আজ শুক্রবার | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৭ মাঘ ১৪৩১ | ৩০ রজব ১৪৪৬ | ভোর ৫:০৯

কমিটি গঠনে ব্যর্থ আ’লীগ!

ডান্ডিবার্তা | ১৭ মার্চ, ২০২৩ | ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আ: হাইকে সভাপতি এবং এড. আবু হাসনাত শহীদ মো: বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে নারায়নগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি ঘোষনা করা হলেও পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়! দলের মধ্যে বিভাজন এবং মত পার্থক্য থাকার কারনে জেলা আওয়ামীলীগের পূনাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হচ্ছে না বলে সূত্রে জানা গেলেও জেলা কমিটির সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদক নির্ধারিত হওয়ার পর বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে জেলা সভাপতি আঃ হাই জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কাউন্সিল হওয়ার পূর্বেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের পূনাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কাউন্সিল সম্পূর্ন হয়ে গেলেও জেলা আওয়ামীলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি এখনা ঘোষণা করা হয়নি। আর পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা না হওয়ায় দলের নেতৃবৃন্দের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদকের গন্ডির মধ্যেই কি সীমাবদ্ধ থাকবে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের কমিটি? তবে রাজণৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার কারনে কেন্দ্র থেকে পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হচ্ছে না। এছাড়াও আর মাত্র ১ বছর বাকি দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচন। দ্বাদশ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে জেলা আওয়ামীলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা না হলে দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টিসহ নেতৃবৃন্দের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পূনাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হলে নেতৃবৃন্দের মাঝে দূরত্ব এবং কোন্দল সৃষ্টি হওয়ার প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে অনেকটাই পড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকমহল। এমন আশংকায় সার্বিক দিক বিবেচনা করেই কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ আ’লীগের পূনাঙ্গ কমিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে ঘোষনা করার সম্ভাবনা একেবারেই নগ্ন। অপরদিকে দ্বাদশ নির্বাচনের আগে জেলা আওয়ামীলীগের পূনাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হচ্ছে না বলে কেন্দ্রীয় সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর এ সংবাদে জেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে পদ প্রত্যাশিত একাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মাঝে বিরাজ করছে হতাশা। অপরদিকে জেলা আওয়ামীলীগের পূনাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা না হলে সাংগঠনিকভাবে দল অনেক দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশংকাও করছেন অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। তবে ভিন্নমত পোষন করেছেন নব গঠিত জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আঃ হাই। তিনি নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের পূনাঙ্গ কমিটির বিষয়ে জানান, অচিরেই হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের পূনাঙ্গ কমিটি। ইতিমধ্যে কেন্দ্রে জেলার পরীক্ষিত ও ত্যাগী সমন্বয়ে দলীয় হাই কমান্ডের সাথে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে একটি তালিকা প্রেরন করা হয়েছে। তবে পূনাঙ্গ কমিটি দ্বাদশ নির্বাচনের পরে কিংবা আগে হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন্দ্র সঠিক সময়তেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন। কেন্দ্র চাইলে পূনাঙ্গ কমিটি নির্বাচনের আগেও হতে পারে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে অচিরেই পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনার ব্যাপারে কেন্দ্রের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নিকট সুপারিশ করা হচ্ছে। তবে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আঃ হাইয়ের এমন বক্তব্য মানতে নারাজ দলের একাধিক সিনিয়র নেতা। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামীলীগের পদ প্রত্যাশী একাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ জানান, জেলা সভাপতির বক্তব্য শুধুমাত্র আইওয়াশ। তিনি যাই বলুক না কেন দ্বাদশ নির্বাচনের আগে জেলাই আওয়ামীলীগের পূনাঙ্গ কমিটি হচ্ছে না। আর পূনাঙ্গ কমিটি না হলে দলের সাংগঠনিক কার্য্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ার আশংকা করছেন তারা। তাই জেলা আওয়ামীলীগের মূল কমিটিতে পদ পদ প্রত্যাশী সিনিয়র নেতৃবৃন্দ মনে করেন, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য জেলা আওয়ামীলীগের মূল কমিটি গঠন করা অতীব জরুরী। উল্লেখ্য, সর্বশেষ ’৭৫এর পট পরিবর্তনের দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে। ১৯৯৭ সালের ২০ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওইসময় নাজমা রহমান সভাপতি ও শামীম ওসমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ দেড় যুগেও সম্মেলন হয়নি দলটিতে। ২০০২ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার সোহাগ কমিউনিটি সেন্টারে ৬৩ সদস্যবিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সাবেক এমপি এসএম আকরামকে আহবায়ক ও মফিজুল ইসলামকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়। ওই আহবায়ক কমিটির ৩ মাসের মধ্যে সম্মেলন করে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও প্রায় ১৪ বছরেও তা পূর্ণাঙ্গ হয়নি। ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে শামীম ওসমানকে আওয়ামীলীগ সমর্থন দিলেও বিদ্রোহী প্রার্থী আ’লীগ নেত্রী ডা: সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে কাজ করেন জেলা আওয়ামীগের আহবায়ক এস এম আকরাম। নির্বাচনে আইভী মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে গলায় ফুলের মালা পরিয়ে আওয়ামীলীগের আহবায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করে সাবেক এমপি এসএম আকরাম। তারপর আকরাম যোগ দেন নাগরিক ঐক্যে। পরবর্তীতে জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন যুগ্ম আহবায়ক মফিজুল ইসলাম। ২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মফিজুল ইসলাম চলে যান না ফেরার দেশে। এরপর থেকে জেলা আওয়ামী লীগ মূলত নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে প্রায় দেড়যুগ পর আবু হাসনাত শহীদ বাদলকে সভাপতি এবং আবু হাসনাত শহীদ বাদলকে সাধারন সম্পাদক করে জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করা হয়। এর দেড় বছর পর জেলা আওয়ামীলীগের পূনাঙ্গ কমিটি গঠন করেন কেন্দ্র। সর্বশেষ ২০২২ সালের ডিসেম্বর জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আবারো আঃ হাইকে সভাপতি এবং আবু হাসনাত শহীদ বাদলকে সাধারন সম্পাদক করে আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। এবং আবহওয়ার বৈরী প্রভাব বিস্তারের কারনে মহানগর আওয়ামীলীগের কাউন্সিল স্থগিত করা হয়।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা