রূপগঞ্জে মহাসড়কে দোকান বসিয়ে চলছে চাঁদাবাজি

রূপগঞ্জ প্রতিনিধি রূপগঞ্জের ভূলতা গাউছিয়া এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজিতে মহৌৎসবে মেতেছে চাঁদাবাজরা। যত্রতত্র দোকান বসিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দখলে রেখেছে তারা। এতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উভয়দিকে দীর্ঘ যানঝটের সৃষ্টি হয়ে চরম ভোগান্তির কবলে পড়ছে দুরপাল্লার যাত্রীরা। সাথে দূর্ঘটনাও বাড়ছে প্রতিনিয়ত। গত বুধবার সকালে আনিছা বেগম (৫২) নামের এক পথচারী তরকারী কিনতে গিয়ে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় দূর্ঘটনার স্বীকার হন। এতে বৃদ্ধার কোমড় ও পায়ে গুরুতর জখম হয়। পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে স্থাণীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। সড়কে বাজার বসানোর কারনে প্রায় সময়ই এমন দূর্ঘটনা ঘটে। চাঁদাবাজদের হাত থেকে মহাসড়ক দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায় এলাকাবাসী। জানা যায়, দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে চাঁদাবাজরা। নিয়মিত চাঁদাবাজির অংশ হিসেবে মহাসড়ক বেছে নিয়েছে তারা। সরকারী দলের পরিচয়ে একশ্রেনীর চাঁদাবাজরা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে সড়ক দখলে নিয়ে চাঁদা আদায় করছে। পুলিশ ও প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় মহাসড়কে যত্রতত্র দোকান বসিয়ে নিরীহ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। রূপগঞ্জ উপজেলার ভূলতা গাউছিয়া এলাকা একসময় যানঝট লেগেই থাকতো। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হতো যাত্রী ও পথচারীদের। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গাউছিয়ার যানঝট নিরসনে সাড়ে ৩’শ কোটি টাকা ব্যয়ে ভূলতা ফ্লাইওভার নির্মান করেছে। তাতেও যানঝট কমছেনা। অধিকাংশ গাড়ী ফ্লাইওভার ব্যবহার না করে নীচ দিয়ে চলাচল করে। এদিকে ৮ লেনের ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের উভয়দিকে ৪ লেন দখলে নিয়েছে ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয় চলাচলের ফুটপাতটুকুও অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে তারা। এ নিয়ে পথচারীদের সাথে ব্যবসায়ীদের বাকবিতন্ডা হয়। এমনকি হাতাহাতি পর্যন্ত হয়ে থাকে। অসাধু ব্যবসায়ীরা ফল ও তরিতরকারীর উচ্ছৃষ্ট অংশ ফ্লাইওভারের পিলারের গোড়ায় ফেলে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করছে। এতে দুষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। ফুটপাত ব্যবসায়ীদের কারনে পথচারীরাও রাস্তা পারাপার হতে পারছেনা। এজন্য বিভিন্ন সময় দূর্ঘটনার স্বীকার হতে হয় পথচারীদের। ভূলতা পুলিশ ফাড়িঁর সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দখলে নিয়ে অবৈধ ফুটপাত বসিয়ে চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছে পুলিশ ও সরকার দলীয় লোকজন। মহাসড়কের যেখানে সেখানে দোকান বসিয়ে ইচ্ছেমত চাঁদাবাজি করছে তারা। প্রায় ৫ শতাধিক দোকান বসিয়ে দৈনিক আড়াই লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে বলে জানা গেছে। এতে মহাসড়কে যেমন তীব্র যানঝটের সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি চাঁদাবাজিকে ঘিরে বাড়ছে সহিংসতা। এলাকায় বাড়ছে আতংক। শুধু ফুটপাত থেকেই মাসে ৭৫ লাখ টাকা স্থাণীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও ভূলতা পুলিশ ফাড়িঁ ও হাইওয়ে পুলিশের পকেটে যাচ্ছে। এত বিশাল অংকের চাঁদাবাজি নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাথে ইউনিয়ন যুবলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। গত আড়াই বছর আগে চাদাঁর টাকা ভাগাভাগি নিয়ে জাকির হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতা খুন হয়। এ ব্যপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, মহাসড়কে শীঘ্রই অভিযান চালিয়ে অবৈধ দখলদারদের উৎখাত করা হবে। চাঁদাবাজির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply