অপরাধ প্রবনতায় শঙ্কিত নগরবাসী

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতিতে বিপাকে নগরবাসী। পরিবার পরিজন নিয়ে রাস্তায় বের হওয়া এখন দুস্কর হয়ে পরেছে। কখন ছিনতাইয়ের কবলে পড়তে হয় তার কোন হিসাব নেই। নারায়ণগঞ্জ সহ সারা দেশে ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষন এখন যেন মহামারি আকার ধারণ করেছে। এদিকে ঈদকে সামনে রেখে যেমন মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গতকাল বুধবার রূপগঞ্জে মাদক ব্যবসার আর্ধিপত্যকে নিয়ে গুলাগুলির ঘটনায় অটো চালক গুলি বিদ্ধ হয়ে নিহত। ফতুল্লায় পিতার উপর প্রতিশোধ নিয়ে শিশু খুন। তুচ্ছ ঘটনায় কিশোর খুনের ঘটনায় শঙ্কিত নগরবাসী। সম্প্রতিমাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দেশের নাগরিক সমাজ তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। অব্যাহতভাবে চলতে থাকা নারী ও শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন, নারীদের দলবদ্ধভাবে হেনস্তা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে রাতে দিনে প্রতিবাদ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের সড়কে। প্রতিবাদ চলার সময়েও নারী–শিশু ধর্ষণের পরপর কয়েকটি ঘটনা উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় নগরবাসী। একই সাথে কন্যা সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল। গত বছরের ৫ আগষ্টের পরে নানা ধরনের অপরাধের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ছিনতাই ধর্ষণের ঘটনা। এদিকে গত বছরের ৫ আগষ্টের পরে পুরো প্রশাসন নড়বড়ে হয়ে যায়। বিশেষ করে এখনো পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন তেমন ভাবে মাঠে কাজ করছে না বলে অভিযোগ নারায়ণগঞ্জ সর্বমহলের। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক আকারে ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি বেড়ে যাওয়ায় এর পেছনের রহস্য উন্মোচনের আহবান জানিয়েছেন সচেতন মহল। অপরদিকে আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ সরকারের দায়িত্ব রাষ্ট্রের এ তিন অঙ্গের সমন্বয় করা। এবং বিভাগ তিনটিকে নিজস্ব গতিতে স্বাধীনভাবে চলতে সহযোগিতা করা। তাহলেই কেবল জননিরাপত্তা, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার আর সুশাসন জাতিকে উপহার দেয়া সম্ভব। বিগত সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগকে দলীয় করণ করার মাধ্যমে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তবে গত বছরের ৫ আগষ্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে ভ্রাতে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। থেকে সেই পালিয়ে থাকা দল নানা ভাবে অর্থ বিনিয়োগ করে দেশের মাঝে বিশৃঙ্খলা তৈরী করছে। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জে একের পর এক লোহমর্ষক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। রাজধানী লাগোয়া এই গুরুত্বপূর্ণ জেলাটিতে গত ৭ মাসে ঘটেছে ৭৩টি খুনের ঘটনা। সেই সঙ্গে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণের মতো অসংখ্য ঘটনা ঘটছে। পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে জানা যায়, গত আগস্ট মাস থেকে চলতি মাস পর্যন্ত সর্বমোট ৭৩ টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ৫২টি চুরি, ১৩টি ডাকাতি, ৩১টি ছিনতাই এবং ২৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নগরবাসীর মতে, এই ধরণের অপরাধকে নিমুূর্ল করতে হলে সবার আগে প্রশাসনকে তৎপর হতে হবে। সেই সাথে অপরাধীদের দলমত নির্বিশেষে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। নগরবাসী বলছে, রাতে পুলিশ এবং র‌্যাবের টহল বৃদ্ধি না করা হলে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা কোনোভাবেই কমানো সম্ভব নয়। পাশাপাশি যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দ্রæত শাস্তির মুখোমুখির করারও দাবি সবার। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন বলেন, যেই ভাবে ধর্ষণ, ছিনতাই, চাদাঁবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধ বেড়েছে তাতে নগরবাসী উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনকে আরও তৎপর হয়ে কাজ করতে হবে। এছাড়া অভিভাবক মহলকে সচেতন হতে হবে। পাশা পাশি সামাজিক ভাবে ঐক্য বদ্ধ হয়ে সকল অপরাধকে প্রতিরোধ করতে হবে।