আজ শনিবার | ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৮ মাঘ ১৪৩১ | ১ শাবান ১৪৪৬ | দুপুর ২:৪২

কার্যালয়ের অভাবে ছন্নছাড়া বিএনপি!

ডান্ডিবার্তা | ০৭ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট রাজনীতির চর্চা থেকে দূরে আছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ছাত্র ও যুব সংগঠনের কর্মীরা। ফলে আগামী নেতৃত্ব তৈরির সম্ভাবনা থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন বহু সম্ভাবনাময় নেতা ও কর্মী। তাই মূল দলের পাশাপাশি অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃত্বে আসছেন সেই পুরনোরাই। জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা মুখে মুখে সরকার পতনের আগে রাজপথ ছাড়বেন না বলে বার বার হুংকার দিলেও গত সাড়ে পাঁচ বছরে দলীয় কার্যালয় নিতে পারেননি তারা। নারায়ণগঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও ধনী জেলায় বিএনপির মতো একটি বড় রাজনৈতিক দলের একটি কার্যালয় নেই দীর্ঘ দিন-এমন ইস্যুতে ক্ষোভের অন্ত নেই দলটির কর্মী ও সমর্থকদের। তাদের ভাষ্যমতে, ঘরবাড়ি ছাড়া মানুষ যেমন ছন্নছাড়া, তেমনি নারায়ণগঞ্জ বিএনপির কার্যক্রম চলছে ছন্নছাড়াদের মতই। নেতারা রাজনীতি করছেন হোটেল-রেস্তোরাঁয়, কারো বাসায় বা  কারো চেম্বারে। কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নেতৃত্বের আধিপত্য আর নির্বাচন আসলে মনোনয়ন দৌড়ে অংশ নেন এই জেলার বিএনপির বহু ধনকুবের নেতা। কিন্তু দলীয় অফিস নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা সবাই নিরব। এমনকি দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যখন নারায়ণগঞ্জে আসেন, তখন দলীয় অফিসে বসাতে না পারার লজ্জাবোধও তাদের হয় না। যারা দলের জন্য একটি অস্থায়ী অফিসও নিতে পারেন না, তারা কী করে সরকার পতনের আন্দোলন করবেন তা ভাবলে আমাদের কষ্ট হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন নগরীর বিনোদন সুপার মার্কেটে ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ওই মার্কেট ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়ায় সেই কার্যালয়ও ভাঙা পড়ে। কার্যালয়টি না ভাঙতে আদালতে বিএনপির পক্ষ থেকে করা মামলায় জয়ী হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক)। পরে সেখানে বহুতল ভবন তৈরির কাজ শুরু হয় এবং সেটি সম্পন্ন হলে সেখানে বিএনপির কার্যালয় বুঝিয়ে দেবে বলে জানিয়েছিল নাসিক। কিন্তু সেই থেকে অতিবাহিত হয়েছে ৬৮ মাস। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির একাধিকবার কমিটি গঠন ও নতুন নেতৃত্ব আসলেও দলীয় কার্যালয় বুঝে পায়নি। ফলে দলের কার্যক্রম চলছে নেতাদের ব্যক্তিগত অফিস, বাসা বা রেস্তোরাঁয়।  জানা গেছে, জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা তৈমুর আলম খন্দকারের অনুসারীরা গত পাঁচ বছর মিটিং করতেন নগরীর মাসদাইর এলাকায় তৈমুরের বাড়ির নিচতলার অডিটোরিয়ামে। সাবেক এমপি ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম তার অনুসারীদের নিয়ে সভা করতেন নিজের চেম্বারে। এদিকে মহানগর বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মার্কেটের তৃতীয় তলায় নিজের অফিসে মহানগর বিএনপির বিভিন্ন কার্যক্রম ও নিজের চেম্বার পরিচালনা করছেন। সেখানে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বসে দলীয় বৈঠক ও সভা করছেন। জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহামুদ দলীয় কার্যক্রম চালান সিদ্ধিরগঞ্জের কোনো রেস্তোরাঁ বা নিজের অফিসে। দলটির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন কর্মী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের অফিস হলো সেই দলের প্রাণকেন্দ্র। জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আমরা রাজনৈতিক বৈরীতার কারণে রাজনীতি চর্চা করতে পারি না। সেখানে দলীয় কার্যালয় থাকলে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের বহুপ্রতিভাবান কর্মী আসতে পারতো, নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হতো। মহানগর যুবদলের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতির আধিপত্য কায়েম করতে টাকার কমতি হয় না। জেলার এক ধনী নেতা মাসের পর মাস বিলাসবহুল ওয়েস্টিন হোটেলে থাকতেন, সেখানে বসে রাজনীতি করেছেন, যা সবাই জানে। রুপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁ, ফতুল্লায় নেতৃত্ব দেন এমন বহু ধনকুবের নেতা আছেন। অথচ সাড়ে পাঁচ বছর দলটির একটি অস্থায়ী অফিস নিতে না পারলেও নেতৃত্বে প্রশ্নে সব কিছুই করেন। এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, জেলা বিএনপির কার্যালয় ও ভবনের নিচতলায় অবস্থিত দোকান মালিকদের বলা হয়েছিলে সেখানে ৯ তলা মার্কেট করা হবে। ভবনের নিচতলায় যাদের দোকান ছিল তাদের নতুন ভবনে একই রকম দোকান দেওয়া হবে। এছাড়া দ্বিতীয় তলায় থাকা জেলা বিএনপির কার্যালয়টিও অনুরূপ আকৃতির করে দেওয়া হবে। তবে বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ এখনও শেষ হয়নি। কার্যালয়টি নিয়ে যে মামলা হয়েছিল তার আইনজীবী ও  বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, আমি তো হাইকোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিলাম এ কার্যালয়ের জন্য। আমি ছাড়া এ বিষয়ে কেউই এগিয়ে আসেননি। তখন সিটি করপোরেশন আমাদের কার্যালয়টি বুঝিয়ে দেবে বলেছিল। এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিন জানান, দলীয় কার্যালয় আমাদের বুঝিয়ে দেওয়ার কথা সিটি করপোরেশনের। এটি কেন তারা দ্রুত কাজ করে বুঝিয়ে দিচ্ছে না, সেটি পরিষ্কার নয়। কার্যালয়ের ব্যাপারটি দেখা হচ্ছে। তবে সাড়ে পাঁচ বছরেও কেন একটি অস্থায়ী কার্যালয়ও আপনারা নিতে পারেননি, এমন প্রশ্নের কোনো জবাব তিনি দেননি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা