আ’লীগের জন্য মায়া কান্না বিএনপি নেতাদের

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা নির্যাতনের কথা ভুলে গেছে বিএনপির কতিপয় নেতা। তারা এখর আওয়ামীলীগের কিছু নেতার জন্য মায়া কান্না করছেন। এক সময় বিএনপি-জামায়াতকে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ ছিলো আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। সাবেক এমপি সেলিম ওসমানকে খুশি করিয়ে নামধারী শ্যালক মতিউর রহমান মতিকে বসিয়ে নৌকা প্রার্থী হন জাকির হোসেন। বিনা বাধায় নির্বাচিত হয়ে আলীরটেকে বেপরোয়া হয়ে যান বলে অভিযোগ করে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি একাংশ নেতারা। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মনিরুল আলম সেন্টু ২০২১ সালে কুতুবপুর ইউনিয়নের নৌকা মার্কা চেয়ারম্যান প্রার্থী হন। বিনা ভোটে নির্বাচিত হলে শামীম ওসমান বিরুদ্ধে ফুসেঁ উঠেন আওয়ামীলীগ ও বিএনপি একাংশ নেতারা। এই দুই চেয়ারম্যানের পক্ষে বর্তমান নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব ও ফতুল্লা থানা বিএনপি সভাপতি মায়া কান্নায় দলের তৃনমূলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। আলীরটেকের চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলা রয়েছে। কিন্তু তার পরেও আলীরটেকে একটি অনুষ্ঠানে অতিথির তালিকাতে তাঁর নাম ছিল। সেদিন কর্মসূচীতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এ আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, এখানকার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন একজন ভালো মানুষ, তাকে এলাকাবাসী ভালোবাসে। তার বিরুদ্ধে বিগত সরকার মিথ্যা মামলা দিয়েছিলো, ৫ আগষ্টের পরবর্তীতে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। প্রশাসন কে বলবো ষড়যন্ত্রমূলক মামলা যেনো না দেয়া হয়। জাকির হোসেন চেয়ারম্যান এলাকার উন্নয়ন করেন। এর কয়েকদিন পর গত ৮ মার্চ ফতুল্লায় একটি অনুষ্ঠানে ফতুল্লা থানা বিএনপি সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু বলেন, আমাদের কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু দীর্ঘ ৩০ বছর বিএনপির করেছেন। শামীম ওসমানের চাপের ফলে সর্বশেষ সে নৌকাতে নির্বাচন করতে বাধ্য হয়। নৌকা নিয়ে যদিও সে নির্বাচন করে থাকেন, এখানকার বিএনপির যারা ছিল তাদের ছায়া হিসেবে ছিলেন। আমার বক্তব্যে পর অনেকেই হয়তো এটা ভাইরাল করবেন। কিন্তু যেটা সত্য তা বলতে হবে। তাদের এমন বক্তব্যে তৃনমূল সহ বিএনপি জেলা মহানগর ও থানা ওয়ার্ডে তুমুল আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। বক্তব্যে প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব ও ফতুল্লা থানা সভাপতি মতামত ঘুরে দিয়েছেন। একসময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরবর্তীতে সুবিধা আদায় করতে শামীম ওসমানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের যোগদান করেন কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু। তবে গত ৫আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের হাত ধরে ফের বিএনপিতে ফেরার চেষ্টা করছেন তিনি। এদের মধ্যে অন্যতম এক নেতা হচ্ছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু। স¤প্রতি এক প্রোগ্রামে সেন্টুকে নিয়ে তার বক্তব্যে এমনটাই ফুটে উঠেছে যা নিয়ে বিএনপির তৃণমূল থেকে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ কাজ করছে। শামীম ওসমানের সেন্টু প্রীতি নিয়ে শহীদুল ইসলাম টিটুর বিষয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তিনিও একসময় সেন্টুর হাত ধরেই বিএনপিতে প্রবেশ করেন। তাই হয়তো কৃতজ্ঞতাস্বরুপ আওয়ামী লীগ নেতা সেন্টুকে ভুলতে পারছেন না। গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল পদে থেকেও শহীদুল ইসলাম টিটু যে বক্তব্য রাখলেন তা নিয়ে জেলাজুড়ে তৈরি হয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শহীদুল ইসলাম টিটুর ইমেজ মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি বিতর্ক সৃষ্টি করলেন এমনটাই মতামত বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।