রাজপথ বিএনপির টার্গেট!

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আন্দোলনমুখী বিএনপিকে রাজপথ থেকে কোন ভাবেই ধমানো যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন আন্দোলনের কর্মসূচী নিয়ে রাজপথে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। অতীতের সকল ভেদাভেদকে পিছনে ফেলে দ্বাদশ নির্বাচনকে টার্গেট করে মাঠে রয়েছে দলীয় নেতৃবৃন্দ। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে বিএনপির জনপ্রিয়তা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকমহল। ঢাকার পাশ^বর্তী জেলা হিসেবে রাজনৈতিক সূতিকাঘার নারায়ণগঞ্জের গুরুত্ব ব্যাপক। আর এই নারায়ণগঞ্জেই এক সময়ের আওয়ামীলীগের ঘাটি হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ এখন বিএনপির ঘাটিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। জেলা আওয়ামীলীগের মধ্যে বিরাজ করছে দলীয় কোন্দল। আর এই কোন্দলকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বিএনপি। আওয়ামীলীগের কোন্দলের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে অনেকটাই এগিয়ে বিএনপি। তবে, আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ যদি কোন্দল মিটিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে ঐক্য ফিরিয়ে আনতে পারেন তাহলেই সম্ভব নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে আওয়ামীলীগর শক্তিশালী ফিরে যাওয়া। অণ্যথায় আগামি দ্বাদশ নির্বাচনকে টার্গেট করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি যেভাবে পরিকল্পনা করেছে তাতে অনেকটাই সফলতার মুখ দেখতে পারবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে দলের নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে। সূত্রমতে, দ্বাদশ নির্বাচনকে টার্গেট করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যক্রম বর্তমানে আন্দোলনমুখী। দিনের পর দিন রাজপথে আড়ালে কর্মসূচি করলেও সম্প্রতি প্রধান প্রধান সড়কে নেতাকর্মীদের নিয়ে বেশ জানান দিয়েই কর্মসূচি পালন করে আসছে দলটি। এ নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। সবার মুখে এখন একটাই প্রশ্ন, রাজপথের এই অবস্থান কি ধরে রাখতে পারবে বিএনপি নাকি আগের মতো অলিগলিতে কর্মসূচি পালন করবে? কোন পথে যাবে বিএনপি? সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বিএনপির রাজনীতির আগামী দিনের নানা পরিকল্পনা। নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপির নেতাকর্মীরা বর্তমানে রয়েছেন হার্ডলাইনে। শত শত মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীরা আর নির্যাতন বা মামলা মাথায় নিতে নারাজ তাই যেকোন মূল্যে এবার রাজপথে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলে কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় করে আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে চায় দলটি। জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকে হার্ডলাইনের আন্দোলনে রয়েছে দলটি। তবে এত বছরে এভাবে সাহস ও শক্তি নিয়ে রাজপথে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দলটি। নারায়ণগঞ্জ জেলা আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার। কিন্তু বিগত সময়ে আন্দোলনের মাঠে তেমন ঝড় তুলতে পারেনি জেলাটি। এর মধ্যেই মামলা গ্রেফতার কারাবাস ও পুলিশের পিটুনীতে নাজেহাল ছিল নেতাকর্মীরা। এহেন অবস্থায় নেতাকর্মীরা এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে দাবি করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। অতীতে, দলীয় কর্মসূচী পালনে আলোর মুখ দেখতে পারেনি দলটি। দলীয় কর্মসূচী পালনের নামে যতটুকুই আন্দোলন সংগ্রাম অনুষ্ঠিত হত তাও পুলিশি বাধায় থমকে যেত। কোন ভাবেই নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বিএনপির তাদের অবস্থান তুলে ধরতে পারেনি। তবে, বর্তমান রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পালনে একের পর এক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি অনেকটাই শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। শত শত নেতাকর্মী নিয়ে ক্ষমতাসীনদলের রক্তচক্ষু এবং পুলিশি মামলার ভয়কে উপক্ষো করে রাজপথে অবস্থান নিয়েছেন তারা। দ্বাদশ নির্বাচনের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের এখন টার্গেট যেকোন মূল্যে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করা। কারণ বর্তমান সময়ে মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস, বিদ্যুতের চড়া মূল্য, তেলের দাম বাড়া ও লোডশেডিংসহ নানা ইস্যুতে এখন মানুষ সরকারের ওপর ক্ষুদ্ধ। যেকোন মূল্যে এই নাভিশ্বাস অবস্থা থেকে মুক্তি চায় মানুষ। আর সে সুযোগে যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা বিএনপি করে দিতে পারে তবে বাকি কাজ মানুষ ভোটে করে দেবে। আর তাই এ মুহূর্তে সরকার পতনের আন্দোলনের বিকল্প দেখছেনা বিএনপি। সেই আন্দোলনে কেন্দ্রের নির্দেশ মতো কাজ করতে মাঠে রয়েছে দলটি। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিন জানান, এখন আর ভিন্ন কোনো পথ নেই সবার পথ এক পথ। সেই পথ হচ্ছে বেঁচে থাকার জন্য লড়াইয়ের পদ। এখন আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে এ সরকারের পতন নিশ্চিত করে মানুষের দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি দিতে হবে। আর সেই লক্ষ্যে এখন সব মোহনা এক সঙ্গে এসে মিশেছে। এখন আমরা একত্রিত হয়ে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজপথ দখলে রেখে সব আন্দোলন সংগ্রামের কর্মসূচি সফল করে এ সরকারের পতন ত্বরান্বিত করবো।