আজ শুক্রবার | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৭ মাঘ ১৪৩১ | ৩০ রজব ১৪৪৬ | দুপুর ১২:০৫
শিরোনাম:
চারুকলা ইনস্টিটিউটের জায়গা দখল করে দোকান    ♦     বন্দরে অসুস্থ্য বিএনপি নেতা হাফেজ আহমেদের পাশে সাবেক এমপি এড. আবুল কালাম    ♦     হোসিয়ারী এসোসিয়েশন নির্বাচনে বদু প্যানেল’র পরিচিতি সভা    ♦     সরকারি কদম রসুল কলেজে তারুণ্য মেলা অনুষ্ঠিত    ♦     যানজট নিরসনে বাস স্ট্যান্ড সরাতে হবে    ♦     ব্যাটারীচালিত রিকশা ও ফুটপাত দখল যানজটের মূল কারণ    ♦     রাইফেল ক্লাব-বাইতুল আমান ও পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙতে হবে: রফিউর রাব্বি    ♦     বিএনপিতে মনোনয়ন বাগাতে নেতায় নেতায় কোন্দল চরমে    ♦     মহানগর বিএনপিতে ভোটের রাজনীতি    ♦     রূপগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের উপর হামলার প্রতিবাদে যুবদলের বিক্ষোভ    ♦    

দুই মেরুর রাজনীতিতে সুবিধাভোগিরা!

ডান্ডিবার্তা | ২৬ মার্চ, ২০২৩ | ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমান অসুস্থ হয়ে ঢাকার বেসরকারী একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সাংসদ শামীম ওসমানের রোগমুক্তি কামনায় তার একমাত্র ছেলে অয়ন ওসমান রোগমুক্তির জন্য দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ নারায়ণগঞ্জের মানুষের কাছে দোয়া চান। সাংসদ শামীম ওসমানের অসুস্থতার বিষয়টি দ্রুত দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে সাংসদ শামীম ওসমানের রোগমুক্তি কামনায় দলীয় নেতাকর্মীরা মসজিদ মন্দির এমনকি দলীয় কার্যালয়ে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করে। তবে, উল্টো অবস্থা বিরাজ করছে ক্ষমতাসীনদলের দক্ষিন মেরুর নেতাকর্মীদের মধ্যে। নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা ও দলের একজন সংসদ সদস্য অসুস্থ হলেও রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়ার আয়োজনতো দূরের কথা সামান্য খোঁজও নেয়নি বলে জানা গেছে। এমনকি ওসমান পরিবারের আস্থাভাজন ও ক্ষমতাসীন দলের সুবিধাভোগি হিসাবে পরিচিত একটি পরিবারকে শামীম ওসমানের জন্য বিশেষ দোয়ার আয়োজন না করায় দেওভোগ ও আশেপাশের এলাকার শামীম ওসমানের অনুসারিদের মধ্যে এনিয়ে তীব্র ক্সোভ দেখা দিয়েছে। সাধারণ নেতাকর্মীরা বলেন, দক্ষিন মেরুতে অবস্থান নেয়া আওয়ামীলীগের একটি পরিবারের ভ’মিকা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রীয়া দেখা দিয়েছে। গতকাল শনিবার সাংসদ শামীম ওসমান হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বলে জানা গেছে। ২০১১ সালে নাসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চরম আকার ধারণ করে। যা ২০২২ সালের নির্বাচনেও চলতে থাকে। তবে সেই নির্বাচনের পর বেশ কিছু দিন এই বিরোধ কিছুটা নিরব থাকলেও সম্প্রতি শামীম-আইভীর বিরোধ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে এই বিরোধ দিন দিন বেড়ে চলছে। মেয়র আইভী কোন বক্তব্য দিলে পরদিন শামীম ওসমান পাল্টা বক্তব্য দেন। একই ভাবে শামীম ওসমান কোন বক্তব্য দিলে পর দিন আইভী তার পাল্টা বক্তব্য ছুড়ে দেন। দুই পক্ষের মধ্যে দিন দিন কাঁদা ছুড়াছুড়ি বেড়ে চললেও দেওভোগের একটি পরিবার এনিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য করেন না। দক্ষিন মেরুতে অবস্থানরত ওসমান পরিবারের আস্থাভাজন একটি পরিবার নিয়ে গত দু’দিন দেওভোগে চলছে নানা ধরনের মন্তব্য। খোদ শামীম ওসমানের অনুসারি ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতাকর্মীরা মন্তব্য দেওভোগের সেই পরিবারটি ওসমান পরিবারের কাছ থেকে একমাত্র সুবিধাভোগ করলেও সভা সমাবেশ কিংবা এই এলাকায় শামীম ওসমানের পক্ষে তাদের তেমনটা দেখা যায় না। যেমনটি শামীম ওসমান অসুস্থ্য হয়ে হাসপতালে ভর্তি হলে বিভিন্ন এলাকায় তার জন্য দোয়া হলেও কিন্তু দেওভোগের সেই পরিবারটি শামীম ওসমানের সুস্থ্যতার জন্য কোন প্রকার দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেনি। এনিয়ে সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে দিন দিন ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। যদিও ওসমান পরিবারের পক্ষ থেকে এই পরিবারটি নিয়ে তেমন কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু সাধারণ নেতাকর্মীরা এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এদিকে নারায়ণগঞ্জে ওসমানী সাম্রাজ্য নিয়ে বিভিন্ন সময় বক্তব্য রাখছেন মেয়র আইভী। অন্যদিকে শামীম ওসমানও মেয়রের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। শুধু তাই নয় গত সোমবার রাইফলে ক্লাবে ও তোলারাম কলেজে এক অনুষ্ঠানেও আইভীর বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গত ১৫ মার্চ ফতুল্লার বক্তাবলী এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইভীকে উদ্দ্যেশ্য করে বলেন, নারায়ণগঞ্জে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচিত এক জনপ্রতিনিধির কাছে পরিচ্ছন্ন কমীর্রা তাদের কষ্টের কথা বলেন। গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে মেয়র আইভী বলেন, শেষ পর্যন্ত আর কিছু না পেয়ে আমার সুইপারদের নিয়ে রাজনীতি করছে। আমি নোংড়া রাজনীতি করতে না পারলওে সাহসিকতার সাথে নোংড়ামীর জবাব দিতে পারবো। একই দিনে এক অনুষ্ঠানে সরকারের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ত্বকী হত্যাসহ সকল হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। আমরা এই সাম্রাজ্যবাদের হাত থেকে মুক্তি চাই। আইভী আরও বলেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় হোন্ডা বাহিনীকে ধাওয়া দেয়া শুরু হয়েছে। পর পর তিনটা ঘটনা ঘটেছে নদীর ওই পাড়ে। সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সেই ভূমিদস্যুদের হোন্ডা পুড়িয়ে দিয়েছে। অনেকে আবার বড় বড় কথা বলে। কি বলে, শহরে নাকি এখনো বের হতে দেবেনা। কত বড় দুঃসাহস হলে খুনিরা খুন করেছে একটি বাচ্চাকে মেরে ফেলেছে তারপরে ওই বাচ্চার পিতা যখন প্রতিবাদ করে তাকে আবার নানাভাবে উত্যক্ত করে। আমরা যারা তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তাদের পরিবারকে অত্যাচার করে, তাদেরকেও তারা হুমকি ধামকি দেয়। তিনি আরো বলেন, আপনার চ্যালা চামচাদের বলে দেবেন, যখন যা কিছু মন চায় তখন যেন তা না বলে, কারণ মানুষেরও ধৈর্য্য আছে। ষড়যন্ত্রের মধ্যে দিয়েই চারটা নির্বাচন করেছি। তারপরওে এই শহরে মানুষ ভোট দিয়েছে। একটা বিজয় মিছিলও করিনি। কোন ধরনের অর্পকম এই শহরে হয়নি এর মানে এই নয় যে আপনাদের কিছু করতে বা বলতে পারবো না। অন্যদিকে গোদনাইল এলাকায় বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্ম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে এখন যারা অনেক বড় বড় কথা বলেন তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় আগরতলা থেকে পালিয়ে এসেছিলেন লুট করে অনেকে সম্পদ কামিয়ে ছিলেন, চোররে মার বড় গলা। এরা অনেক বড় বড় কথা বলে, আমি তাদের উত্তর দেই না। আমাদের বাড়ি, হিরা মহল নিলামে বিক্রি করা হয়েছিল। নিলাম কি তখন বুঝতামও না। কত বড় বড় লোক, কত কোটিপতি নারায়ণগঞ্জে, কত লুটেরা, কত বঙ্গবন্ধুর নাম বেঁচে পয়সা কামানো মানুষ, কথায় কথায় যারা রূপ বদলায়। কখনো কাক, কখনো কোকিল। সেই সমস্ত মানুষ যারা আসছিলে তখন, তারা কেউ এগিয়ে আসেন নাই। অনেকে অনেকে কথা বলে। কি কি জানি গালাগালি করে আমাদের। আমি আবার এগুলি শুনি না, কারণ আমার মায়া লাগে ওদের জন্য। সবকিছু মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের দুই বলয়ের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের রাজনীতি এখন খুবই উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন পক্ষ থেকেই বারবার চেষ্টা করা হয়েছে। নাসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও চেষ্টা করেছেন। এমনকি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও কয়কেবার তাদেরকে ডেকেছেন বলে জানা যায়। কিন্তু যেই লাউ সেই কদুই রয়ে গেছে বিষয়টি কোন মাত্রায় পৌছানোর পর শহরবাসীর তথা নারায়ণগঞ্জবাসীর এই দুই বলয়ের সমঝোতার আশ্বাস পূরণ হবে তা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে। সে পর্যন্ত অপক্ষো করতে হবে সবাইকে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটির জন্য নিজেদের মধ্য ঐক্য আছে বলে প্রমান করতে চাইলেও ভেতরে ভেতরে বিভেদ রয়েছে সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার।এদের মধ্যে একজন সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের কট্টর অনুসারি ও আরেকজন সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভির পক্ষে সবসময় বক্তব্য রাখেন। দুজন দুজনের বলয়ের বাইরে কোন কর্মকান্ড করেন না। এর মধ্যে আনোয়ার হোসেন বিভিন্ন কর্মসূচীতে আইভির পক্ষে কথা বলেন আর খোকন সাহা প্রকাশ্যে আইভি বিরোধী বক্তব্য দেন ও শামীম ওসমানের পক্ষ নেন। দলীয় সুত্রমতে, এর মধ্যে দলের যেখানে সামনে নির্বাচনকে ঘিরে ঐক্য প্রয়োজন সেখানে এখনো বিরোধ রয়েছে নেতৃত্বে থাকা আনোয়ার ও খোকন সাহার মধ্যে। দুজন দুই মেরুর হলেও মহানগরের দায়িত্বে আছেন দুজন। এর মধ্যে সামনে কমিটিকে ঘিরে তাদের বিভেদ প্রকাশ্যে না আনলেও ভেতরে ভেতরে তাদের মধ্যে বিভেদ কাজ করছে। এ বিভেদ মেটাতে দ্রুত কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন দলের নেতাকর্মীরা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা