আজ বৃহস্পতিবার | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১ | ২৭ শাবান ১৪৪৬ | রাত ১১:১৬

রাজপথে উত্তাল বিএনপি-আ’লীগ!

ডান্ডিবার্তা | ২৩ জুলাই, ২০২৩ | ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট মাত্র কয়েকমাস বাকি জাতীয় নির্বাচনের। নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেও তৎপরতা নেই জেলার রাজনীতিতে। নির্বাচন কেন্দ্রীক মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে টুকিটাকি আন্দোলন করতে দেখা গেলেও আওয়ামীলীগ রয়েছে একেবারেই নীরব অবস্থানে। এদিকে স্বস্তিতে নেই তৃণমূল পর্যায়ের রাজনীতিও। বিশেষ করে জেলার প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে বিরাজ করছে অস্বাভাবিক অবস্থা। শিখর থেকে শেকড়ে সব স্তরেই রাজনীতি হয়ে পড়েছে অনেকটা ছন্দহারা। উপজেলা পর্যায়ে বিরোধী দল বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঠেই দেখা যাচ্ছে না। ভয়ে অনেকেই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। আবার অনেকে রয়েছেন কারাবন্দি। যাদের প্রকাশ্যে দেখা যায়, তারাও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে এগিয়ে চলেছেন। জেলার একাধিক স্থানে দলের নেতৃবৃন্দ বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করে নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে দল পুনর্গঠন ও নেতাকর্মীদের আন্দোলন সংগ্রামে নামতে বারবার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তারপরও কাটছে না বিএনপির শনির দশা। এদিকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করলেও রয়েছে দলীয় কোন্দল। আধিপত্য ও ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে নিজেরাই জড়িয়ে পড়েছে দ্বন্ধ-সংঘাতে। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে ঘটছে সংঘর্ষের ঘটনা। তবে, অনেক ক্ষেত্রে সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটলেও মণমালিন্য সৃষ্টির মাধ্যমে বৃদ্ধি পাচ্ছে দলীয় কোন্দল। দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার পরও জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে আছে। একে অপরের মুখ দেখাদেখিও বন্ধ। দেখা দিয়েছে রাজনীতিতে চরম বিশৃংঙ্খলা। আওয়ামী লীগ রয়েছে দুই ভাগে বিভক্ত। অন্যদিকে আঁতাত করে চলছে বিএনপির রাজনীতি। ক্ষমতাসীন দলে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ব্যাঙের ছাতার মতো নব্য নেতাকর্মীরা ব্যস্ত হালুয়া-রুটির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে। আর এ হালুয়া-রুটি নিজেদের আয়ত্তে নিতে চলছে নিজেদের মধ্যে হানাহানি ও দ্বন্ধ। এ দ্বন্ধ দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হানাহানির মূলে রয়েছে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ ও দখলবাজি প্রতিষ্ঠা। আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানান, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। দলে সুবিধাভোগী নেতারা আঁকড়ে আছে। জেলার রাজনীতি মূলত বিরাজ করে দুই মেরুর নিয়ন্ত্রনে। উত্তর মেরু আর দক্ষিন মেরুর নেতৃবৃন্দই জেলা আওয়ামীলীগের নিয়ন্ত্রক বলে দলের নেতৃবৃন্দ মনে করেন। বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে নারায়ণগঞ্জে উত্তর আর দক্ষিন মেরুর রাজনীতির বিবাদ দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসছে। এখনো বিদ্যমান রয়েছে তাদের দ্বন্ধ। দলের নীতিনির্ধারকের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র নেতৃবৃন্দের এমন দ্বন্ধের প্রভাব আঁচড়ে পড়ছে তৃণমূল রাজনীতিতে। সব মিলিয়ে শহরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি হ-য-ব-র-ল অবস্থার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। দ্বাদশ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে চলমান এ দ্বন্ধ নিরসন করা সম্ভব না হলে দলের প্রার্থীর ভরাডুবির শংকা তৃনমূল আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি রাজনৈতিক বোদ্ধারাও এমন ধারনা করছেন। আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানান, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। দলে সুবিধাভোগী নেতারা আঁকড়ে আছে। এমপি গাজী গোলাম দস্তগীর (বীরপ্রতীক) বলেন, আমার সঙ্গে শাজাহান ভূইয়ার কোনো দ্বন্ধ নেই। আমরা মিলেমিশেই কাজ করছি। ২৩ বছর কাউন্সিল না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, মাত্র জেলা কমিটি হয়েছে। উপজেলা কমিটিও দ্রুত করা হবে। এছাড়া কোনো অঙ্গ সংগঠন কোনো প্রকার দখল, চাঁদাবাজি কিংবা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেন এমপি। এদিকে রূপগঞ্জ বিএনপির অবস্থা রাজনীতির মাঠে নেই বললেই চলে। বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চলছে। আরেকটি পক্ষ মামলা-হামলার ভয়ে এলাকা ছেড়ে আছে। রূপগঞ্জ বিএনপি মূলত তিনটি পক্ষ নিয়ন্ত্রণ করছে। ছোট পরিসরের একটি পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়া অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। বড় একটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনির। অপরদিকে তরুণ প্রজন্মের বড় একটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-কোষাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু। তবে মাঠের রাজনীতিতে কাজী মনির ও দিপু ভূইয়া এবং তার অনুসারী সমর্থকরা রয়েছে বলে জানা গেছে। মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলেন, বিএনপির কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। যারা কমিটিতে বড় বড় পদ আঁকড়ে আছেন, তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চলছেন। দল ক্ষমতায় এলে দেখা যাবে এরাই আবার চাঁদাবাজি, দখলবাজি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাবে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বর্তমানে রূপগঞ্জে কার্যক্রম চালানোর মতো কোনো সুযোগই আমরা পাচ্ছি না। যেখানেই কর্মসূচি, সেখানেই পুলিশ আর ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা হামলা করছে। ব্যক্তিগতভাগে আমার নামেই রয়েছে ১৯টি মামলা। যারা এখনও মামলাগুলোয় জামিন নিতে পারেনি, তারাই আত্মগোপনে আছে। আর আঁতাতকারীরা সবসময় সব দলের দালালি করে বেড়ায়। তারা রাজনীতিবিদ না, তারা রাজনীতি ব্যবসায়ী।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা