আজ শুক্রবার | ১৪ মার্চ ২০২৫ | ১ চৈত্র ১৪৩১ | ১৩ রমজান ১৪৪৬ | সকাল ১১:৩৮
শিরোনাম:
বিএনপির শেল্টারে আওয়ামী দোসর জহির মোল্লা এখন বেপরোয়া    ♦     ফুটপাত দখল করে ইফতার বাজার    ♦     শিশু সন্তানকে জিম্মি করে গৃহবধূকে সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণচেষ্টা    ♦     থামছেনা ফতুল্লা বিএনপির উত্তেজনা    ♦     ব্যস্ততম সড়কে সংস্কার কাজের ধীর গতিতে বাড়ছে জনভোগান্তি    ♦     গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন’ কার্যক্রমে না’গঞ্জে ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ    ♦     না.গঞ্জে আ.লীগ নেতাসহ ৪৭ জন গ্রেপ্তার    ♦     মাগুরার সেই শিশুটি কী বলে গেল    ♦     মাগুরায় ধর্ষিতা শিশুর মৃত্যুতে দায়িদের শাস্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জে কাফন মিছিল    ♦     নাসিক এলাকায় ১৩৩৯৮২ জন শিশুকে খাওয়ানো হবে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল    ♦    

বিএনপিতে বিভক্তি সৃষ্টি করতে শামীম ওসমানের এজেন্ডা

ডান্ডিবার্তা | ১৪ মার্চ, ২০২৫ | ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নিজ নির্বাচনী আসন নিয়ে সব সময়েই খেলতেন শামীম ওসমান। ৫ আগস্টের পর তিনি দেশ ছাড়া। কিন্তু তার ক‚টকৌশল ও খেলা বন্ধ হয়নি। এবার তিনি অনুগামীদের নিয়ে খেলছেন। থাবা দিচ্ছেন বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে। নিজের সাম্ম্রাজ্য অক্ষুন্ন ও অনুসারীদের ব্যবসা ঠিক থাকতে ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে নাড়ছেন কলকাঠি। তেমনি একজন মনিরুল আলম সেন্টু। তিনি বিগত দিনে শামীম ওসমানের বদৌলতে আওয়ামী লীগ ও নৌকায় উঠেন। বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। শামীম ওসমানের বিশ^স্ত ক্যাডার হিসেবে পরিচিত শাহ নিজামের সঙ্গে ব্যবসায়ীক সম্পর্ক করেন। পাগলা এলাকার অনেকের সম্পত্তি নামমাত্র দখল করে সেখানে একটি হাউজিং কোম্পানী করেন। বক্তব্যে শামীম ওসমানকে ‘পীর’ হিসেবেই উল্লেখ করতেন সেন্টু। এবার তাকে দিয়ে আবারো বিএনপিতে থাবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন শামীম ওসমান। বিএনপির একাধিক নেতা জানান, সেন্টু মূলত শামীম ওসমান ও শাহ নিজামের অতি ঘনিষ্ঠজন। পাগলার আবাসন প্রকল্প নিয়ে স¤প্রতি ঝামেলা হচ্ছে। বড় একটি বিনিয়োগ এখানে নিজামের। তার পার্টনার হলেন সেন্টু। দুইজনই নির্বাসিত হলে এ বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এছাড়া নিজামের বড় একটি ব্যবসা এখন সেন্টুর দখলে। এছাড়া ফতুল্লার মীর সোহেল আলীরও ব্যবসাও দেখভাল করতে বিশ্বস্ত হতে পারেন সেন্টু। সে কারণেই শামীম ওসমান ও নিজাম মিলে সেন্টুকে বিএনপিতে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন। তারই অংশ হিসেবে সেন্টু বিএনপিতে ফিরতে আবেদন করেছেন। অভিযোগ আছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ম্যানেজ করবেন বলে কোন কোন নেতাকে তিনি কোটি কোটি টাকার প্রস্তাব দিয়েছেন। আর তাতে নড়ছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু। ইতোমধ্যে তিনি সেন্টুর পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন। আপাতত নীরব থেকে ঘটনার প্রত্যক্ষ করছেন আরেক প্রভাবশালী নেতা সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ চৌধুরী। তবে নেতাকর্মীরা বলছেন তিনিও চান সেন্টু ফিরে আসুক। এদিকে শামীম ওসমানের সেন্টু প্রীতি নিয়ে শহীদুল ইসলাম টিটুর বিষয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তিনিও একসময় সেন্টুর হাত ধরেই বিএনপিতে প্রবেশ করেন। তাই হয়তো কৃতজ্ঞতাস্বরুপ আওয়ামী লীগ নেতা সেন্টুকে ভুলতে পারছেন না। গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল পদে থেকেও শহীদুল ইসলাম টিটু যে বক্তব্য রাখলেন তা নিয়ে জেলাজুড়ে তৈরি হয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শহীদুল ইসলাম টিটুর ইমেজ মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি বিতর্ক সৃষ্টি করলেন এমনটাই মতামত বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের শাসসামলে শামীম ওসমানের কর্মী হিসেবেই নিজেকে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতেন সেন্টু। দুই নৌকায় পা দিয়ে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন তিনি। তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই তার চরিত্র বদলানো শুরু করেন। জানা যায়, মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার থেকে বাঁচতে তিনি এই পথ অবলম্বন করছেন। তবে গ্রেফতার না হলেও মামলা থেকে রেহাই পান নি তিনি। এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। এর আগে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ থেকে বারবার বলা হয়েছে যদি কোনো বিএনপির নেতা কিংবা কোনো কর্মী অবৈধ লাভের জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে তাহলে তার বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেন তিনি। বিশেষ করে চেয়ারম্যান সেন্টুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হচ্ছে টিটু। যা এদিনের বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে। ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রতীকে অংশ নিলেও মনিরুল আলম সেন্টুর কারণে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিএনপির কেউ প্রার্থী হতে পারেনি। শামীম ওসমানের পরামর্শে চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন। জনশ্রæতি রয়েছে, ওই নির্বাচনে শামীম ওসমানের অনুগামীরা নৌকা ডুবিয়ে দেয়। অর্থাৎ ওই ইউপি নির্বাচনে কুতুবপুরে আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকার প্রার্থীর ভরাডুবি ঘটে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না করায় বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয় চেয়ারম্যান প্রার্থী মনিরুল আলম সেন্টুকে। এরপরে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করলেও বিএনপির রাজনীতিতে আর সক্রিয় ছিলেন না মনিরুল আলম সেন্টু। বরং আওয়ামী লীগের এমপি ও নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে দেখা যেত। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে অংশ নেন মনিরুল আলম সেন্টু। আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মসূচিতেই তাকে সক্রিয় দেখা গেছে। এদিকে, গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এরপর ৩১ জুলাই কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু বলেন, কোটা ইস্যুতে আন্দোলনে যেভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদে ধ্বংসলীলা চালা‌নো হ‌য়ে‌ছে এ ধর‌নের নৈরাজ্য একা‌ত্তর‌কে হার মা‌নি‌য়ে‌ছে। দেশে বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে। কোটা আন্দোলন নিয়ে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমি দেশের বাহিরে ছিলাম, এসেই মর্মাহত হলাম। এতো আন্দোলন হলো, এরশাদবিরোধী আন্দোলন হলো। এতো ভয়াবহতা কখনই হয় নাই। আমি দলের (আওয়ামী লীগ) নেতাদের সাথে যোগাযোগ করলাম। তারা আমাকে বললেন যেন প্রতিহত করার জন্য ব্যবস্থা নেই। এরই মধ্যে সাইনবোর্ড এলাকা যেন ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয়েছে। তারপরেও আমি আজ এই মিটিংয়ে বলতে চাই। আন্দোলন আছে থাকবেই। প্রত্যেক দলের মধ্যেও আভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে থাকবে। কিন্তু এখন কাদা ছোড়াছুড়ি করা যাবে না। যে অবস্থা চলছে। প্রধানমন্ত্রী দেশ রক্ষায় কাজ করছে। আমাদের এখন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে নামতে হবে। সে যদি আমার ভাই হোক, বাপ হোক। তারপরেও কোনো ছাড় নাই। কোনো সন্ত্রাসী জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন করবে, তাকে ছাড় দেয়ার কোনো অবকাশ নেই। তাকে ছাড় দিলে আগামীতে আমরাও থাকতে পারবো না। তাই সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের এমপি শামীম ওসমানের নেতৃত্বে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরিচালনায় কর্মসূচি দিবেন। আমি আমার পক্ষ থেকে সর্বশক্তি দিয়ে থাকবো। প্রথম যুদ্ধটা আমাদের সাথেই হোক। এরপর অবস্থান অনুযায়ী মাঠে থাকবো। সকলে সহযোগিতা করবেন। এখন থেকে কেউ হইচই করে দাঁড়াতে পারবে না। আমরা সেইভাবে নেতৃবৃন্দকে নিয়ে মাঠে থাকবো। এসময় জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু যুক্ত করে বক্তব্য সমাপ্তি করেন তিনি। এদিকে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু ও সহসভাপতি হাজী শহীদুল্লাহর বহিস্কার দাবি করেছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভুঁইয়া। ১১ মার্চ দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আজমেরীবাগ এলাকায় অবস্থিত ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভুঁইয়া বলেন, বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৭ বছরে গডফাদার শামীম ওসমানের সৈনিক হিসেবে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মনিরুল আলম সেন্টু। অথচ এই সেন্টুকে বিএনপিতে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছেন থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু ও সহসভাপতি হাজী শহীদুল্লাহ। তারা পৃথক অনুষ্ঠানে সেন্টুর পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। যারা সেন্টুসহ আওয়ামী লীগের দোসরদের বিএনপিতে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করবে তাদেরকে যেন দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। গেল ১৭ বছরে মনিরুল আলম সেন্টু শামীম ওসমান ও শাহ নিজামদের সঙ্গে মিলে জমি জমার ব্যবসা করেছে। সেন্টুর মতো আওয়ামী লীগের দোসরদের আমরা বিএনপিতে মেনে নিতে পারিনা। যারা তাদেরকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করবে তাদেরকেও আমরা প্রতিহত করবো।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা