আজ শুক্রবার | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৭ মাঘ ১৪৩১ | ৩০ রজব ১৪৪৬ | সকাল ৮:৫৫

স্টেডিয়ামে ছাত্রলীগ-কার্যালয়ে আ’লীগ

ডান্ডিবার্তা | ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের বিভক্তি সাধারণ নেতাকর্মীদের আবারো হতাশ করে তুলেছে। গতকাল শনিবার ওসমানী স্টেডিয়ামে ছাত্রলীগের কর্মী সমাবেশে দুই মেরুর বিভক্তি আবারো মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দুই বলয়ের কারণে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, এতে বিএনপি লাভবান হবে। ছাত্রলীগের কর্মী সমাবেশের আয়োজন বিশাল থাকলেও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন না। উল্টো একই দিনে একই সময়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামীলীগ বিএনপি-জামাতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সমাবেশ করেন। এই বিরোধ সহসাই মিটছে না বলে ধারণা মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের। তাদের মতে এর প্রভাব আগামী সংসদ নির্বাচনে পড়তে পারে। যা আওয়ামীলীগের জন্য কোন অবস্থাতেই শুভকর নয়। এদিকে গতকাল শনিবার নারায়ণগঞ্জকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এক বিশেষ কর্মীসভা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এসময় মঞ্চে শুধু ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারন সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান ও জেলা মহানগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বক্তব্য দিয়েছেন। অপরদিকে এদিন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানসহ দলের জেলা ও মহানগরের সকল শীর্ষ নেতারা দর্শক সারিতে কর্মীদের সাথে বসে তাদের বক্তব্য শুনেছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে শহরের ওসমানী স্টেডিয়াম মাঠে ছাত্রলীগের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ কর্মীসভাটি অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল দুপুরের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ ও বিভিন্ন ইউনিট ছাত্রলীগের নেতারা বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে উপস্থিত হন। বিশাল বিশাল মিছিলে সমাবেশস্থল ভরে উঠে নেতাকর্মীতে। এসময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ব্যাংক ব্যালেন্স বাড়ানো ছাত্রলীগের লক্ষ্য নয়। ছাত্রলীগ কর্মীরা আদর্শের বলিয়ান হবে, ভাল ছাত্র হবে। ছাত্রলীগকর্মী হয়ে কোথায় টেন্ডার হচ্ছে খোঁজ নেয়া, এটা ছাত্রলীগের কাজ নয়। নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে আমরা ছাত্রলীগ করি না। ছাত্র সমাজের জন্য ছাত্রলীগ করি। ব্যাংক ব্যালেন্স বাড়াতে আমরা ছাত্রলীগ করি না, আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন সুন্দর শিক্ষার পরিবেশ পাই সে লক্ষ্যে আমরা ছাত্রলীগ করি। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। গণতান্ত্রিক ভাবে চলতে হবে। ছাত্রলীগ সমস্যা তৈরি করবে না সমস্যার সমাধান করবে। এটাই ছাত্রলীগ কর্মীদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, যেকোন সমালোচনা গ্রহন করার হিম্মত ছাত্রলীগের রয়েছে। গণমাধ্যমের বন্ধুরা যারা আমাদের সঠিক বার্তা দেয় তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। সংবাদ উপস্থাপন করা গণমাধ্যমের দায়িত্ব। এডিটরিয়াল পলিসি যদি হয় ছাত্রলীগের চরিত্র হনন করে কারও উদ্দ্যেশ্য সাধন করা, তখন ছাত্রলীগ একশটি ভাল কাজ করলেও নিউজ হয় না। মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে বিচারিক রায় দেয়া কোনভাবেই কাঙ্খিত নয়। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের সাথে স্মার্ট ছাত্রলীগ তৈরি করতে চাই। ডিজিটালভাবে আমরা যেন আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারি সেই উদ্যোগ নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ ভাবে আগামী দিনে আমরা শেখ হাসিনার বিজয় নিশ্চিত করতে চাই। ছাত্রলীগ শুধু রাজনৈতিক সংগঠন নয়। এ সংগঠন আমরা করবো যেন আমরা ভবিষ্যতে আদর্শ এবং আলোকিত মানুষ গড়তে পারি। যারা আমাদের মেয়ের শ¬ীলতাহানি করে বিরক্ত করে এগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ছাত্রলীগে লাঞ্ছনাকারী, চাঁদাবাজদের কোন স্থান নেই। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রেমিক হবে, ভালবাসতে শিখবে। পাশাপাশি যারা মেয়েদের, আমাদের বোনদেন নিপীড়িত করার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, আজকে আমাদের জন্য আনন্দের দিন। আজ আমাদের মাঝে এমন একজন উপস্থিত আছেন যিনি আমাদের সবসময় প্রেরণা এবং শিক্ষা দেয় কীভাবে দেশরতœ শেখ হাসিনার কর্মী হতে হয়। আজ তিনি মঞ্চে স্থান না নিয়ে কর্মী হিসেবে আমাদের সামনে উপস্থিত রয়েছেন একেএম শামীম ওসমান এমপি। আমাদের লক্ষ্য নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগকে ডায়নামিক নেতৃত্ব উপহার দেয়া। আমরা এমন নেতৃত্ব দিতে চাই যারা মৌলবাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে পারবে। এর মাধ্যমে আমরা বার্তা দিতে চাই। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার মাধ্যম হল সম্মেলন নতুবা কর্মী সভা। আমরা তৃণমূলের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে চাই। তিনি বলেন, অনেকে এখানে টিউশনি টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে সংগঠনের কাজে ব্যায় করেন। এজন্যেই শেখ হাসিনা বলে তৃণমূলের কর্মীরা কখনও বেইমানি করে না। এই সাংগঠনিক বার্তা আজ আমরা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। প্রতি মাসে গঠনতন্ত্রে মাসিক সভার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আপনি যেখানেই কমিটি গঠন করুন নিয়মিত সভা করতে হবে এবং কর্মীদের মতামত নিয়েই সর্বস্তরে কমিটি গঠন করতে হবে। আমাদের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদ বড় নয়। আমাদের সবচেয়ে বড় পদ আমরা শেখ হাসিনার কর্মী। তৃণমূলের প্রতি আমাদের জবাবদিহিতা রয়েছে। ছাত্রলীগ স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। গণতন্ত্রকে যতবার কুক্ষিগত করা হয়েছে ততবার ছাত্রলীগ লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে তা পুনপ্রতিষ্ঠিত করার কাজ করেছে। আমরা এমন সংগঠনের কর্মী যে সংগঠনের একজন কর্মী থেকে আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছে। তিনি আজ বিশ্বের সামনে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার জন্য আন্দোলন করেছিল আজ তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষা খাতে বাজেট ৮১ হাজার কোটি টাকা। বিএনপি জামাতের বাজেট ছিল ৬১ হাজার কোটি টাকা। আজ শুধু শিক্ষা খাতে বাজেট ৮১হাজার কোটি টাকা। আজ তারই কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বে প্রবাসীদের জন্য দুয়ার উন্মোচিত করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। আমরা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি মানুষের কাছে স্মার্ট বাংলাদেশের বার্তা আমাদের পৌছে দিতে হবে। বাংলাদেশে শুধু ৫০ ভাগ মানুষ ইন্টারনেট ব্যাবহার করত আজ ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যাবহার করে। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে টেকঅফ করার পরিস্থিতি আমাদের মাঝে তৈরি হয়েছে। সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে আমরা ব্যাবসায় করতে পারবো। সেবাস্তবতা আজ তৈরি হয়েছে। সারা দেশে ১৩ হাজার ডিজিটাল ল্যাব তরি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সকল স্তরের মানুষের কথা ভাবেন। স্কুলে যে ছেলেটি লেখাপড়া করছে তার পাশাপাশি মাদ্রাসায়ও আজ ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সে যেন দক্ষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে সে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে আমরা সবচেয়ে বেশি আয় করবো আইসিটি খাত থেকে। সে লক্ষ্যে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। আমাদের অনেক লড়াই এখনও বাকি। আমাদের সেই লড়াই শেষ করতে হবে। অনেকেই গণতন্ত্রের বেশ ধরে আছে। খুনী দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদের বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ কখনও ক্ষমা করবে না। এদের সাথে আপোষ কখনও ছাত্র সমাজ করবে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, ২০২৪ সালে নৌকাই হবে আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতীক। আজ তরুণ প্রজন্ম শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, আমরা আশা করি নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনই আপনারা আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে উপহার দিবেন এবং নারায়ণগঞ্জ যে আওয়ামী লীগের ঘাটি সেটা আপনারা আবারও প্রমান করবেন। আপনারা এই বাংলাদেশে ওই খালেদা জিয়ার মত পাকিস্তানি ভাব ধারায় রুপান্তর করবেন কী করবেন না এটা আপনাদের ওপর নির্ভর করবে। আপনারা আগামী নির্বাচনে প্রথম বার ভোট দিবেন। আমি বিশ্বাস করি আপনার জীবনের প্রথম ভোটটি হবে নৌকার পক্ষে। যে নৌকা জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীনতা এনে দেয়ার প্রতীক। তিনি আরো বলেন, আসুন আমরাও আমাদের মেধা মননে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সেই চারটি স্তম্ভকে হৃদয়ে ধারণ করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মান করি। আপনাদের স্বতস্ফুর্ত অংশ গ্রহনের জন্য আমি আপনাদের আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এসময় মঞ্চে না বসে সিনিয়র নেতারা নিচের সারিতে বসে ছাত্রলীগের নেতাদের বক্তব্য শোনেন। এতে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি চন্দন শীল, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এড.খোকন সাহাসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সকল সিনিয়র নেতারা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা