শিমরাইলে সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজী

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ের দক্ষিন পাশে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ফুটপাত অবৈধভাবে জবর দখল করে দোকানপাট বসিয়ে চাঁদাবাজী করছে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। মহাসড়কের দক্ষিন পাশের আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেটের পশ্চিম পাশের কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেট, হাজী নেকবর আলী সুপার মার্কেট, কাস্সাফ সুপার মার্কেট, হাজী বদর উদ্দিন সুপার মার্কেট ও চাঁন সুপার মার্কেটের সামনে, ফুটওভার ব্রীজের নিচে এবং রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের পাশের ফুটপাতে দোকান বসিয়ে এ সিন্ডিকেট প্রতিদিন চাঁদা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ ফুটপাত ব্যবসায়ীদের। নাসিক ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল ও হাজী নেকবর আলী সুপার মার্কেটের মালিক হাজী আব্দুল মান্নানের ছেলে দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে এসব ফুটপাতের চাঁদাবাজীর নিয়ন্ত্রন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এই সিন্ডিকেট হাইওয়ে পুলিশ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ, র্যাব ও ডিবিকে ম্যানেজ করার কথা বলে ফুটপাত থেকে উত্তোলন করছে টাকা। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর বার বার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও মিলছে না কোন সুফল। জানা যায়, মহাসড়কের দক্ষিন পাশে হাজী আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেটের পশ্চিম পাশে ও মার্কেটের পিছনের ডিএনডি খালের পাড়ের কাঁচা বাজার থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকা হারে চাঁদা উত্তোলন করছে। হাজী নেকবর আলী সুপার মার্কেটের মালিক দেলোয়ার হোসেনের নিয়োজিত চাঁদাবাজ সাইফুল ও জালাল জমিদারী ভাড়া বাবদ প্রতিদিন দোকান প্রতি ১০০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করছে। আর নাসিক ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের নিয়োজিত চাঁদাবাজ বিদেশী অস্ত্রসহ গ্রেফতার হওয়া মো: ইসমাঈল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর মটর চালকলীগের সাধারন সম্পাদক সারফিন মাসুম, শিমরাইল মোড়ের অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ডেনের চাঁদাবাজ মো:সুমন, সাত খুনের ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি নুর হোসেনের ভাতিজা নাসিক ৩ নং ওয়ার্ডের শাহাজালাল বাদলের চাচাতো ভাই, মো: রোমান, সোহাগ রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ড থেকে ফল পট্টি এবং শামীম কাস্সাফ সুপার মার্কেট থেকে নেকবর আলী সুপার মার্কেট পর্যন্ত প্রতি দোকন থেকে প্রতিদিন ১৫০ টাকা হারে চাঁদা উত্তোলন করছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এরআগে গত এপ্রিলের শুরুতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর মহাসড়কের দক্ষিন পাশের সকল ফুটপাত থেকে অবৈধ সকল দোকানপাট উচ্ছেদ করার পর কয়েদিন খালি ছিল। কয়েকদিন না যেতেই নাসিক ৩নং কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল নাসিক ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম ও তার ছেলে ইলিয়াস ইসলাম লিয়ন এবং নেকবর আলী সুপার মার্কেটের মালিক দেলোয়ার হোসেন গং একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে ফুটপাতের নিয়ন্ত্রন নেয়। তখন প্রায় চার শত দোকান থেকে দোকান প্রতি অগ্রীম বাবদ ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা করে অন্তত ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এই সিন্ডিকেটকে টাকা দেওয়ার পর ফুটপাত ব্যবসায়ীরা কোনমতে এক মাস ব্যবসা করতে পারলেও এই পর্যন্ত দুই দফা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। সর্বশেষ অবৈধ দখলদারের কবল থেকে সার্ভিস সড়কটি দখল মুক্ত করে যান চলাল চালু করলেও রাস্তাটির পাশের ফুটপাত আবারো চলে যায় দখলদারদের হাতে। আর এই ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট প্রতিদিন হাইওয়ে পুলিশ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ, র্যাব ও ডিবিকে ম্যানেজ করার কথা বলে প্রায় দুই শতাধিক দোকান থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। নাসিক ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম জানান, আমার কোন লোক শিমরাইল ফুটপাতে চাঁদাবাজি করে না। আমিও কোন চাঁদাবাজিতে নাই। নাসিক ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল বলেন, আমি কোন ফুটপাতের চাঁদাবাজীতে নাই। আমার নাম বলে যারা চাঁদা তুলে তাদেরকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের হাতে ধরিয়ে দিন। তবে, তিনি এ কথা বললেও থেমে নেই তার সহযোগীদের চাঁদা উত্তোলন। হাজী নেকবর আলী সুপার মার্কেটের মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার মার্কেটের সামনের ফুটপাত থেকে কোনা চাঁদা উত্তোলন করা হয় না। যদি কেউ করে তা আমার জানা নেই। কিন্তু খবর নিয়ে জানা যায়, মার্কেট মালিক দেলোয়ারের সহযোগী চাঁদাবাজী মামলার আসামী জালাল,সাইফুল ও মিরাজ জমিদারী ভাড়া বাবদ প্রতিদিন প্রতি দোকান থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করছে। এর আগে দেলোয়ারের দুই সহযোগীকে চাঁদাবাজীর সময় হাতে-নাতে গ্রেফতার করলেও থেমে নেই তাদের চাঁদাবাজী। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মে: মশিউর রহমান বলেন, শিমরাইল মোড়ের ফুপপাতে কে কাহরা চাঁদাবাজি করছে আমার জানা নাই। তবে এই বিষয় যদি কেউ কোন অভিযোগ দেয় তা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব। শিমরাইল মোড়ের ফুটপাতের চাঁদাবাজি করার বিষয় ককাঁচপুর হাইওয়ে থানার (ওসি) মো: নবীর হোসেন জানান, আমি এই বিশষে কিছু জানি না কে বা কারা করে।
Leave a Reply