আজ বুধবার | ৬ নভেম্বর ২০২৪ | ২১ কার্তিক ১৪৩১ | ৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬ | সকাল ৬:০৬

আর্জেন্টিনায় ডাক পেলেন না’গঞ্জের তপু বর্মণ

ডান্ডিবার্তা | ২১ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১১:১২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ছোটবেলা থেকে ডানপিটে স্বভাবের ছিল তপু বর্মণ। পড়াশোনাতে তার মন বসতো না। খেলাধুলা নিয়েই তার বেশি আগ্রত থাকতো। আর এতে বাবা-মাও বাধ না সেঁধে বরং উৎসাহিত করেছেন। অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। বড় খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। আজ তিনি নারায়ণগঞ্জের গর্ব; দেশের গর্ব হিসেবে নিজেকে আবির্ভাব করেছেন। দেশের হয়ে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফুটবল খেলছেন। তাকে নিয়ে এখন সবাই গর্ব করে। সকলের মতো বাবা-মা’ও তাকে নিয়ে অনেক উচ্ছ্বাসিত। সম্প্রতি আর্জেন্টিনার থার্ড ডিভিশনের ক্লাব সোল দা মায়ো ক্লাব থেকে প্রস্তাব পেয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দল ও বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। মেসিদের দেশের কোনো ক্লাব থেকে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি হিসেবে তিনি খেলার প্রস্তাব পেয়েছেন। তপু বর্মণের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায়। বাবা দয়াল বর্মণ একজন সাদাসিধে মানুষ। যৌথ পরিবার নিয়ে তাদের বসবাস। একসময় তিনি মাছ বিক্রি করতেন। বর্তমানে তেমন কিছু করেন না। তার ছেলে একজন দেশসেরা খেলোয়াড় হলেও সেই ভাবলেশ নেই তার মধ্যে। অন্য ছেলেদের বাবার মতো তিনিও নিজেকে একজন সাধারণ ছেলের বাবা হিসেবেই মনে করেন। দয়াল বর্মন বলেন, ‘খেলাধুলার প্রতি আমার আগে থেকেই আগ্রহ ছিল। বিশেষ করে ফুটবলের প্রতি আগ্রহ ছিল প্রবল। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ফুটবল খেলা দেখতাম। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম আমার ছেলেদের খেলোয়াড় বানাবো। আমার ছেলেরা বড় খেলোয়াড় হবে। তাই ছেলেরা যখন বড় হয় তখন তাদের ফুটবল টিমে খেলার জন্য নিয়ে যাই।’ দয়াল বলেন, ‘আমার দুই ছেলে দিপু বর্মণ ও তপু বর্মণ। বড় ছেলে দিপু বর্মণ যখন ফুটবল খেলতো যেতো তখন তাকে বলতাম তপুকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এভাবে তার খেলার প্রতি আগ্রহ বাড়ে। একপর্যায়ে তাদের রেনবো অ্যাথলেটিকস ক্লাবে ভর্তি করিয়ে দেই। একদিন সেখান থেকে একটি বড় ক্লাবে চান্স পেয়ে যায়। এরপর থেকেই তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে বয়স বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে বড় ছেলেটির চান্স হয়নি। বড় ছেলে না হলেও আমার ছোট ছেলে খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’ তপু বর্মণ দেশের জন্য আরও ভালো করুক। তার হাত ধরে ফুটবল খেলায় আমাদের দেশ আরও এগিয়ে যাক সেই কামনাই করি। তার হাত ধরে বাংলাদেশ ফুটবল বিশ্বকাপে খেলুক।’ তপু বর্মণের বড় ভাই দিপু বর্মণ বলেন, ‘আমরা দুই ভাই একসঙ্গেই খেলতাম। আমাদের খেলাধুলার ব্যাপারে বাবা-মায়ের আগে থেকেই আগ্রহ ছিল। বিশেষ করে বাবা আমাদের খেলার জন্য নিয়ে যেতেন। উনার আগ্রহের কারণেই আমার ছোট ভাই তপু বর্মণ আজ জাতীয় দলে খেলছে। বয়সের কারণে আমি পিছিয়ে গিয়েছিলাম। তবে আমার ছোট ভাই খেলছে এটাই আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।’ তপু বর্মণের মা ঠাকুরদাসী বর্মণ বলেন, ‘ছোটবেলায় সে অনেক দুষ্টুমি করতো। তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে খেলায় পাঠাতাম। তার বড় ভাই খেলায় নিয়ে যেতো। আজ সে বড় খেলোয়াড় হয়েছে। আমাদের জন্য সে অনেক গর্বের বিষয়। সবাই তাকে নিয়ে গর্ব করে। প্রতিদিনই আমার কাছে ফোন দিয়ে খোঁজখবর নেয়। আমি আমার সন্তানের এই অর্জনে অনেক খুশি।’ এসব বিষয় নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা হলে অপর প্রান্ত থেকে তপু বর্মণ বলেন, ‘আর্জেন্টিনার মতো একটি দেশের ক্লাবে প্রস্তাব পাওয়া অবশ্যই অনেক ভালো প্রস্তাব। আমি মনে করি বাংলাদেশের জন্য এটা একটা অর্জন। আমি তো খুবই খুশি।’ এলাকার বাসিন্দা সুশীল বর্মণ বলেন, ‘তপু খুব ভালো ছেলে। খেলাধুলায় তার প্রচ- আগ্রহ ছিল। বাড়িতে এলেই এলাকার ছেলেদের খেলা শেখানোর ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়। ছোট থেকেই তার প্রত্যাশা ছিল বড় খেলোয়াড় হবে। তার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। এজন্য আমরাও খুশি।’ তপু বর্মণের প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিলস উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে তার ফুটবল প্র্যাকটিস শুরু হয়। স্কুলটির সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী ফারুকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠ থেকেই তার খেলাধুলা শুরু হয়েছিল। আমাদের প্রতিষ্ঠানের খেলোয়াড়দের জন্য সফলতা কামনা করি। তাঁরা যখন ভালো করে তখন আমাদের গর্ব হয়।’ কথা হয় তপু বর্মণের প্রথম কোচ জাকির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এটা আসলে বাংলাদেশের জন্য গর্ব। বাংলাদেশের একজন খেলোয়াড় আর্জেন্টিনা টিমে তৃতীয় বিভাগে খেলবে। আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের টিম হচ্ছে মানসম্মত টিম। আমার নিজের জন্যও বিষয়টি গর্বের। সবার ভাগ্যে এমন সুযোগ হয় না।’ নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আরিফ মিহির বলেন, তপু বর্মণ বাংলাদেশের জাতীয় দলের একজন নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়। সে হিসেবে তিনি জাতীয় দলে খেলে নারায়ণগঞ্জকে সম্মানিত করেছেন। তপু আর্জেন্টিনার মতো একটি দেশে খেলার সুযোগ পাওয়ায় নারায়ণগঞ্জের একজন বাসিন্দা হিসেবে আমি গর্বিত।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৪৮
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:২১
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৫৩
  • ১১:৪৫
  • ১৫:৪১
  • ১৭:২১
  • ১৮:৩৬
  • ৬:০৬
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা