আজ রবিবার | ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ | ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬ | দুপুর ১২:৫৭

বিএনপির মাথায় নির্বাচনী ভুত!

ডান্ডিবার্তা | ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ | ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে মশাল মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার চেষ্টা চলছে। একটি দল নির্বাচন নির্বাচন করে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করে যাচ্ছে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সরকারের বৈধতা নিয়ে মন্তব্যের বিষয়ে এনসিপি নেতারা বলেন, সরকারের বৈধতা জুলাইয়ের রক্ত। যেই আইনের মাধ্যমে আপনাদের শত শত মামলা প্রত্যাহার হয়েছে, আপনারা ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন, রাজনীতি করার সুযোগ পাচ্ছেন- সেই আইন এই সরকারের বৈধতা। শুধু একটি নির্বাচনের জন্য মানুষ রক্ত দেয়নি। তাই আওয়ামী লীগের গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার যতদিন না হবে, ততদিন জনগণ নির্বাচন মেনে নেবে না। এখন দেখা যাচ্ছে বিএনপির মাথায় নির্বাচনী ভুত চেপেছে। আগে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ হবে তার পর নির্বাচন হবে। আওয়ামীলীগকে খোলা মাঠে রেখে নির্বাচন নয়। এ সময় সরকারকে দ্রæত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ, শেখ হাসিনার বিচার করার দাবি জানান বক্তারা। এদিকে বিএনপি দ্রæত নির্বাচন আদায়ের জন্য সোচ্চার রয়েছে। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহŸায়ক আহŸায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, জনগনের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান দীর্ঘ ১৫ বছর দেশে আসতে পারেন না, আমাদের নেত্রী ৬ বছর জেল খেটেছেন। কিন্তু এখনো আমাদের দাবি পূর্ণ হয়নি। যতোদিন দাবি পূর্ণ না হবে ততোদিন আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। তিনি আরও বলেন, এই সরকার যেদিন শপথ নিয়েছে সেদিন বলেছিল গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে তারা সড়ে যাবে। বিএনপিও তাদের যৌক্তিক একটি সময় পর্যন্ত অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে যাবে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করলে ছাড় দেয়া হবে না। অধ্যাপক মামুন মাহমুদ সংস্কার প্রসঙ্গে বলেন, অনেকেই বলেন বিএনপি সংস্কার চায় না। আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২৩ সালেই ৩১ দফা দিয়েছেন। যেখানে সংস্কারের সব কথা বলা হয়েছে। ফতুল্লায় বিএনপির এক সমাবেশে নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার আহŸান জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব বলেন, আজ অনেকে হাই তুলছে এ সরকারকে ৫ বছর থাকতে হবে। ৫ নয় ৫০ বছর থাকুন। আগে নির্বাচিত হয়ে আসুন। ফ্যাসিস্টদের সময় আমলারা এভাবেই বলত শেখ হাসিনার সরকার আরও বেশি দরকার। সেই প্রচার করে তারা দেশকে লুটেপুটে খেয়েছে। আমার নেতা তারেক রহমান বলেছেন সবার আগে দেশ ও দেশের মানুষ। বিএনপি সেই রাজনীতিই করে। আমাদের একমাত্র নেতা তারেক রহমান আর আমরা সবাই দায়িত্বশীল। আজকে প্রয়োজনে দায়িত্ব দিয়েছেন, আবার দায়িত্ব থেকে সরিয়েও দিতে পারেন। দায়িত্ব পেয়ে কেউ অহমিকা করবেন না। কোন নেতার কারনে দলের বিন্দু পরিমান ক্ষতি হলে তাকে ছাড় নয়। তিনি বলেন, আমাদের মতো নেতাদের ২/৩ মাসের বেশী জেল খাটতে হয়নি। কিন্তু আমাদের নেত্রী বছরের পর বছর জেল খেটেছেন। এমন নেত্রীর বদনাম কেউ করবেন সেটা মেনে নেবো না। বিএনপি যেকোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিএনপি এবং তার প্রতিটি নেতাকর্মী আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে মানুষের ভোটের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তারেক রহমান বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা যে সংগ্রামে রাজপথে নেমে এসেছিলাম, গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা। যেই সংগ্রামের জন্য আমাদের বহু নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছে। বহু নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। তাদের এই বলিদানকে কোনোভাবেই বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে যুদ্ধ না হলে শিশু হত্যা হয় না। কিন্তু জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আমরা দেখেছি সেই পলাতক স্বৈরাচারের নির্বিচার অত্যাচারের কারণে এই দেশে প্রায় ১০০ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এই শিশুদের কোনো অপরাধ ছিল না। এই শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। এই শিশুদের বলিদান কেন, শুধুমাত্র গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সংস্কার শুরু করেছে শহীদ জিয়ার আমল থেকেই। আমরা যখন সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি তখন স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দিয়েছি। আর এখন যারা দিচ্ছেন, আপনারাই তা বিচার করবেন। আমরা যা দিয়েছি, তা পূরণ করে ছাড়ব। সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, আমরা শুধু ৩১ দফা দিয়েই থেমে থাকিনি, মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। নেতাকর্মীদের মাধ্যমেই তা পৌঁছে দিতে হবে। দেশের ৭০ ভাগ ভালো কাজ বিএনপি করেছে। সামাজিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবেশের সমস্যা নিয়েই কর্মশালায় বেশি প্রশ্ন পেয়েছি। জনগণ জানে দেশের ভালো কিছু করতে পারলে বিএনপিই করতে পারবে। এই আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে বিএনপিকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তারেক রহমান বলেন, জনমানুষের চাওয়ার সঙ্গে একটি মহলের চাওয়ার পার্থক্য রয়েছে। আমরা চাই ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বাধাগ্রস্ত হলে সব কিছু বাধাগ্রস্ত হবে। যেকোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ভোট যদি আপনার পক্ষে আনতে হয়, তবে জনগণের কাছে যেতে হবে। যে কোনো মূল্যে জনগণের সঙ্গে থাকার কোনো বিকল্প নেই। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য সবাই উদগ্রীব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি মনে করেন, মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। নির্বাচন হচ্ছে মানুষের ভোটাধিকারের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনা। এটা একটা জনগণের মালিকানার বিষয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ডিসেম্বরের আগে একটা নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার আহŸান জানিয়ে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, এখন জনগণের দাবি জনগণের প্রত্যাশা; ডিসেম্বরের আগে একটা নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে দেন। নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে বলে দেন। আমরা আপনার অধীনে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনে আশাবাদী। জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, সবাই যখন ড. ইউনূসের কাছে যান তখন তিনি (ড. ইউনূস) বলেন ‘কী সাহস পাই আপনাদেরকে সাথে পেলে’। সেই সম্মান ও সাহস আমরা আপনাকে দিচ্ছি। সেই সাহসকে যদি আপনারা সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা না করেন, নির্বাচন বিলম্বিত করেন তাহলে এর দায়দায়িত্ব আপনার উপরে পড়বে। আমরা নির্বাচন-নির্বাচন এজন্য বলি যে আগে একটা স্থিতিশীল সরকার সংসদে বসতে দেন। তারাই মূল দায়িত্ব পালন করবে, কোনটা সংস্কার হবে কোনটা হবে না। দেশে এখন জনপ্রতিনিধির সরকার দরকার। নির্বাচিত সরকার না থাকায় দেশে জবাবদিহির অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনে এখনও দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদী চরিত্রের ব্যক্তিরা সক্রিয় রয়েছে এবং সরকারি মদদে তারা দায়মুক্তি ভোগ করছে। রিজভী বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের দোসররা আজ আদালতে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে, ফ্যাসিস্ট শাসনে ফিরে যাওয়ার ভয় দেখাচ্ছে। তারা এতটা সাহস পায় কোথা থেকে?’ তিনি অভিযোগ করেন, এই হুমকির মাধ্যমে অন্তর্বতী সরকারকে অকার্যকর করে তোলার অপচেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, ‘আদালতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাধারণ বন্দীর মতো আচরণ করা হয়, ডিভিশন দেওয়া হয় না। অথচ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা আদালতে গিয়ে জামাই আদরে থাকে, এমনকি সেখানে দাঁড়িয়েও হুমকি দেয়।’ তাই নির্বাচিত সরকার ছাড়া তা সামাল দেয়া সম্ভব নয়। এ জন্য নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। আর যারা বলছে বিএনপি কেন নির্বাচন চায়, কারণ বিএনপি বিগত ১৬ বছর জোর করে ক্ষমতায় থাকা জনগণের ভোট ছাড়া অনির্বাচিত সরকারের জুলুম সইতে হয়েছে। কারণ তাদের জবাবদিহি ছিল না। নির্বাচিত সরকার হলে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়।

 




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা