আজ সোমবার | ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ | ২৯ শাওয়াল ১৪৪৬ | সকাল ১১:২০

ঘোলাটে হচ্ছে রাজনৈতিক পরিবেশ!

ডান্ডিবার্তা | ২৮ এপ্রিল, ২০২৫ | ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
দিন দিন ঘোলাটে হচ্ছে রাজনৈতিক পরিবেশ। বিভিন্ন দলের ভিন্ন ভিন্ন মতের বেড়াজালে এখন অন্তবর্তি সরকার। বিএনপি-জামায়াত ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবিতে একমত হলেও খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন ও নতুন দল জাতিয় নাগরিক কমিটির ভিন্ন মত। তাদের মত হলো সংস্কারের আগে কোন নির্বাচন নয়। এ ব্যপারে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, নির্বাচন আর সংস্কারের মধ্যে কিছু গুলিয়ে ফেলছে। সংস্কার দীর্ঘ মেয়াদী। নির্বাচনের পর যারা সরকার গঠন করবে তারাও এ সংস্কার কার্যক্রম করতে পারবে। তাই বলে সংস্কারের অযুহাতে নির্বাচন বিলম্বিত করার কোন যুক্তি নেই। নারায়ণগঞ্জ জামায়াতের এক শীর্ষ নেতা বলেন, নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্টা হলে জনগণের দাবিতেই সংস্কার হয়ে যাবে। এর মানে এই নয় সংস্কারের নামে নির্বাচনকে আটকে রাখা। মানুষ নির্বাচন চায়। আর নির্বাচন যত দেরী হতে ততই স্বৈরাচারের দোসররা মাথাচাড়া দিয়ে উঠার সুযোগ পাবে। তাই আর স্বৈারাচারদের কোন সুযোগ দেয়া যাবে না। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করাই হলো এখন বর্তমান সরকারের কাজ। ছাত্রদের কাজ ক্যাম্পাসে, মন্ত্রণালয়ে নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ছাত্র সংগঠনের কমিটি দেওয়া হচ্ছে। এতে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। সমাজের কিছু সুবিধাভোগী শ্রেণি ছাত্রদের বিপথে পরিচালিত করছে, প্রলোভনে ফেলছে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা শুনেছি প্রধান উপদেষ্টার সব মামলা প্রত্যাহার হয়ে গেছে। উনিও শেখ হাসিনার ঈর্ষা, বিদ্বেষ এবং আক্রোশের শিকার হয়েছেন। আমরাও আন্দোলন সংগ্রামে থেকেছি, নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হয়েছি। দুই-একজন উপদেষ্টাও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তাদের মামলা যদি প্রত্যাহার হয়ে থাকে তাহলে এই লাখ লাখ মানুষেরগুলো কেন হচ্ছে না? অতি দ্রæত এই মামলাগুলো নিষ্পত্তির আহŸান জানান তিনি। সংস্কার প্রস্তাবের যেসব বিষয় নিয়ে ঐকমত্য হয়েছে তার বাইরে সংস্কার করার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এর বাইরে কিছু করতে হলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায় নিয়ে আসতে হবে। তার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ। সংস্কারের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা কেন জাতির সামনে তুলে ধরা হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, এরই মধ্যে অনেক সময় চলে গেছে। আলোচনা শেষ। জাতিকে জানান কোথায় ঐকমত্য হয়েছে, জাতি জানুক। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে তো আমরা বাকশাল করতে যাচ্ছি না। সবাই একমত হতে হবে, এটা যারা চিন্তা করে সেটা তো বাকশালি চিন্তা। সেটা শেখ হাসিনার পিতা করেছিলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য যে প্রচেষ্টা সেটাকে বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেকটি দলের সঙ্গে কথা বলছি। তারাও আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একে-অপরের সঙ্গে কথা বলতে হবে, সংলাপ করতে হবে। যেটা এত বছর বাংলাদেশে ছিল না সেটাই আমরা করতে সক্ষম হয়েছি। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, জুলাই আন্দোলন পরবর্তীতে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা বা সচেতনতা তৈরি হয়েছে তা হচ্ছে বিদ্যমান সংবিধানের মৌলিক সংস্কার। সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য আছে। কিন্তু নতুন সংবিধান বা সংবিধান পুনর্লিখনে প্রস্তাব থাকলেও ঐকমত্য নেই। অন্তর্র্বতী সরকার নিজেও সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। তিনি বলেন, আমরা যে মৌলিক সংস্কার করতে চাই তার অনুমোদন, এখতিয়ার বা ম্যান্ডেট জনগণের কাছ থেকে নিতে হবে। জনগণ যদি সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের ম্যান্ডেট দেয় আগামী সংসদকে, তাহলে সেটা টেকসই হবে। তাতে করে আদালতে চ্যালেঞ্জ না করে উল্টো সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্বে যাবে। তাতে সংস্কার টেকসই হবে। জোনায়েদ সাকি বলেন, যেসব বিষয়ে আমাদের ভিন্নমত ও আংশিক মত ছিল সেসব বিষয়ে আজ বিস্তারিত কথা হয়েছে। আমাদের কাছ থেকে তারা আরও বিস্তারিত ও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব প্রত্যাশা করেছেন। সেটা আমরা করব। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইক্যুয়াল ফিল্ড তৈরির জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের বুথ সিসিটিভির আওতায় চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মো. তাহের বলেন, স¤প্রতি জামায়াত আমিরসহ আমরা ব্রাসেলস সফর করেছি। সেখানে বেলজিয়াম সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের একাধিক বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, উন্নয়ন-অগ্রগতিসহ নানা বিষয়ে আমাদের ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নারী অধিকার, সংখ্যালঘু এবং আমাদের প্রধান রপ্তানি খাত গার্মেন্টস বিষয়ে আমাদের অবস্থান তারা জানতে চেয়েছেন। এসব বিষয়ে আমরা তাদেরকে স্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের এক অংশের সভাপতি আবু জাফর কাশেমী বলেছেন, সংস্কার করতে হবে। সংস্কার ছাড়া গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। তিনি বলেন, আমরা আজ এসেছি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় করতে। সেটা হলো, নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে, এটা নিয়ে বিতর্ক চলছে। নির্বাচন কমিশনকে বলেছি, আগে সংস্কার হতে হবে। প্রত্যেক জায়গায় স্বৈরাচারী সরকারের কর্মকর্তারা রয়েছেন। পতিত সরকারি কর্মকর্তারা রয়েছেন। সংস্কার ছাড়া গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন এবং, নির্বাচন যেন একটি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য সময়ের মধ্যে হয়।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা