বাদলকে নিয়ে বিষোদগার

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল গত ৬ ফেব্রুয়ারী এক সভায় প্রকাশ্যে ‘নৌকা প্রতিকে ভোট দিতে নিষেধ করেন’। বাদলের এরুপ বক্তব্যে চারদিকে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে। অনেকে তার বহিস্কার দাবি করেছিল। সেই ক্ষোভের রেশ কাটতে না কাটতে নৌকা বিরোধীতাকারী বাদল এবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় বাদলকে নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। আগামী ১৬ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল সহ মোট ৪ জন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। বাদলের নৌকা প্রতিকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করা নিয়ে আওয়ামীলীগের নেতাদের মনে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভিপি বাদলের মুখে চুন কালি মারা উচিত। সে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে না করেছিল। সে এখন কোন লজ্জায় নৌকা প্রতিকে মনোনয়ন চাইল। ও নিজ মুখেই বলেছে নৌকা প্রতিকে ভোট দিবেন না। এই বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছেও আছে। ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের যোগ্য না। এটা ওর মুখের কথা না এটা ওর মনের কথা। কারণ ও হচ্ছে লাঙ্গল মার্কা আওয়ামীলীগ। সে লাঙ্গল মার্কা আওয়ামীলীগ। লাঙ্গল প্রেমিক, জাতীয় পার্টিকে ভালবাসে জাতীয় পার্টির লোকজনদের ভালবাসে। কাজেই ওর মুখে সাজে নৌকায় ভোট দিবেন না। এখন সেই বেহায়া লোক কিভাবে নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন চাইতে গেছে। লজ্জা করেনা তাঁর। তাঁর লজ্জা থাকা উচিত। বাদলের বহিষ্কার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক আগেই বাদলের বহিষ্কার চেয়েছে। ও যে লাঙ্গল মার্কা আওয়ামীলীগার তা সারা দেশবাসী জানে নারায়ণগঞ্জবাসী জানে। ও নৌকা নামাইয়া লাঙ্গল উঠাইছিল তখন সে ছিল জেলা যুবলীগের সেক্রেটারী। জেলা যুবলীগ থেকে জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী হয়েও সে এখন নৌকার বিরোধীতা করেছে। এটার ভিডিও ফুটেজ আছে। বন্দরের রাজাকারপুত্রের সাথে সখ্যতা করে এর আগে সে আওয়ামীলীগের ব্যাপারে বিভিন্ন কথা বলেছে। আমরা আগেও তার বহিষ্কার চেয়েছি। এখনো চাই তার বহিষ্কার করা হোক। আমরা জেলা কমিটি একটা সিদ্ধান্ত নিব তাকে বহিষ্কার করা জন্য। আমরা বাদলকে বহিষ্কার করে জেলা কমিটিকে কলঙ্গ মুক্ত করতে চাই। জেলা আওয়ামীলীগকে কলঙ্গমুক্ত করতে চাই। সে বিভিন্ন জায়গায় টাকা খেয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে। টাকা খেয়ে বিভিন্ন জায়গায় নৌকাকে ফেল করাইছে। এ জন্য জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী দায়ী। বাদলের নৌকার মনোনয়ন প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাদলকে নৌকার মনোনয়ন দেয়ার প্রশ্নই উঠেনা। তার বহিষ্কার চাই। ও যেহেতু নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা নয় ওর ভোটাধিকার নেই। নারায়ণগঞ্জবাসী ওকে ভালবাসেনা। ওর লজ্জা থাকা উচিত। বাদলের শেল্টারের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বাদল এতো বিতর্কিত কর্মকান্ড করার পরও বড় নেতাদের শেল্টারের কারণে এখনো টিকে আছে। সেই শেল্টার দাতা কে বা কারা তা সবাই জানে। নারায়ণগঞ্জের মত জেলায় বিভিন্ন নির্বাচনে নৌকা মার্কা ফেল করার জন্য এরা দায়ী। বাদলের এই শেল্টারদাতাদের কারণে নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টি শক্তিশালী হচ্ছে। সারা দেশের জাতীয় পার্টির তেমন কোন প্রভাব না থাকলেও নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির বেশ প্রভাব রয়েছে। অথচ বাদলের মত নেতাদের কারণে এ জেলায় আওয়ামীলীগকে দুর্বল করে জাতীয় পার্টি শক্তিশালী হচ্ছে। এখানে উল্লেখ্য যে, গত ৬ ফেব্রুয়ারী দুপুরে ১৪নং ওয়ার্ডের দেওভোগ জিউস পুকুরের পাশের সড়কে গণসমাবেশের আয়োজন করেন জেলা হিন্দু সম্প্রদায়। এসময় অতিথিদের বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল বলেছেন, কেউ যদি দলে থেকে দলের বদনাম করে তাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন না। যারা মসজিদে মন্দিরে গির্জায় যায় ওদের বিরুদ্ধে মেয়র কথা বললে ভয় পাবেন না। আপনাদের সাথে আমি ভিপি বাদল আছি শামীম ওসমান আছেন খোকন সাহা আছে সেলিম ওসমান সাহেব আছেন। এই নারায়ণগঞ্জে মেয়র নমিনেশন চাওয়ার আছে এই দেবোত্তর সম্পত্তিটা দোবোত্তর সম্পত্তির নামে লিখে দেন। আর নয়তো আপনারা কি তাকে আর ভোট দিবেন। এসময় উপস্থিত নেতাকর্মী সহ সবাই বলে উঠে, ‘না’। এছাড়াও এর আগে বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদকে সমর্থন দিয়ে তার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিল জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী বাদল। এ ঘটনায় তার বহিষ্কারের দাবি তোলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। তাছাড়া এর আগেও বিভিন্ন নির্বাচনে নৌকা ডুবিয়ে লাঙ্গল পাশ করানোর অভিযোগে তাকে নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করে থাকে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।
Leave a Reply