আজ রবিবার | ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৯ মাঘ ১৪৩১ | ২ শাবান ১৪৪৬ | রাত ১২:৩১

ছাত্র রাজনীতির একাল সেকাল

ডান্ডিবার্তা | ১০ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ছাত্র রাজনীতি ইতিহাস অনেক ত্যাগ গৌরবের। দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রছাত্রীদের অবদান রয়েছে। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, সর্বক্ষেত্রেই রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের রক্তস্নাত অবদান। ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে ছাত্র রাজনীতি বিশেষ করে ছাত্রলীগের অবদান অম্লান হয়ে আছে এবং চিরদিন থাকবে। কিন্তু গৌরবমিত ছাত্র রাজনীতির অবস্থা আজ অন্যরকম। রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে নানা নেতিবাচক খবরাখবর। আমরা সবাই জানি, অসংখ্য ছোটবড় নীতিবহির্ভূত কাজের জন্য দায়ী হচ্ছে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনটি ছাত্রসংগঠন। অতীত বর্তমানের পত্রিকার পাতাতেই আছে এর খতিয়ান। তবে দীর্ঘদিন ক্ষমতার অভাবে বর্তমানে ছাত্রদল ছাত্রশিবির অনেকটা নিষ্ক্রিয় অবস্থায়। ফলে বর্তমান অপকর্মের সিংহভাগের জন্য দায়ী হচ্ছে কিছু পথভ্রষ্ট ছাত্রলীগ অথবা ছাত্রলীগ নামধারী কিছু সুবিধাবাদী, দুষ্কৃতকারী অনুপ্রবেশকারী। ছাত্র রাজনীতির অবস্থা দেখে দেশবাসী স্তম্ভিত ব্যথিত। অনেকের মনেই প্রশ্ন, যে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু, যে ছাত্রলীগ করেছেন অনেক স্বনামধন্য রাজনীতিক, সেই ছাত্রলীগের পরিণতির কারণ কী? বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে স্বাধীনতা পর্যন্ত ছাত্রলীগের রাজনীতি ছিল অত্যন্ত নিষ্কলুষ। সে সময় ছাত্রদের মানসপটে ছিল ভাষা আন্দোলন, পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণের প্রতিবাদ এবং স্বাধীনতার স্বপ্ন। তাদের নৈতিকতা ছিল অনন্য। পরিশ্রম করেছে নিরলস স্বার্থহীনভাবে। পদপদবি, টাকাপয়সা, চাকরি, গাড়ি পাওয়ার জন্য মারামারি, অবস্থান ধর্মঘট এসব ছিল কল্পনাতীত। কিছুদিন আগে প্রসঙ্গে ডাকসুর সাবেক ভিপি তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা যখন ছাত্রনেতা ছিলাম, তখন আমাদের একটাই দাবি ছিল তা হল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যা বলতেন, আমরা তাই করতাম। আমরা হাতে পোস্টার লিখতাম। আমাদের সময় শিক্ষকছাত্র সম্পর্ক ছিল পিতাপুত্রের মতো।সেই আমলে ছাত্রলীগ করেছেন বঙ্গবন্ধুর ছেলেমেয়ে, আমাদের বর্তমান প্রেসিডেন্টসহ আরও অনেক বড় বড় নেতা। তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছিলেন সমাজে সম্মানিত। মানুষের অন্তরে এই অকুতোভয় ছাত্রছাত্রীদের প্রতি ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা। কিন্তু বর্তমানে সেই অবস্থা আর নেই। নেতানেত্রীদের সন্তানরা এখন আর ছাত্র রাজনীতি করে না। ক্ষমতার লোভে অনেক অছাত্রও নানা কৌশলে ছাত্রনেতা সেজে বসে আছে। অর্থের লোভে অনেকেই নানারূপ অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়েছে। সন্তান ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত শুনলে এখন মানুষ ভীত হন। সমাজেও ছাত্র রাজনীতির গ্রহণযোগ্যতা আর আগের মতো নেই। দেশের জনগণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতি আর দেখতে চায় না। কিন্তু দুঃখজনক যে, এত কিছুর পরও রাজনীতিকরা ঘুরিয়েফিরিয়ে বলার চেষ্টা করছেন ছাত্র রাজনীতি দেশের জন্য প্রয়োজন। রাজনীতি নাকি বিশ্বের অনেক দেশেই আছে। রাজনীতি না থাকলে নাকি দেশে নেতৃত্ব তৈরি হবে না (জানি না, ছাত্র রাজনীতি যে দেশে নেই সেসব দেশে নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে কীভাবে) অনেকেই বলেছেন, ছাত্র রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে থাকবে কি থাকবে না, এটি কোন রাজনীতিক সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর এখানে কিছুই করার নেই। সব দায়দায়িত্ব হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। কেউ কেউ শিক্ষক রাজনীতিকেই ছাত্র রাজনীতির বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী করছেন। অনেকেই চেষ্টা করছেন কীভাবে উদোর পিি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়া যায়। এখন ছাত্র রাজনীতি পূর্বের অবস্থায় নেই। পূর্বের সেই গৌরব কোনো দিন ফিরেও আসবে না। তারপরও নিজেদের স্বার্থে ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে রাজনীতি করাচ্ছে। ভাষা স্বাধীনতার প্রয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু সেই প্রয়োজন আজ আর নেই। সত্যটিকে আমরা মেনে নিতে চাচ্ছি না বা পারছি না। আমাদের ভাষা আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। আমরা স্বাধীন। আমাদের এখন রাজনীতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। কিন্তু সবকিছু জেনেশুনে আমরা ছাত্রছাত্রীদের রাজনীতি মুক্ত করছি না। আসলে বঙ্গবন্ধু শহীদ হওয়ার পর শুরু হয়েছে এক কলুষিত ছাত্র রাজনীতির উপাখ্যান। তৈরি হয়েছে নতুন নতুন ছাত্রসংগঠন এবং নতুন ধারার ছাত্র রাজনীতি। ছাত্রছাত্রীরা এখন ভাষা বা স্বাধীনতা বা নিজেদের সমস্যা বা দেশের সমস্যা সমাধানে আন্দোলন করে না। অত্যন্ত কৌশলে ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা রাজনীতিবিদরা শুরু করেছে লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি। যে রাজনীতির উদ্দেশ্য একটিই, ‘ক্ষমতার তালগাছটি আমার চাই তালগাছ দখলের জন্য প্রয়োজন রাজপথ দখল। রাজপথ দখলের জন্য প্রয়োজন ছাত্রছাত্রী। লেজুড়বৃত্তির জাঁতাকলে বঙ্গবন্ধুর আলোকিত ছাত্র রাজনীতি আজ অন্ধকারাচ্ছন্ন। ছাত্রদের এখন প্রধান ব্রত হচ্ছে রাজপথ বা রাজনৈতিক ময়দান দখল করে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক সংগঠনকে পরাভূত করা। ন্যায়নীতির কোনো বালাই এখানে নেই। দখলের নৃশংস খেলায় অকালে ঝরে যাচ্ছে বহু অমূল্য জীবন, খুনিতে পরিণত হচ্ছে কোমলমতি ছাত্রছাত্রী এবং ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে বাবামার স্বপ্ন। কিন্তু রাজনীতিকরা নির্বিকার। অন্যের সন্তান হারানোর বেদনা বোঝার ক্ষমতা বা সময় তাদের নেই। তাদের প্রয়োজন ক্ষমতা। আজ দেশের মানুষ আতঙ্কিত, চিন্তিত ব্যথিত। কিন্তু রাজনীতিক এবং তাদের তোষামোদকারীরা বয়ান করছে ছাত্র রাজনীতির নানারূপ সুফল। বলছেন, মাথাব্যথা হলেই কি মাথা কেটে ফেলতে হবে বা রকম কিছু কথা। অনেকেই বলছেন ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে নাকি দেশে নেতৃত্ব তৈরি হবে না এবং জঙ্গিবাদের উত্থান হবে। জানি না কেন তারা এরূপ ধারণা পোষণ করছেন। তবে সবার জ্ঞাতার্থে নেতৃত্ব তৈরি এবং জঙ্গিবাদের বিষয়টি নিয়ে স্বল্প পরিসরে হলেও আলোচনা প্রয়োজন। নেতৃত্ব তৈরিতে ছাত্র রাজনীতি ছাড়া জাতীয় নেতৃত্ব তৈরি হবে না। খুবই ভালো কথা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছেআসলেই কি বিশ্বের অন্যান্য দেশে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে? পঁচাত্তরের পর ছাত্র রাজনীতি করে কতজন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছেছাত্র রাজনীতির বলি হয়ে অদ্যাবধি কতজনকে জীবন দিতে হয়েছে? বর্তমান জাতীয় সংসদের কতজন এমপি বা মন্ত্রী ছাত্র রাজনীতি করেছেনরাজনৈতিক নেতাদের ছেলেমেয়েরা কতজন ছাত্র রাজনীতি করছে? এসব প্রশ্নের উত্তর সবারই জানা। তারপরও ছাত্র রাজনীতিই যদি নেতৃত্ব তৈরির একমাত্র মাধ্যম হতো তাহলে বিশ্বের সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এটি থাকত। ছাত্র রাজনীতি করত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি, বিরোধীদলীয় নেতানেত্রী এবং অন্যান্য প্রভাবশালীর ছেলেমেয়েরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারাই হতো এমপি, মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী। বাস্তবতা হচ্ছে, লেজুড়বৃত্তির ছাত্র রাজনীতি বিশ্বে অচল বিরল। মাত্র কয়েকজন ছাড়া আমাদের অধিকাংশ এমপি বা মন্ত্রী হচ্ছেন ব্যবসায়ী বা অবসরপ্রাপ্ত আমলা বা পৈতৃক সূত্রে পদপ্রাপ্ত বা অন্য পেশাজীবী। আমাদের নেতানেত্রীদের ছেলেমেয়েরা ছাত্র রাজনীতি করে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেনাবাহিনী পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। ছাত্র রাজনীতি বর্তমানে করছে মূলত সাধারণ পরিবারের ছেলেমেয়েরা। অনেকেই রাজনীতি, দল দেশকে ভালোবেসে ফাঁদে পড়ছে। আবার কেউ কেউ রাজনীতিতে জড়িয়েছে প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে অথবা বাধ্য হয়ে। এদের মধ্যে দুএকজনের ভাগ্য শিকে ছিঁড়ে ফুলেফেঁপে উঠছে; কিন্তু বেশিরভাগেরই পরিণতি হচ্ছে অত্যন্ত করুণ। অনেকে পড়াশোনাও শেষ করতে পারে না। সব হারিয়ে হয় নিঃস্ব নেশাগ্রস্ত। নেশা হতাশায় শেষ পর্যন্ত অনেকেই জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা নেতা হওয়ার বদলে শেষ পর্যন্ত অনেকেই হয়ে যায় দাগি অপরাধী। রাজনীতির বলি হতভাগাদের অপকর্মের খবর প্রকাশিত হয় ফলাও করে। সুযোগ বুঝে এদের করা হয় বহিষ্কার। কিন্তু কেউ বলে না কেন এমন হল? কারা এজন্য দায়ী? আসলে বর্তমান ছাত্র রাজনীতি নেতৃত্ব তৈরির জন্য নয়। ছাত্ররা হচ্ছে ক্ষমতা দখলের বিনা পয়সার হাতিয়ার মাত্র। এদের দিয়ে বিনা খরচে, পেটভাতে মিছিল, মিটিং, হরতাল, ভাংচুর, মারামারিসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাকরানো যায়। হাতিয়ার অসুস্থ বা পুরনো বা দুর্বল হলে অনায়াসেই পুরনোকে ছুড়ে ফেলে নতুন হাতিয়ার নেয়া যায়। দুএকটি বড় ভাগ্যবান হাতিয়ার ছাড়া অন্যসব পুরনো হাতিয়ার কালের স্রোতে কোথায় ভেসে যায়, তার খবর কেউ রাখে না। হল আসলে আমাদের নেতৃত্ব তৈরির প্রকৃত অবস্থা। একটি কথা আছে ছাত্র রাজনীতি না থাকলে জঙ্গিবাদের উত্থান হবে। ধরে নিলাম অভিমতটি সঠিক। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, জঙ্গিবাদ দমনে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর (যেমন পুলিশ, ্যাব, বিজিবি সেনাবাহিনী) সক্ষমতা কি যথেষ্ট নয়? আমরা কি জঙ্গিদের হত্যা করার জন্য ছাত্রছাত্রীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেব? আমাদের ছাত্রছাত্রীদের দায়িত্ব কি হলে হলে পাহারা দিয়ে সহপাঠীরা কে কী করছে তার তদারকি নজরদারি করা? অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের টাকাপয়সা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছে পড়াশোনা করতে নাকি জঙ্গি দমনে? জঙ্গি দমন করতে গিয়ে যদি নিরীহ ছাত্রছাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত আক্রান্ত হয় বা মৃত্যুবরণ করে, তাহলে তার দায়দায়িত্ব কে নেবে? শুধু ঢাকা, রাজশাহী, বুয়েট, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র রাজনীতি থাকলেই কি জঙ্গিবাদ বন্ধ হবে? শত শত অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমনবেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা বা মক্তব পাহারা দেয়ার কী ব্যবস্থা হবে? ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জঙ্গিবাদ জড়ালে রকম শত শত প্রশ্নের আবির্ভাব হবে। এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে কষ্টকর। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। এদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে। জঙ্গিবাদ দমনে ছাত্রছাত্রীদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজন নেই। জঙ্গিবাদের উত্থান বন্ধে প্রয়োজন হচ্ছে রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চা। গণতান্ত্রিক পরিবেশ যতই স্বচ্ছ হবে জঙ্গিবাদ ততই তিরোহিত হবে। মানুষের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা এবং সরকার বিরোধী দলের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলে কোনো অপশক্তিই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় বা সামাজিক বা আর্থিক নিপীড়নবৈষম্যের কারণে মানুষের মনে ধীরে ধীরে ক্ষোভের বাষ্প পুঞ্জীভূত হয়। সেই বাষ্পকে হয়ত দুইচারদশ বছর শক্তি প্রয়োগ করে দমন করা সম্ভব। কিন্তু ক্ষোভ সৃষ্টির উৎস বন্ধ না হলে পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ একদিন হবেই। বিগত প্রায় তিনচার দশকে ছাত্র রাজনীতির বাস্তবতা হচ্ছেযে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকবে সেই দলের ছাত্রসংগঠনটিই সব ধরনের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করবে। অন্যদের দায়িত্ব হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের প্রভুত্ব মেনে চলা। অন্যথায় নির্যাতনের স্বীকার হওয়া। আমরা ধরনের ছাত্র রাজনীতি আর চাই না। এই ছাত্র রাজনীতির একটি সুন্দর পরিসমাপ্তি প্রয়োজন। হ্যাঁ, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলেই রাতারাতি সবকিছুর সমাধান হবে না। তবে আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শান্তি আনা সম্ভব। অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নেতৃত্ব তৈরি হতে হবে। কিন্তু দলীয় রাজনীতির প্রয়োজন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক বর্ষেই নেতৃত্ব দেয়ার জন্য শ্রেণিপ্রতিনিধি আছে। এর সঙ্গে আমরা খুব সহজেই চালু করতে পারি বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে স্তুদেন্ত আসসচিয়াতিওন। আসসচিয়াতিওনএর প্রধান কর্তব্য হবে ছাত্রছাত্রীদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করা। বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি বা বিরোধী দল এসে দেশ পরিচালনায় তাদের নীতির উৎকর্ষতা ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরেন। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা শেষ করে তাদের দলে যোগদানের আহ্বান জানায়। এভাবে অনেক ছাত্রছাত্রীই পড়াশোনা শেষ করে তাদের পছন্দের রাজনীতিক দলের য়উথ ওইং যোগদান করে। আস্তে আস্তে শুরু করে রাজনীতির পালা। হল নেতৃত্ব তৈরির সুন্দর ব্যবস্থা। কিন্তু সবাই বলছে সন্তানদের সন্ত্রাস এবং ভীতিমুক্ত পরিবেশে পড়াশোনা করতে দেয়া উচিত। কিন্তু কথা হচ্ছে, কাজটি করবে কে? বঙ্গবন্ধুই বলিষ্ঠ কণ্ঠে ছাত্রছাত্রীদের বলতে পারতেন, ‘বাবারা (ছাত্রছাত্রীরা) শোনো, তোমাদের স্বাধীন দেশ। দেশ শত্রুমুক্ত। এখন দেশ গড়তে হবে। তোমরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তোমাদের হতে হবে সুশিক্ষিত। তোমরা লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করো। দেশের জন্য নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলো। রাজপথে এখন শত্রু নেই। রাজপথ দখলের প্রয়োজন নেই।কিন্তু সেই সম্ভাবনা শেষ করে দিয়েছে বিভীষিকাময় ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা টানা মেয়াদে সরকারের আসনে থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করলেও পেরে উঠছেন না। সরকারের সাথে নানা কৌশলে ঘাপটি মেরে আছে কিছু খন্দকার মোশতাক মার্কা কিছু নেতা। সরকারের অনেক কাজে তারাই মূল বাধা। অন্যথায় মাত্র / বছর পূর্বে শিক্ষা ব্যবস্থার কি হাল করেছিল। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর সময় কাল সেই পূর্বের ন্যায় সেট প্রশ্ন করলেই যথেষ্ট।  প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কোন নজির মিলেনি।  / বছর পূর্বে ৩২ সেট প্রশ্নপত্র করেও রক্ষা হয়নি। অতি সহজে প্রশ্নের ৮০ শতাংশ পরিক্ষার্থীদের হাতে চলে যেত। এটাই বর্তমান বাংলাদেশ।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা