আজ শনিবার | ২ নভেম্বর ২০২৪ | ১৭ কার্তিক ১৪৩১ | ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৬ | সন্ধ্যা ৭:৩৪

পদ বাগাতে কেন্দ্রে দৌড়-ঝাপ

ডান্ডিবার্তা | ১৫ মে, ২০২৩ | ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দীর্ঘ ৭ মাসেও হয়নি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। যদিও নির্দেশনা ছিল এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার। বরং কমিটি নিয়ে দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তারা দু’জনেই পৃথক পৃথক ভাবে ৭৫ সদস্যের প্রস্তাবিত পূনাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন। এ নিয়ে নানা আলোচনা তৃণমূলে। যদিও শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মতপ্রার্থক্যের কারণে পূর্বের কমিটি ৬টি পদ শূণ্য রেখেই তাদের দায়িত্বকাল পার করেছে। এবারও শুরুতেই টানাপড়ন চলছে সম্মেলনে ঘোষিত সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো: বাদলের মধ্যে। নির্দেশনা ছিল তারা সবার সঙ্গে আলোচনা করে জেলা আওয়ামলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দিবে। তারপর কেন্দ্র যাচাই-বাছাই করে সেই কমিটি অনুমোদন দিবেন। কিন্তু ৭ মাসেও আলোর মূখ দেখেনি জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে। তাদের মতে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দলকে শক্তিশালী করার জন্য আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা দিয়েছেন। অথচ নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ নেতারা নিজের পছন্দের লোককে কমিটিতে অন্তুর্ভক্ত করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে দুরুত্বের সৃষ্টি করছেন। আর এর প্রভাব পড়ছে তৃণমূলে। এভাবে চলতে থাকলে এবং অচিরেই জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হলে আগামী নির্বাচনে দলেল সাংগঠনিক অবস্থা নড়বড়ে হয়ে যাবে। দলীয় সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল পৃথক পৃথক ভাবে ৭৫ সদস্যের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি করে তা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দিয়েছেন। এদিকে পৃথক পৃথকভাবে দুটি কমিটি জমা হওয়ায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে। আবার প্রস্তাবিত কমিটিতে যে সকল নেতাদের নাম বাদ পড়েছে বা পড়ার আশংকা রয়েছে তারা দৌড়-ঝাপ করছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতা বিশেষ করে ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপির কাছে। এরমধ্যে তার সঙ্গে দেখা করেছেন বিগত কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, আওয়ামীগ নেতা আনিসুর রহমান দীপু, জাহাঙ্গীর আলম, জিএম আরাফাত। অপরদিকে জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পেতে স্থানীয় নেতারা দৌড়-ঝাঁপ করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদলের কাছে। এছাড়াও অনেকে নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, সাংসদ শামীম ওসমান, গাজী গোলাম দস্তগীল গাজী, নজরুল ইসলাম বাবুর কাছেও ধর্ণা দিয়েছে। আবার কেউ কেউ সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নেতাদের কাছেও লবিং চালাচ্ছেন। তবে দৌড়-ঝাঁপ যারাই করুক বিতর্কিতদের যেন কমিটিতে ঠাই দেয়া না হয়, এমন দাবি তৃণমূল নেতাকর্মীদের। তারা আশা করছেন, বর্তমান আওয়ামী রাজনীতিতে যেমন হাইব্রিড নেতাদের জয়জয়কার, তেমনি এদের বিরুদ্ধে একাট্টা আওয়ামী লীগ। জানাগেছে, দীর্ঘ ২৫ বছর পর গত বছরের ২৩ অক্টোবর ইসদাইর পৌর ওসমান স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ-এর জমজমাট ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপিসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। সেদিন সম্মেলনে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি আগামী তিন বছরের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে সভাপতি ও এড. আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদলকে দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আগামী একমাসের মধ্যে তাঁদের পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটির খসড়া তালিকা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু নিজেদের মধ্যে মতপ্রার্থক্য ও নানাবিধ সমস্যার কারণে ৭ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। এদিকে শামীম ওসমান, মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, গাজী গোলাম দস্তগীর গাজী, নজরুল ইসলাম বাবু, আব্দুল ও আবু হাসনাত বাদলের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে যার যার পছন্দের লোককে কমিটিতে অর্šÍভক্ত করার। যেমন গত কমিটিতে মেয়র আইভী তার ইচ্ছেমত কমিটিতে তার লোকজনকে স্থান দিয়েছেন। এমন লোককেও তিনি জেলা আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে ঢুকিয়েছেন যে কিনা পূর্বে আওয়ামীলীগ বা সহযোগি কোন সংগঠনের ছিলেন না। এছাড়া আগের কমিটির সভাপতি আব্দুল হাই, সিনিয়র সহসভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভী, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত বাদল, কার্যকরী সদস্য মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর মধ্যে মত বিরোধের কারণে ৬টি পদ শূন্য থেকে যায়। এবারও নতুন করে বিরোধ দৃশমান হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কেমন কমিটি হবে, কারা কমিটিতে স্থান পাচ্ছে এ নিয়ে কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে আছে সাধারণ নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই বলেন, গত মার্চ মাসেই আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে জমা দিয়েছি। কেন্দ্র কবে তা অনুমোদন দিবেন তা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত। তবে আমি আশা করছি খুব শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি অনুমোদন আসছে। এ বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামীলীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো: বাদল জানান, ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবিত একটি কমিটি কেন্দ্রে জমা দিয়েছি। কিন্তু আব্দুল হাইও তো বললো তিনিও একটা কমিটি জমা দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। দলীয় সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ১৯৯৭ সালের ২০ ডিসেম্বর। অধ্যাপিকা নাজমা রহমান সভাপতি ও এমপি শামীম ওসমান সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এরপর ২০০২ সালের ২৭ মার্চ সদর-বন্দর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আকরামকে আহ্বায়ক করে কেন্দ্র থেকে ৬১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি করে দেওয়া হয়। ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবরের সিটি নির্বাচনের পর আহ্বায়ক এস এম আকরাম আহবায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ভারপ্রাাপ্ত আহ্বায়ক করা হয় যুগ্ম-আহ্বায়ক মফিজুল ইসলামকে। ২০১৪ সালের ১১ ফেরুয়ারিতে মফিজুল ইসলাম মারা যান। এরপর ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের তাৎকালীন প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে সভাপতি এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সিনিয়র সহ- সভাপতি ও এড. আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। এর ১৩ মাস পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ৭৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্র।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৪৬
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:২৩
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৫১
  • ১১:৪৫
  • ১৫:৪৩
  • ১৭:২৩
  • ১৮:৩৮
  • ৬:০৪
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা