২৩ দিনেও ৩শ’ শয্যায় করোনার পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা চালু করতে পারেনি

ডান্ডিবার্তা | মে ০১, ২০২০ ১০:২৫

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে শুরু হয়নি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা। ২৩ দিনেও প্রস্তুত করা যায়নি ১০ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। প্রাথমিক আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখা গেলেও ভেন্টিলেটর না থাকায় গুরুতর আক্রান্তদের রাখা যাচ্ছে না। এদিকে কোভিড-১৯ পরীক্ষায় পিসিআর মেশিন স্থাপনের জন্য আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত ৮ এপ্রিল শহরের খানপুরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালকে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করা হয়। ওইদিন রাতেই নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালটিকে প্রস্তুতের কার্যক্রম শুরু করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত ৬০ জন (৪২ পুরুষ, ১৮ নারী) কোভিড আক্রান্ত রোগী আইসোলেশনে আছেন। তবে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিট সম্পূর্ণ প্রস্তুত না হওয়ায় সেখানে কাউকে সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সেন্ট্রাল অক্সিজেন না থাকলেও ৩৫ সিলিন্ডার অক্সিজেন রয়েছে তাদের। তবে আইসিইউ’র জন্য ১০টি ভেন্টিলেটর এখনও হাসপাতালে পৌছায়নি। যার ফলে ওই ইউনিটে কাউকে ভর্তি রাখা যাচ্ছে না। মুমূর্ষ রোগীদের অন্য হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। কেবল প্রাথমিক আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. গৌতম রায় বলেন, জেলায় আক্রান্ত রোগী বেড়ে যাওয়া শুরুর দিকের ৪০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট ১০০ শয্যায় রূপান্তরের কাজ চলছে। তবে ভেন্টিলেটর এখনও এসে পৌছায়নি। যার ফলে গুরুতর আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। এদিকে নারায়ণগঞ্জে ক্রমাগত করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়ায় দ্রুত ও অধিক হারে নমুনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবি ওঠে। সাধারণ জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসপাতালে মেশিনটি এসে পৌছালেও এখনও তা স্থাপন কর যাচ্ছে না। এটি স্থাপনে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে বলে জানালেন ডা. গৌতম রায়। তিনি বলেন, বুধবার মেশিন এসেছে কিন্তু এটি স্থাপনের জন্য সময় লাগবে। তাছাড়া পিসিআর মেশিন পরিচালনার জন্য দক্ষ টেকনেশিয়ানও আসেননি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ল্যাব স্থাপন ও নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করা যাবে। সম্পূর্ণ নতুন সেটআপ করতে কিছু সময় তো লাগেই। এদিকে হাসপাতালটিতেও রয়েছে জনবল সংকট। ইতিমধ্যে ৬ জন চিকিৎসক, ৯ জন নার্সসহ এই হাসপাতালের ৪২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আরও কয়েকজনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এমনকি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক গৌতম রায়ও করোনা আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। মুঠোফোনে গৌতম রায় বলেন, আমাদের নিজেদেরও জনবল সংকট রয়েছে। আমরা ঢাকাতে এ বিষয়টি জানিয়েছি। তারা কয়েকজনকে পাঠিয়েছেনও। তারপরও আমাদের ৩০ জন চিকিৎসক ও সকল নার্স নিয়মিত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে নারায়ণগঞ্জে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৯৩৭ জন, মারা গেছেন ৪২ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩০ জন।