র প্রতীক নিয়ে অংশ নেন নির্বাচনে। জাগিয়ে তুলেন পুরো নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে। জোয়ার উঠে বিএনপির। ভোট পান ২০১৬ সালের নির্বাচনে ধানের শীষের চাইতেও বেশী। স্পষ্ট ব্যবধান ও জনপ্রিয়তা দেখেও বিতর্কিত এক সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। এক সিদ্ধান্তে বহিস্কার করে দেন তৈমূর আলম খন্দকারকে। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত আহবায়কের দায়িত্ব দেন বিতর্কিত বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিনের উপর। ফলে তৃণমূলের কর্মীরা অনেকটাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সদ্য বিদেশ থেকে আসা এটিএম কামাল ফিরেছিলেন চিকিৎসা নিয়ে। পুনরায় ধরেছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। পাশাপাশি তৈমূর আলম খন্দকারের সাথে নির্বাচনের প্রধান এজেন্ট হয়েছেন। সেই সুত্রে বহিস্কার হয়েছেন তিনিও। অথচ নির্বাচনের পূর্বে কামাল যতদিন দেশে ছিলেন তার পুরো সময় জুড়েই বিভিন্ন কর্মসূচীতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। সভাপতি ঘর থেকে না বের হলেও বের হতেন এটিএম কামাল। আর সেই সক্রিয় নেতাকে বহিস্কার করায় ক্ষোভ জন্মেছে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কমিটি বাণিজ্য এবং নিস্ক্রিক্রয়তার তকমা থেকে বের হয়ে আসছিলো নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে হিতে বিপরীত হলো। এতে করে নিষ্ক্রিয়রা পদ পাবে গুরুত্বপূর্ন স্থানে। এই সিদ্ধান্তে বিএনপি যে উল্টো পথেই যাবে তা একেবারেই পরিস্কার।

Comment Heare

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *