আজ শুক্রবার | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৮ ফাল্গুন ১৪৩১ | ২১ শাবান ১৪৪৬ | রাত ১০:০১
শিরোনাম:
রানার হাতে যে ভাবে মিলে যাদুর চেরাগ    ♦     ডেভিল হান্ট আতঙ্কে আ’লীগ    ♦     ২১’শের রক্তাক্ত পথ ধরেই দেশের জনগণ শৃঙ্খলমুক্ত হয়    ♦     জাতিকে অস্থিরতায় না রেখে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন    ♦     বন্দরে মহানবীকে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ    ♦     অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলতো চুনা কারখানা    ♦     অনন্ত অ্যাপারেলসের শ্রমিকদের অসন্তুষ এখনো থামেনি    ♦     অর্থের বিনিময়ে তাঁতীলীগ নেতা এখন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি!    ♦     বন্দরে মহানবী (সাঃ)কে নিয়ে কটুক্তিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা    ♦     বন্দরে হাজী সিরাজ উদ্দিন স্কুলে চুরি চোর সিন্ডিকেটের ৯জন আটক    ♦    

দ্বিমুখী রাজনীতিতে বেকাদায় জাপা

ডান্ডিবার্তা | ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
প্রায় সব ইস্যুতে সরকারের সুরে কথা বললেও কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক প্রাণহানি এবং সংঘর্ষের বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছিল নারায়ণগঞ্জ জাতীয়পার্টি। তবে দ্বিমুখী রাজনীতির জেরে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর বেকায়দায় রয়েছে দলটি। সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাস হারিয়েছেন দলের নেতারা। এ কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাঝে মধ্যে বিবৃতি দিয়ে অস্তিত্ব জানান দিলেও প্রকাশ্য কোনো কর্মসূচি দেওয়ার ভরসা পাচ্ছেন না জাপার নীতি নির্ধারকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির শীর্ষ নেতা বলেন, নামে ‘প্রধান বিরোধী দল’ হলেও গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের ইশারায় চলেছে জাতীয় পার্টির সব কার্যক্রম। দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল বয়কট করলেও বিগত তিনটি নির্বাচনেই অংশ নিয়েছে এক সময়ের স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দল। আওয়ামী লীগের সাজানো নির্বাচনগুলোয় ‘প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও আসন পাওয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের অনুগ্রহই ছিল তাদের একমাত্র অবলম্বন। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে পূর্বনির্ধারিত সংখ্যক সংসদীয় আসনে জেতার পর বিরোধী দলের আসনে বসার এমন নজির সম্ভবত বিরল। শুধু নির্বাচন নয়, জাতীয় পার্টি গত ১৫ বছর ধরে সব ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এমনকি দলীয় কোন্দল কিংবা পারিবারিক সমস্যা মেটাতেও দলটির শীর্ষ নেতারা আওয়ামীলীগের শরণাপন্ন হতেন। নামে বিরোধী দল হলেও জনসম্পৃক্ত কোনো ইস্যুতে কখনো রাজপথে নামতে দেখা যায়নি তাদের। এছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের সব ধরনের বিতর্কিত কাজেই সায় ছিল দলটির। এসব কারণে একসময় রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে পরিচিত জাপা ধীরে ধীরে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের মতোই কোণঠাসা অবস্থা জাতীয় পার্টির। দুর্বল সাংগঠনিক ভিত্তি, নেতাদের সুবিধাবাদী প্রবণতাসহ বিভিন্ন স্বার্থন্বেষী কাজের কারণে এ দলটি নিশ্চিহ্ন হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছেছে দলটি। রাজনীতিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘জাতীয় পার্টি সরকারে থেকে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে চেয়েছে, সাধারণ মানুষ এটি মোটেও গ্রহণ করেনি, তারা জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের লেজ হিসাবেই বিবেচনায় নিয়েছে। দলটির কাছে মানুষের তেমন আর কোনো প্রত্যাশা নেই। তারা মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। তাদের কথা ও কাজের কোনো মূল্য নেই। এ দলটি ধীরে ধীরে নামসর্বস্ব দলে পরিণত হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সাল থেকে নিজেদের শক্তির পরিবর্তে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্নভাবে গাঁটছড়া বাঁধে দলটি। এতে জাপার কিছু নেতা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দল ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা বারবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে নিষ্পেষিত হয়েছে। এতে জেলার শীর্ষ নেতাদের কাছে বিরাগভাজন হয়েছেন কেউ কেউ। দলের সমালোচনা করায় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হয়েছে জাপা’র অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী। জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা মনে করেন, শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগের ওপর এতটাই নির্ভরশীল ছিলেন যে, গত ১৫ বছর তারা জনগণের সমস্যা নিয়ে রাজপথে কোনো কর্মসূচি দেননি। এতে জনবিচ্ছিন্নতা বেড়েছে। দিন দিন কমেছে কর্মী-সমর্থক ও রাজনৈতিক শক্তি। সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাস হারিয়েছে দলটি। এ কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাপা নেতাদেরও গা ঢাকা দিতে হয়েছে। মাঝেমধ্যে বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিলেও প্রকাশ্য কোনো কর্মসূচি দেওয়ার ভরসা পাচ্ছেন না নেতারা। বিশ্লেষকদের মতে, একটি রাজনৈতিক দলের কাছে সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়া থাকা স্বাভাবিক। অথচ গত তিন মেয়াদে কখনো মানুষের পক্ষে রাস্তায় দাঁড়ায়নি জাতীয় পার্টি। শুধু তাই নয়, মাঠপর্যায়ে দলীয় কার্যক্রমও চোখে পড়েনি। রাজনৈতিক দল হিসেবে মানুষের কাছে যাওয়ায় কোনো প্রস্তুতি, পরিকল্পনা বা প্রচেষ্টাও ছিল না। গত তিন নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের দোসরের ভূমিকায় ছিল জাতীয় পার্টি। দেশের অধিকাংশ দল বয়কট করলেও নানা নাটকীয়তা তৈরি করে শেষ পর্যন্ত ভোটে গেছে জাতীয় পার্টি। প্রতিবারই সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আসন বাগিয়ে নেওয়াই ছিল তার মূল লক্ষ্য। নামে বিরোধী দল হলেও জাপার আসনে ক্ষমতাসীনরা কোনো প্রার্থী দেয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, গত সাড়ে ১৫ বছর গৃহপালিত বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টিকে ব্যবহার করেছে আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত কোনো কাজেই দলটি রাজনৈতিকভাবে শক্ত কোনো অবস্থান নেয়নি। জাপা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে আওয়ামীগ একতরফাভাবে বিতর্কিত অনেক সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করত। বাস্তবে জাপা তা করতে পারেনি। জাপার বিভিন্ন ধারার অনেক নেতার মূল্যায়ন, জাপায় গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। শীর্ষ নেতারা ব্যক্তিগত স্বার্থের বিনিময়ে যাকে তাকে দলীয় পদ কিংবা নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। চেয়ারম্যান যখন যাকে খুশি বহিষ্কার করেছেন, আবার তা তুলেও নিয়েছেন। এসব প্রবণতার কারণে জাপা নেতারা কখনো গণতন্ত্রের জন্য রাজপথের লড়াই সংগ্রাম করেনি। জনবান্ধব কর্মসূচিও নেই দলটির। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক জাপা’র সিনিয়র এক নেতা বলেন, নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির রাজনীতি ছিল নাম ওয়াস্তে। মূলত, ওসমন পরিবারের মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রিত হত নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি। দলকে ব্যবহার করা হয়েছে স্বার্থ হাছিলে। যেমনটা করেছে সেলিম ওসমান এবং লিয়াকত হোসেন খোঁকা। তাছাড়া, কাজের সঙ্গে কথার কোনো মিল না থাকায় জাতীয় পার্টি গণমানুষের দল হতে পারেনি। জাপার সাবেক সাংসদ সেলিম ওসমান কথা ও কাজে কোনো মিল নেই। তিনি পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে দল পরিচালনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মূলত আওয়ামী লীগ সরকারের চরম কর্তৃত্ববাদী নীতির অনুসঙ্গ হওয়ার কারণে আমাদের দল দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেলিম ওসমন দিনের পর দিন দলে ভাঙা-গড়ার খেলা চলছে। এ কারণে জাপা জনতার কাতার ও মানুষের মন থেকে সরে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ দলটির প্রতি একেবারেই আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। কোনোভাবেই তা পুনরুদ্ধার করা যাচ্ছে না।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা