
শ্রীরাধা দত্ত
বিমসটেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যকার বৈঠক নিয়ে বেশি কিছু ভাবার প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না। তবে আট মাস পর দুই দেশের দু’জন শীর্ষ নেতার মধ্যকার বৈঠক নিশ্চয়ই ভালো। কিন্তু এ বৈঠকের মাধ্যমে কয়েক মাস ধরে চলা দুই দেশের টানাপোড়েন ঠিক হয়ে যাবে এমন নয়। বৈঠকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দুই দেশের নেতারা তাদের চিন্তার বিষয় ও অগ্রাধিকারের জায়গা তুলে ধরেছেন। এ ধরনের আলাপ-আলোচনা খুবই দরকার। অধ্যাপক ইউনূস বারবার বলেছেন, ভারত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা খুবই জরুরি। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক বছরের। শুধু প্রতিবেশী হিসেবেই নয়, নানা দিক দিয়ে এ দুটি দেশ সংযুক্ত। কিন্তু দুই নেতার ছোট একটি বৈঠকের মধ্য দিয়ে সম্পর্ক একদম বদলে যাবে বা অন্য পথে ঘুরে যাবে, তেমন মনে হয় না। তবে ধীরে ধীরে কিছু কিছু জিনিস এগিয়েছে। যদিও নানা জায়গায় আমরা দেখেছি, না আগের মতন ব্যবসা হচ্ছে, না মানুষ যাওয়া-আসা করছে। ৫ আগস্ট যা হয়েছিল বাংলাদেশে, আমরা দেখেছি যে স্বাভাবিকভাবেই খুবই অদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। নানা ধরনের সহিংসতা আমরা দেখেছি। সে সময় শুধু ভারতীয় হাইকমিশনের ওপর সহিংসতা হয়েছিল। এরপর অসম্ভবভাবে ভারতবিরোধী মনোভাব দেখেছি। কলেজের ছেলেমেয়েরা বলে, সেটি একটি বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা ভারতের বিষয়ে নানা বক্তব্য রেখেছেন। সেগুলো নিশ্চয়ই আমাদের কানে ভালো লাগেনি। এখন বাংলাদেশে চেষ্টা হচ্ছে ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার। ইতিহাস ভুলে যাওয়া মুশকিল। ভালো জায়গাগুলোতে ভারতকে মনে করছে না বাংলাদেশ। কিন্তু খারাপ জায়গায় ভারতকে জড়ানো হচ্ছে। ভারতের তিন হাজার মানুষ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছিল। বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা ভারতের বিরুদ্ধে বলে চলেছেন। দুই দেশের মধ্যে পার্থক্য থাকবেই। কিন্তু এ দুটি দেশকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তা না হলে দ্ইু দেশের মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেই জায়গাটা কেন কেউ বুঝতে পারছে না? এত বছর ভারত যা করেছে, সবই কি ভুল? বছরের পর বছর বাংলাদেশ থেকে অনেকে ফেলোশিপে এসেছেন, মেডিকেল ট্যুরিজমে এসেছেন। এতে কি তাদের কোনো লাভ হয়নি? পুরোটাই কি খারাপ হয়ে গেল? একটা রাগ আমরা বুঝতে পারি, রাগের কারণটা বুঝতে পারি। ঠিক আছে, একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু এখনও সেই বিতৃষ্ণা, রাগ ও ঘৃণা আছে। এটা তো চলতে পারে না। দুটো দেশকে তো একসঙ্গে কাজ করতে হবে। চীনে গিয়ে ড. ইউনূস ভারতের নর্থ ইস্টকে নিয়ে যে মন্তব্যটা করলেন, সবাই জানে যে নর্থ ইস্ট ভারতের একটা স্পর্শকাতর অঞ্চল। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কটা একটু ঠান্ডা হয়ে আছে। এ অবস্থায় এই কথাগুলো ভারতকে দুঃখই দিয়েছে। চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে একটু টানাপোড়েন আছে, এটা সবাই জানে। সেই জায়গায় গিয়ে বলা হচ্ছে যে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের একমাত্র প্রবেশপথ। সে রকম তো ঘটনা না। আমাদেরও বন্দর আছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। মাতারবাড়ী হলে আমরাও জানি যে আমাদের খুব সুবিধা হবে। তাই আমার মনে হয়, ভারতের এ অঞ্চল নিয়ে ওনার এই জিনিসগুলো না বললেই ভালো হতো। বাংলাদেশে এখন আইনশৃঙ্খলা ঠিক করতে হবে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি আছেই। আমি বুঝতে পারছি যে নিরাপত্তা বাহিনীতে সমস্যা এখনও আছে। তা ছাড়া ভারতেও বাংলাদেশবিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে যদি এসব বন্ধ হয়, তাহলে ভারত থেকেও এটি বন্ধ হয়ে যাবে। আস্তে আস্তে এসব কমে আসবে। দুই দেশের গণমাধ্যমের মধ্যে ঝগড়া চলছে; কে কত জোর গলায় কথা বলতে পারে– তার প্রতিযোগিতা চলছে। তাতে কার কী সুবিধা হয়েছে? এই জায়গাটা দেখতে হবে। পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ। বাংলাদেশ নিশ্চয়ই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে, এটি হতেই পারে। শেখ হাসিনার সময় পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সেভাবে যোগাযোগ ছিল না। এরপরও তাদের সঙ্গে ছোটখাটো বাণিজ্য হয়েছে। এটি হতেই পারে। শুধু এ দেশই নয়, অন্যান্য দেশের সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো করা উচিত। যেমন– বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে। এ ছাড়া চীন অবশ্যই বাংলাদেশের অনেক বড় উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো। নিশ্চয়ই ভালো হবে। বাংলাদেশের অনেক অবকাঠামোগত প্রকল্পে চীন সাহায্য করেছে। আমি বিশ্বাস করি, দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে; কিন্তু তা ক্ষণিকের জন্য। আমি আশা করছি, সরকার স্থিতিশীল হলে, আইনশৃঙ্খলা ঠিক হলে দুই দেশের মধ্যে আগের মতো সুসম্পর্কের সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া দুই দেশের যুবসমাজের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া প্রয়োজন। এতে তাদের মধ্যে দুই দেশ সম্পর্কে ভুল ধারণা কমে আসবে।
শ্রীরাধা দত্ত: জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং ভারতীয় থিঙ্কট্যাঙ্ক বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের সদস্য।
ই-
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সাথে সাথে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তার দোসররা কেউবা পালিয়েছে আবার কেউ আত্মগোপনে রয়েছে। বিগত পতিত সরকারের আমলে পেশাদার সাংবাদিকরা সব কিছু দেখলেও কোন কিছুই লিখতে পারতনা। আকাঁরে ইঙ্গিতে কোন কিছু লিখলেই সেইসব সাংবাদিকের উপর খর্গ নেমে […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯