না’গঞ্জ বিএনপিতে বিশৃঙ্খলা

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ বিএনপি দল পুনর্গঠন নিয়ে বিভক্তি বাড়ছে বিএনপির তৃণমূলে। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে তৃণমূল নেতাদের মত না নেয়া, নেতৃত্ব ও আধিপত্যের কোন্দল, সুযোগ সন্ধানীদের তৎপরতাসহ নানামুখী বিরোধে জড়িয়ে পড়ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। রাগ-ক্ষোভ ও অভিমানে দলের কার্যক্রম থেকে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন অনেকেই। কেউ কেউ দলও ছেড়েছেন। কমিটি গঠনে কেন্দ্রের একচেটিয়া সিদ্ধান্তের কারণে দলের ভেতরে সমস্যা আরো তীব্র হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর মহিলা দল এবং মহানগর যুব দলের কমিটি নিয়ে বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত। গত বছর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকেই মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে থাকা আবুল কালাম এবং বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের মাঝে দ্বন্ধের প্রকাশ্যে চলে আসে। দলীয় কর্মসনূচী দলের নেতৃবৃন্দ আলাদা আলাদা ভাবে পালন করার ফলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তৃনমূল নেতৃবৃন্দকে। সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের শেষের দিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা গিয়েছিল। সাধারণ নেতাকর্মীরা বলছেন, দলের দু:সময়ে কমিটি বাণিজ্যের কারণে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। জেলা বিএনপির আওতাধীন বিভিন্ন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যের অভিযোগ উঠে আসছে। যার ফলে ত্যাগী নেতাদের কঠোরতায় শেষ পর্যন্ত থানা পর্যায়ের কমিটিগুলো দেয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলায় গঠিত আহবায়ক কমিটির নেতারা থানা, পৌর ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের মধ্যদিয়ে ত্যাগী ও যোগ্যদের দূরে সরিয়ে নিজেদের কোটারি সৃষ্টি করছেন। ফলে এরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছেন। কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা কর্মসূচি ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পালন করা হয়। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, যাদের নামে মামলা, যারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তাদের সমর্থন না দিয়ে টাকাওয়ালাদের গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যার ফলে দলের দুঃসময়ে যারা পাশে ছিলেন, তারা ক্ষোভে ফুঁসছেন। এ ক্ষোভ থেকেই বাড়ছে অভ্যন্তরীণ সংঘাত। দলে প্রভাবশালীদের রোষাণল থেকে বাঁচতে কেউ কেউ সরকারি দলের নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলছেন। কেউ বা কেন্দ্রে গোপনে অভিযোগ দিয়ে পরিত্রাণ পাওয়ার চেষ্টা করছেন। মূলত বিএনপির নেতাকর্মীরা রয়েছেন চরম বিভ্রান্তিতে। নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জের ধরে অনেকেই রাজনীতি ছেড়ে ব্যবসায় মন দিয়েছেন। জেলা বিএনপির এক নেতা জানান, কোনো দল যখন চতুর্মুখী চাপে থাকে, তখন নেতাকর্মীরা হতাশায় ভুগবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিএনপির কেন্দ্র থেকে সঠিক দিক-নির্দেশনা না পাওয়ার কারণে এখানে সবাই নিজেকে নেতা মনে করেন। কোনো শৃঙ্খলা নেই। মাঠের রাজনীতি নেই। কেউ কাউকে মানে না। নির্বাচনের সময় থেকে পরবর্তী সময়ের প্রতিটি ঘটনার বিষয়ে বিএনপির হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তহীনতা মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের হতাশ ও ব্যথিত করেছে। নেতৃত্বের বিভক্তি ও দলীয় কোন্দলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না রাজনীতির মাঠে। বিশেষ করে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল নামমাত্র সংগঠনে পরিণত হয়েছে। কমিটি গঠন হলেও কোনো সাংগঠনিক চর্চা না থাকায় সাবেক কমিটির সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকারের সমর্থক নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের দূরত্ব বাড়তে থাকে। গত দুই দিনের ব্যবধানে মহিলা দল ও মহানগর যুবদলের কমিটি দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু কমিটি ঘোষনার পর আরো বিশৃঙ্খলা সৃষ্ঠি হয়েছে। বিশেষ করে মহানগর যুবদলের পদ বঞ্চিতরা ক্ষিপ্ত হয়েছেন। তবে নতুন কমিটির নেতারা বলছেন, দলের ত্যাগী নেতাদের সমন্বয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হবে।