প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন হলো রহমত; তার দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাত; এর শেষ ১০ দিন হলো নাজাত। সাধারণভাবে বলা হয়ে থাকে, প্রথম ১০ দিন আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি রহমত বা দয়া বণ্টন ও বিতরণ করতে থাকবেন। দ্বিতীয় ১০ দিন আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করতে থাকবেন। শেষ ১০ দিন আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জাহান্নাম থেকে নাজাত বা মুক্তি দিতে থাকবেন। এখানে অনুধাবনের বিষয় হলো; আল্লাহ যদি রহমত বা করুণা করতে চান, ক্ষমা করতে চান, মুক্তি দিতে চান; তা তো এক মুহূর্তেই করতে পারেন, তা যতসংখ্যক মানুষের জন্যই হোক না কেন এবং যে পরিমাণেই হোক না কেন; এতে ১০ দিন–১০ দিন সময় লাগবে কেন?আসলে রমজান হলো প্রশিক্ষণের মাস। আল্লাহ চান তাঁর বান্দা তাঁর গুণাবলি অর্জন করে সেই গুণে গুণান্বিত হোক। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হও।’আল্লাহর রং বা গুণ কী? তা হলো আল্লাহ তাআলার ৯৯টি গুণবাচক নাম। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার নিরানব্বইটি নাম রয়েছে, যারা এগুলো আত্মস্থ করবে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (মুসলিম ও তিরমিজি)মহান আল্লাহর নামাবলি আত্মস্থ করার বা ধারণ করার ও গ্রহণ করার অর্থ হলো সেগুলোর ভাব ও গুণ অর্জন করে তার প্রতিফলন ঘটানো তথা সেসব গুণ ও বৈশিষ্ট্য নিজের কাজ-কর্মে, আচার-আচরণে প্রকাশ করা, অর্থাৎ নিজেকে সেসব গুণের আধারে পরিণত করা বা সেসব গুণের অধিকারী হিসেবে গড়ে তোলা।রমজান মাসের প্রথম ১০ িদন যেহেতু রহমতের বা দয়ার, সুতরাং এই ১০ দিন আমাদের করণীয় হলো আল্লাহ পাকের দয়া-মায়াসংক্রান্ত নামসমূহ হৃদয়ঙ্গম করে এর ভাব ও প্রভাব এবং বৈশিষ্ট্য অর্জন ও অধিকার করে আত্মস্থ করার চেষ্টা করা এবং আজীবন তার ধারক ও বাহক হয়ে তা দান করা বা বিতরণ করা, তথা আল্লাহর গুণাবলি নিজের মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির কাছে পৌঁছে দেওয়া।
আল্লাহ তাআলার দয়া, করুণা ও রহমতসুলভ নামগুলো হলো: আর রাহমানু (অসীম দয়ালু), আর রাহিমু (পরম করুণাময়), আল ওয়াদুদু (প্রেমময়), আর রউফু (স্নেহশীল), আল আজিজু (মমতাময়), আল কারিমু (অনুগ্রহকারী), আস সালামু (শান্তিদাতা), আল মুমিনু (নিরাপত্তাদাতা), আল মুহাইমিনু (রক্ষাকর্তা), আল বাসিতু (করুণা বিস্তারকারী), আল মুইজজু (সম্মানদাতা), আল লাতিফু (করুণাকারী), আল মুজিবু (প্রার্থনা কবুলকারী), আর রাজ্জাকু (রিজিক দানকারী), আল ওয়াসিউ (দয়া প্রসারকারী), আল ওয়ালিয়্যু (পরম বন্ধু), আন নাফিউ (কল্যাণকারী), আল হাদিউ (পথের দিশারি), আন নাসিরু (সাহায্যকারী), আল হান্নানু (করুণাশীল), আল মান্নানু (দয়ার্দ্র) ইত্যাদি। অতএব, রমজানের প্রথম ১০ দিনে তথা রহমতের ১০ দিনে আমাদের করণীয় হবে ওই সব গুণ অর্জন করা এবং আচরণে ও ব্যবহারে এর সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটানো। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তুমি জগদ্বাসীর প্রতি দয়া করো, তবে আল্লাহ তাআলা তোমার প্রতি দয়া করবেন।’ (বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজি)
রমজান মাসের মাঝের ১০ দিন যেহেতু মাগফিরাত বা ক্ষমার, সুতরাং এই ১০ দিন আমাদের করণীয় হবে আল্লাহ পাকের ক্ষমাসংক্রান্ত নামগুলো হৃদয়ঙ্গম করে এর ভাব-প্রভাব ও বৈশিষ্ট্য অর্জন ও অধিকার করে নিজের মধ্যে আত্মস্থ করার চেষ্টা করা এবং আজীবন তার ধারক-বাহক হয়ে তা দান করা বা বিতরণ করা তথা আল্লাহর গুণাবলি নিজের মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির কাছে পৌঁছে দেওয়া। আল্লাহ তাআলার ক্ষমাসুলভ নামগুলো হলো আল গফিরু (ক্ষমাশীল), আল গফুরু (ক্ষমাময়), আল গফফারু (সর্বাধিক ক্ষমাকারী), আল আফুউ (মার্জনাকারী), আল খফিদু (বিনয় পছন্দকারী), আশ শাকুরু (কৃতজ্ঞ), আল বাররু (সদাচারী), আল হালিমু (সহিষ্ণু), আস সবুরু (ধৈর্যশীল), আত তাউওয়াবু (তওবা কবুলকারী) ইত্যাদি।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘অপরাধ স্বীকারকারী নিরপরাধ ব্যক্তির মতো।’ (বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজি)। আপনি ক্ষমা লাভ করেছেন বা ক্ষমার অধিকারী হয়েছেন, তা বোঝা যাবে আপনার আচরণে যদি ক্ষমা প্রকাশিত হয়; নয়তো নয়।অতএব, রমজানের দ্বিতীয় ১০ দিন— মাগফিরাতের ১০ দিন করণীয় হলো সর্বোচ্চ ক্ষমা প্রদর্শন করা। মহানবী (সা.) আরও বলেছেন, ‘সকল মানুষ ভুলকারী; আর ভুলকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো যারা তওবাকারী।’ (বায়হাকি)। তিনি আরও বলেন, ‘তুমি ক্ষমা করো; তোমাকেও ক্ষমা করা হবে।’ (তিরমিজি)
রমজান মাসের শেষ ১০ দিন নাজাত বা মুক্তির, সুতরাং এই সময়ে আমাদের করণীয় হলো দুনিয়ার সবকিছুর আকর্ষণ ও মোহ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর প্রেমে বিভোর হওয়া। গাড়ি, বাড়ি, নারী এবং সম্পদ, সন্তান, সম্মান এগুলোর মোহমায়া থেকে আপন মন ও মানসকে সম্পূর্ণ মুক্ত করা এবং সেসবের আকর্ষণ থেকে পরিপূর্ণরূপে মোহমুক্ত থাকা। সর্বোপরি আল্লাহ পাকের স্বয়ম্ভরতা, স্বনির্ভরতা, মুক্ততা ও নিরপেক্ষতাসংক্রান্ত নামসমূহ হৃদয়ঙ্গম করে এর প্রভাব লাভ করে এবং বৈশিষ্ট্য অর্জন ও অধিকার করে আত্মস্থ করার চেষ্টা করা এবং আজীবন তার ধারক-বাহক হয়ে তা দান করা বা বিতরণ করা, তথা আল্লাহর গুণাবলি নিজের মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টিরাজির কাছে পৌঁছে দেওয়া।
আল্লাহ তাআলার স্বনির্ভরতা ও মুক্ততাসুলভ নামগুলো হলো: আল আহাদু (একক), আল ওয়াহিদু (এক), আস সামাদু (স্বনির্ভর, অমুখাপেক্ষী), আল আদলু (ন্যায়ানুগ), আল হাক্কু (সত্য), আল কাবিউ (সুদৃঢ়), আল মাতিনু (শক্তিমান), আল কদিরু (ক্ষমতাবান), আন নুরু (জ্যোতির অধিকারী, আলোক দানকারী), আর রশিদু (দিব্যজ্ঞানী), আল জামিলু (সুন্দর), আল বাররু (সৎকর্মশীল), আল মুহসিনু (সুকর্তা) ইত্যাদি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দুনিয়ার আকর্ষণ সকল পাপের মূল।’ (বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজি)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি, সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম।
এই কাল এই সময় হাবিবুর রহমান বাদল অন্তর্বর্তিকালিন সরকারের দুইমাস পাঁচদিন শেষ হলেও যে প্রত্যাশা নিয়ে জুলাই বিপ্লবে প্রায় দুহাজার ছাত্রজনতা প্রাণ দিয়েছিল। সেই বিপ্লবকে সফল করতে স্বৈরাচারের গ্যাস সেল আর বুলেটের আঘাতে কেউ অন্ধ, কেউ পঙ্গু আবার কেউ যন্ত্রনায় কাৎরাচ্ছে তাদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। ত্রিশ হাজারের বেশি আহতরা এখন স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখতে চাইছে। […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: বিকেএমইএ‘র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, ব্যাংক ইন্টারেস্টের কারণে আমাদের ক্যাপাসিটির বাইরে অনেক কিছু চলে যাচ্ছে। আগে ছিল, পর পর ছয়টা কিস্তিতে কেউ ব্যর্থ হলে সে ঋণখেলাপি হবে। বাংলাদেশ থেকে একটি সার্কুলার দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে ৩টা কিস্তিতে ব্যর্থ হলে ঋণখেলাপি হবে। আগামী মার্চ থেকে একটা কিস্তি ব্যর্থ হলেই ঋণখেলাপি হবে। বর্তমান […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯