আজ শনিবার | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ | ২২ শাবান ১৪৪৬ | বিকাল ৪:১২
শিরোনাম:
রানার হাতে যে ভাবে মিলে যাদুর চেরাগ    ♦     ডেভিল হান্ট আতঙ্কে আ’লীগ    ♦     ২১’শের রক্তাক্ত পথ ধরেই দেশের জনগণ শৃঙ্খলমুক্ত হয়    ♦     জাতিকে অস্থিরতায় না রেখে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন    ♦     বন্দরে মহানবীকে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ    ♦     অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলতো চুনা কারখানা    ♦     অনন্ত অ্যাপারেলসের শ্রমিকদের অসন্তুষ এখনো থামেনি    ♦     অর্থের বিনিময়ে তাঁতীলীগ নেতা এখন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি!    ♦     বন্দরে মহানবী (সাঃ)কে নিয়ে কটুক্তিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা    ♦     বন্দরে হাজী সিরাজ উদ্দিন স্কুলে চুরি চোর সিন্ডিকেটের ৯জন আটক    ♦    

সমালোচনার মুখে মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা

ডান্ডিবার্তা | ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৯:২১ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের পলাতক এমপি সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ওরফে ঘি জাকির। সেই জাকির হোসেনের পক্ষে থেকে কাজ করতে আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপি ও আলীরটেক ইউনিয়নবাসীকে নির্দেশ দিয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে নিহত ও আহতের ঘটনায় একাধিক মামলার আসামী জাকির হোসেনের পক্ষে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান টিপু। একই সঙ্গে টিপু দাবি করেন- জাকির হোসেনকে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে মামলায় আসামী করা হয়েছে এবং পুলিশ প্রশাসন তাকে যেনো হয়রানি না করে সে কথাও বলেছেন বিএনপির নেতা। স্থানীয়রা জানান, এক সময় পঁচা ঘি এর ব্যবসায়ের মাধ্যমে বর্তমানে শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া ঘি জাকিরের পক্ষে নিয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব। শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের ঘনিষ্ঠ জাকির হোসেনের পক্ষে কেন সাখাওয়াত ও টিপু নিয়েছেন সেটা বুঝতে বিশ্লেষনের প্রয়োজন নেই। কারন ঘি জাকির ঘি ও পলিথিন উৎপাদনের ব্যবসা করে শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন অনেক আগেই। যে কারনে সেই নৌকার মার্কার জাকির হোসেনের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নিতেও কুন্ঠাবোধ করেননি সাখাওয়াত ও টিপু। ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, গত ১৩ ফেব্রæয়ারী নারায়ণগঞ্জ আলীরটেক ইউনিয়নের কুড়েরপাড় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া ও প্রতিযোগীতার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের পক্ষে সাফাই গেয়ে ব্যাপক প্রসংশা করেন বিএনপি নেতা আবু আল ইউসুফ খান টিপু। এই খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর কঠোর সমালোচনা শুরু হয়েছে বিএনপির রাজনীতিতে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে জাকির হোসেন এলাকায় প্রকাশ্য দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন। টিপু তার বক্তব্যে জাকির হোসেন সম্পর্কে বলেছেন, আমরা চাইনা কোনো নিরপরাধ লোক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে নিহতের ঘটনার মামলায় হয়রানির শিকার হোক। বিনা বিচারে তারা অপরাধী হোক সেটা চাই না। যদি এ ধরণের ঘটনা ঘটে সেটা অবশ্যই আমরা মহানগর বিএনপি দেখবো। আমরা জানি আজকে এখানে একজন জনপ্রতিনিধি (জাকির চেয়ারম্যান) বিশেষ অতিথি হওয়ার কথা ছিল, তিনি অত্র এলাকার চেয়ারম্যান। যেহেতু উনাকে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে মামলা দেয়া হয়েছে, উনি আওয়ামীলীগ সরকার আমলেও মামলা খেয়েছেন, এখন উনাকে কে বা কারা ষড়যন্ত্রমুলকভাবে মামলা দিয়েছে, সেটা অবশ্যই প্রশাসন দেখবে। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলবো। কিন্তু আপনারা এটাকে নিয়ে কোনো অপরাজনীতি করবেন না। যেহেতু সে আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যান। সেটা দলমত চিন্তা না করে, আলীরটেক ইউনিয়নের উন্নয়নে কাজ করার ইচ্ছা পোষন করেন। আপনারা তার পাশে থেকে কাজ করবেন। আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যানারে প্রধান বক্তার পরেই বিশেষ অতিথি করা হয় নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান জাকির হোসেনকে। তবে জাকির হোসেন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এতে সভাপতিত্বে করেছেন অত্র বিদ্যালয়ের সাবেক পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যিনি জাকির হোসেন চেয়ারম্যানের আপন ছোট ভাই। এই আনোয়ার হোসেনকে বিদ্যালয়ের সভাপতি করেছিলেন সাবেক এমপি সেলিম ওসমান। অনেকেই জানিয়েছেন, এই অনুষ্ঠানের আয়োজনের পেছনে লাখ টাকা খরচ করেছেন জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশেষ অতিথি নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রধান, গোগনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ আক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়াজী, আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি মোঃ জুলহাস, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আমজাদ হোসেন ও আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ মান্নান মেম্বার প্রমূখ। অনুষ্ঠান শেষে মাগরিবের পূর্বে সবে বরাত উপলক্ষে আওয়ামীলীগ নেতা মান্নান মেম্বারের বাড়িতে ইফতার পার্টিতে অংশগ্রহণ করেন সাখাওয়াত ও টিপু সহ তাদের সাথে থাকা বিশেষ অতিথিবৃন্দ। এই ঘটনায় চরম ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। মান্নান মেম্বার নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমানের ক্যাডার বাহিনীর সদস্য। আওয়ামীলীগ নেতা মান্নানের বাড়িতে আয়োজন করা হয় ইফতার পার্টি। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এ বিষয়ে স্কুলের সামনেই দাঁড়িয়ে আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে অনলাইন মিডিয়াতে বলেন, আমি বিগত সময়ে রাজপথের সৈনিক ছিলাম, রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। কিন্তু এখন আমাদের নেতা সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপু যদি আওয়ামীলীগের লগে ঘেষা খাইয়া, আওয়ামীলীগের লগে সম্পর্ক কইরা চলে তাহলে আমাগো অবস্থানটা কোথায় যায়? কিন্তু আজকে তলে তলে আমাদের ইউনিয়ন বিএনপিতে আওয়ামীলীগের লোকেরা কাজ করছে? আমি বিএনপি নেতা হয়ে কোনো কাজকর্ম পাইনা, সব কাজকর্ম করছে আওয়ামীলীগের লোকেরা। আলীরটেক ইউনিয়নের লোকজনের নামে মামলা হলে আমি ওসি, ইউএনও, ডিসি এসপির কাছে দৌড়াই, কিন্তু তারা বিএনপির বড় ব্ড় নেতাগো কাছে গিয়া টেহা পয়সা দেয়। কোনো খবরও পাইনা। তিনি আরও বলেন, আজকে কুড়েরপাড় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে একটা অনুষ্ঠান। মহানগর ও সদর থানা বিএনপির নেতারা অনুষ্ঠানে এসে কেনো আজকে আওয়ামীলীগ নেতা মান্নান মেম্বারের বাড়িতে গেল? আমাদের কাছে নেতারা জিজ্ঞেসও করেনি যাওয়া ঠিক হবে কিনা। সাখাওয়াত সাহেব, টিপু সাহেব, আব্দুর রহমান সাহেব সহ মহানগর ও সদর থানা বিএনপির নেতারা মান্নান মেম্বারের বাড়িতে খাওয়া ধাওয়া করতে গেছেন। মান্নান মেম্বার আওয়ামীলীগ করে আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করতো, আজকে সেই মান্নান মেম্বারের বাড়িতে গেল নেতারা! বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে নিহত ও আহতের ঘটনার মামলার মান্নান মেম্বার আসামী। যারা মামলার আসামী তারাই আজকে রাস্তা ঘাটের কাজ করছে। রাস্তাঘাটের উদ্বোধনের সময়ও আমাদের ডাকেনা। সম্পূর্ণ তারাই কাজকর্ম করে খাচ্ছে। কিন্তু আমরা যে টাকা পয়সা খরচ করে রাজনীতি করলাম তাহলে আমাদের কি হবে? আমার ছেলে বিদেশ থেকে টাকা পাইছে সেই টাকা দলে খরচ করে রাজনীতি করেছি। আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি জামাল সর্দার বলেন, আমাদের ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রহমান আওয়ামীলীগের সাথে নিয়মিত চলাফেরা করছেন। আজকে দুঃখের সাথে বলতে হয়, যারা আওয়ামীলীগ করে তাদেরকে কেউ বিরক্ত করে না। আমরা আওয়ামীলীগের কারো ক্ষতি করিনি। কিন্তু আওয়ামীলীগের লোকজন আমাদের দলে ভীড়ে খোঁচাখুচি করতে যাচ্ছে। আমরা তা প্রতিহত করবো। আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নিজের পকেটের টাকা খরচ করে রাজনীতি করে আসছেন। অথচ তাকে অবজ্ঞা করে আওয়ামীলীগের লোকদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। আমরা দল করি টাকা কামানোর জন্য না। আমরা দলের পেছনে টাকা খরচ করি। আমরা কি ইফতার পার্টির আয়োজন করতে পারি না? কেন আওয়ামীলীগের নেতা মান্নান মেম্বারের বাসায় ইফতার পার্টিতে নেতারা গেলেন?




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা