বন্দরে গত বছর ১৫ খুন

বন্দর প্রতিনিধি   নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দরের বিভিন্ন অপরাধে গত ১১ মাসে প্রায় ৪শ’ ৭৫টি মামলা হয়েছে।  জানুয়ারী মাসে বন্দরে বিভিন্ন অপরাধে মামলা হয়েছে ৪১টি। এর মধ্যে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে ২৭টি, ধর্ষন ২টি, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের হয়েছে ২টি, ডাকাতি মামলা ১টি ও অন্যান্য মামলা হয়েছে আরো ৯টি। তবে গত জানুয়ারী মাসে বন্দরে কোন হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের দাবি বছরের প্রথম মাসে বন্দরে আইন শৃঙ্খলা যে কোন মাসের চেয়ে অনেক ভালো। ২৭টি মাদক মামলায় পুলিশ বন্দরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে ১টি হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৪৩ মামলা। এর মধ্যে হত্যা মামলা হয়েছে ১টি, চাঁদাবাজী মামলা ২টি, ধর্ষন মামলা ৩টি, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়ের  হয়েছে ৬টি, চুরি মামলা হয়েছে ৩টি ও মাদক মামলা রুজু হয়েছে ১২টি, এবং মারামারিসহ অন্যান্য অপরাধে মামলা হয়েছে আরো ১৬টি। তবে গত ফেব্রুয়ারী মাসে বন্দরে ডাকাতি ও এসিড সংক্রান্ত এমকি পুলিশ আক্রান্তের কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি। বন্দর থানা পুলিশ ১২টি মাদক মামলায় মহিলাসহ ১৯ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। গত মার্চ মাসে বন্দরে ডাকাতি ও এসিড সংক্রান্ত এমনকি পুলিশ আক্রান্তের কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি।  বন্দর থানা পুলিশ ১২টি মাদক মামলায় মহিলাসহ ৫ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। সেই সাথে পুলিশ আটককৃত ৫ জন মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১শ’ ৮৫ পিছ ইয়াবা, ৩ কেজি ৮’শ গ্রাম গাঁজাসহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বন্দর থানা পুলিশ গত মার্চ মাসে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সিআর মামলার ওয়ারেন্টভ’ক্ত ২৩ জন ও জিআর মামলার ওয়ারেন্টভ’ক্ত ৩২ জনসহ বিভিন্ন মামলার ৬ সাঁজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। এপ্রিল মাসে ৩৯ টি মামলা রুজু হয়েছে। মে মাসে বন্দর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হত্যাকান্ডসহ চুরি ও মাদক ব্যবসা আংশকা জনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন কথা জানিয়েছে বন্দরের সচেতন মহল। তারা আরো জানিয়েছে বন্দরে মাদকের ভয়াবহতা মারত্মক আকাড় ধারন করছে। কোন অবস্থাতে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পারছে না স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটি। তথ্য সূত্রে জানা গেছে, গত মে মাসে বিভিন্ন অপরাধে বন্দর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে মোট ৪৮টি।  এর মধ্যে হত্যা মামলা হয়েছে ৪টি, জঙ্গী মামলা ১টি, অস্ত্র আইনে ১টি, সিধেল চুরি ১টি, সাধারন চুরি ১টি, ধর্ষন মামলা ৫টি, মাদক মামলা ১৪টি, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা ৮টি ও অন্যান্য মামলা হয়েছে আরো ১৩টি। বন্দর থানায় জুন মাসে বন্দর উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায়  ধর্ষন, মাদক ও নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা আংশকা জনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বন্দর থানায় হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৫১টি মামলা হয় এমন কথা জানিয়েছে বন্দরের সচেতন মহল। তারা আরো জানিয়েছে, বন্দরে মাদকের ভয়াবহতা মারত্মক আকার ধারন করছে। কোন অবস্থাতে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পারছে না স্থানীয় পঞ্চায়েত। গত জুন মাসে বিভিন্ন অপরাধে বন্দর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে ৫১টি। এর মধ্যে হত্যা মামলা ১টি, অস্ত্র আইনে ১টি, অপহরণ মামলা ১টি, ধর্ষন ৪টি, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা ১৩টি, চুরি- ১টি, পুলিশ আক্রান্ত মামলা ১টি, মাদক মামলা ১১টি ও অন্যান্য মামলা হয়েছে আরো ১৮টি। বন্দরে মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাই ও সড়ক দুর্ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত জুলাই মাসে বিভিন্ন অপরাধে বন্দর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে ৫৩টি। এর মধ্যে মাদক মামলা রুজু হয়েছে ১৬টি, দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে ৩টি, ধর্ষণ মামলা হয়েছে ৪টি, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে ৫টি ও সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা হয়েছে ৪টি এবং অন্যান্য মামলা দায়ের হয়েছে ২১টি। বন্দর থানা পুলিশ ও র‌্যাব-১১ বন্দরের বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১৬টি মাদক মামলায় ১ হাজার ৮’শ ১৫ পিস ইয়াবা, ৯৪ কেজি ১০৩ গ্রাম গাঁজা ও ২০ গ্রাম হেরোইনসহ ২২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। গত আগস্ট মাসে বিভিন্ন অপরাধে বন্দর থানায় মামলা হয়েছে ৪২টি। এর মধ্যে হত্যা মামলা হয়েছে ১টি, অস্ত্র আইনে ১টি, চুরি মামলা ২টি, অপহরণ মামলা ৩টি, ধর্ষণ মামলা ২টি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা ৩টি ও মাদক মামলা ১২টি ও অন্যান্য মামলা হয়েছে আরো ১৫টি। তবে গত আগস্ট মাসে বন্দর থানায় ডাকাতি, এসিড আক্রান্ত বা পুলিশ আক্রান্তের কোন মামলা দায়ের হয়নি। থানা সূত্রে জানা গেছে, আগস্ট মাসে আত্মহত্যার প্ররোচণা দিয়ে মামলা শুরু হয় এবং অস্ত্র মামলা দিয়ে শেষ হয়। অক্টোবর মাসে বন্দরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটেছে বলে অভিমত বন্দরবাসীর। গত অক্টোবর মাসে বন্দর থানায় বিভিন্ন অপরাধে মামলা হয়েছে ৩৮টি। যার মধ্যে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে ৩টি, ধর্ষণ মামলা ২টি, গণধর্ষণ মামলা ১টি, অপহরণ ২টি, চুরি ৬টি, দ্রুত বিচার আইনে ১টি, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা ১টি, মাদক মামলা ১২টি ও অন্যান্য মামলা দায়ের হয়েছে আরো ১০টি। গত অক্টোবর মাসে ৩৮টি মামলার মধ্যে ১২টি মামলা হয়েছে মাদকের। জানা গেছে, বন্দরে বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসা আশঙ্কাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সচেতন মহল জানিয়ে বন্দরে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ মেলার নামে চলছে অবাধে মাদক ব্যবসা ও প্রকাশ্যে মাদক সেবনের ঘটনা ঘটেছে। বন্দর থানায় রুজুকৃত ১২টি মাদক মামলায় পুলিশ ও র‌্যাব এর পৃথক টিম বন্দরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ১’শ ৬১ বোতল ফেন্সিডিল, ১০ কেজি ৫শ গ্রাম গাঁজা ও ৬ হাজার ২শ’ ৬৫ পিছ ইয়াবা ট্যবলেট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। ১২টি মাদক মামলায় পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৪ জন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করতে সক্ষম হয়েছে। নভেম্বর মাসে বন্দরের আইনশৃঙ্খলা মারত্মক ভাবে অবনতি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। তারা জানান, বন্দরে মাদকের ভয়াবহতা মারত্মক আকার ধারণ করছে। কোন অবস্থাতে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পারছে না স্থানীয় পঞ্চায়েত। থানা সূত্রে জানা যায়, নভেম্বর মাসে বিভিন্ন অপরাধে বন্দর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে মোট ৩৬টি। এরমধ্যে হত্যা মামলা ৩টি, ডাকাতি ১টি, চুরি ১টি, ধর্ষণ ১টি, মাদক মামলা ১৪টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ২টি, পর্ণ্যগ্রাফি আইনে মামলা ১টিসহ অন্য মামলা হয়েছে আরো ১৩টি। এছাড়াও নভেম্বের মাসে বন্দরে বিভিন্ন ঘটনায় ৫টি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে ১৪টি মাদক মামলায় ২১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ১৪টি মাদক মামলায় পুলিশ ৪ হাজার ৬শ’ ৪৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৫৩ কেজি গাঁজা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। যার আনুমানিক মূল্য ২৯ লাখ ৬৮ হাজার ৩শ’ টাকা। এছাড়াও পুলিশ নভেম্বর মাসে বন্দর উপজেলা ও নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৯টি ওয়ার্ডে ওয়ারেন্ট তামিল অভিযান চালিয়ে ২ জন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীসহ জিআর মামলার ৪০ জন ও সিআর মামলার ৩৬ জন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। এ ব্যাপারে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবু বকর ছিদ্দিক জানান, নভেম্বর মাসে ৩টি হত্যাকান্ড ছাড়া বন্দরে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ভালো ছিল। তবে বন্দরে বেশ কিছু এলাকায় মাদক ব্যবসা বেড়েছে। ৩৬টি মামলার মধ্যে মাদক মামলা হয়েছে ১৪টি। মাদক নিয়ন্ত্রণে সকলের সহযোগিতা চাই। ডিসেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত বন্দর থানায় বিভিন্ন অপরাধে ৫০ টি মামলা রুজু হয়েছে।  গত বছর বিভিন্ন অপরাধে বন্দর থানায় প্রায় ৫শ’ ২৫ টি মামলা হয়েছে। চুরি, ছিনতাই, অপহরন মামলা। সবচেয়ে বেশি ছিল নিখোঁজের ঘটনা। সার্বিক পরিস্থিতিতে ২০২২ সাল বন্দর উপজেলা এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তেমন একটা ভাল যায়নি। বছরের ১২ মাসের সমিকরন উল্লেখযোগ্য।