না’গঞ্জে বেকায়দায় আওয়ামীলীগ কর্মীরা

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পর এবার আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ করার দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে এখন বিপাকে আওয়ামীলীগ কর্মীরা। নারায়ণগঞ্জে আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কর্মীরা এখন চরম বেকায়দায় পড়েছে। তারা মুখ লুকিয়ে চলাফেরা করছে। তারা বলতেও সাহস পাচ্ছে না তারা আওয়ামীলীগ করেছেন। তবে অনেকে আবার আওয়ামীলীগের বিগত দিনের কর্মকান্ডে তাদের এই অবস্থার জন্য আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের দায়ি করছেন। এদের অনেকে আবার বিএনপিতে অনুপ্রেবেশের সুযোগ খুজছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের রাজনীতি সহসা ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। তারা এখন ফসতাচ্ছেন। অনেকে বলে বেড়াচ্ছেন বিরোধী দলগুলির উপর আওয়ামীলীগের এমনটা করা ঠিক হয়নি। আর আওয়ামীলীগকে বেশী বিপদে ফেলেছে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের অতিকথন আর একগুয়েমী। আওয়ামলিীগ নিষিদ্ধ হলে তারা সব চেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে মনে করছেন তারা। এদিকে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ করার জন্য দিন দিন বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন জোরালো হয়ে উঠছেন। আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ হলে আওয়ামীলীগকে ফিরে আসতে বহু বছর সময় লাগবে বলে মনে করেন আওয়ামীলীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। বর্তমানে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা ফেরারী জীবন যাপন করছেন। এদিকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা ও আদর্শের কোনো রাজনীতি বাংলাদেশে আর চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, শরীরে একবিন্দু রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগকে আর স্বনামে রাজনীতি করতে দেয়া হবে না। আর পুনর্বাসিত হতে দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল, কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং দ্রæত বিচারের দাবিতে এনসিপির সমাবেশে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আখতার বলেন, ‘কোনো শান্তিপূর্ণ ঘটনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগের বিদায় হয়নি। হাজারও মানুষের জীবন আর রাজপথ ভরা রক্তের মধ্য দিয়ে খুনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিদায় হয়েছে।’ ‘আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ততবার এ দেশের মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। সাম্য ও মানবিক মর্যাদার জন্য যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সে মুক্তিযুদ্ধের পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রের বদলে বাকশাল কায়েম করেছিল। বাংলাদেশের মানুষ যে গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘদিন যুদ্ধ করেছিল, সে গণতন্ত্রের মুখে চুনকালি দিয়ে ১৪, ১৮ ও ২৪ এর নির্বাচনের নামে কলঙ্ক উপহার দিয়ে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল ওই পতিত আওয়ামী লীগ।’ বাংলাদেশের মানুষ তাদের জীবন দিয়ে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘সাত মাসেও সরকার আওয়ামী লীগের বিচারের কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি। অবিলম্বে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। অবিলম্বে নিবন্ধন বাতিল করতে হবে, না করলে ছাত্র-জনতা আবার রাজপথে এসে নিবন্ধন বাতিল করিয়েই ছাড়বে।’ ‘কোনো ব্যক্তি বা শক্তি আওয়ামী লীগকে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে তার সর্বাত্মক প্রতিরোধ করা হবে। আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা ও আদর্শের কোনো রাজনীতি চলবে না, সে নিশ্চয়তা দিতে হবে। জুলাই চার্টারে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কথা থাকতে হবে।’ জাতীয় নাগরিক কমিটির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করা হলে, সেই পরিকল্পনাকে কঠোর হাতে দমন করা হবে। তিনি আওয়ামীলীগ সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করে রেখেছিল। এখন শুধু আওয়ামী লীগ নয়, ফ্যাসিবাদের দোসরদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, আমরা কোনো নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ চাই না। আওয়ামী লীগ যত গণহত্যা করেছে, যত গুম করেছে, যত অপরাধ করেছে তার বিচার করেই দলটিকে নিষিদ্ধ করতে হবে। হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ যে গুম-খুন করেছে তার বিচারের মাধ্যমে নিষিদ্ধ চাই। সরকারকে বলতে চাই- আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কোনো আওয়ামী লীগকে বাংলার মাটিতে পুনর্বাসন করা হবে না। ভারতীয় আধিপত্যবাদ আর বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এদিকে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলি জোড়ালো ভ’মিকা রাখার কারণে আগামী দিনে আওয়ামীলীগের ভভিষ্যত অন্দকারে পতিত হচ্ছে। আর এ কারণে ভয় ও আতঙ্কে রয়েছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।