আজ শনিবার | ১ মার্চ ২০২৫ | ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১ | ২৯ শাবান ১৪৪৬ | দুপুর ১২:০৮

উত্তপ্ত না’গঞ্জের রাজনীতি!

ডান্ডিবার্তা | ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ বিএনপি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য রাজপথে থেকে এক দফা দাবী আদায়ের জন্য মাঠে আন্দোলন করে যাচ্ছে বিএনপি। তাদের বিপরীতে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে পিছিয়ে নেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন। পাল্টা পাল্টি কর্মসূচি নিয়ে কেউ মাঠ ছাড়ছে না। দুই দিন ৫ দিন পর পরই কর্মসূচি থাকে এই দুই দলের। বিশেষ করে বর্তমানে জেলা মহানগরে দলীয় কর্মসূচির চেয়ে ঢাকায় কর্মসূচি বেশি হচ্ছে। এদিকে ঢাকামুখী কর্মসূচি গুলো বাস্তবায়নের জন্য ঢাকার পাশের জেলার নেতৃবৃন্দ মিছিল নিয়ে ঢাকামুখী হচ্ছে। বর্তমানে ঈদের জট কাটিয়ে এই জুলাই মাস জুরে আন্দোলন আর রাজপথ দখল নিয়ে লড়াই। বিএনপি আওয়ামী লীগ কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না। এই দুই দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ঢাকাবাসি পর্যন্ত অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ ঢাকার লাগোব জেলা হওয়ায় ঢাকার সমাবেশকে সাফল্য মন্ডিত করার জন্য বিশাল মিছিল গুলো নারায়ণগঞ্জ থেকে যায়। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আবার বিরোধী দল বিএনপির ক্ষেত্রেও একই পরিবেশ দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১২ জুলাই বিএনপির পল্টনের নিজস্ব কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চেয়ে এক দফা দাবী জানিয়েছে বিএনপি। অপর দিকে একই দিনে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে তারাও এক দফা দাবী জানা। আর তা হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। আর এটাই তাদের এক দফা। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকায় রাজনীতি পরিস্থিতি এখন টান টান উত্তেজনা রয়েছে। আজ বিএনপি কর্মসূচি দিলে কাল আওয়ামী লীগ কর্মসূচি দিচ্ছে। আর এই নিয়ে দুই দলের নেতা কর্মীরা মাঠে রাজনীতিতে চাঙ্গা রয়েছেন। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির প্রধান সহযোগী সংগঠন ছাত্র দল যুবদলের যৌথ উদ্যোগে তারুণ্যে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশকে বাস্তবায়ন করার জন্য নারায়ণগঞ্জ ছাত্র দল যুবদল টানা কয়েক দিন লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে প্রচারনা চালান। একই সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর যুবদল ছাত্র দলের নেতৃবৃন্দ মিছিল নিয়ে তারুণ্যে সমাবেশে যোগদান করেন। বর্তমানে ঢাকায় বেশি কর্মসূচি হওয়ায় স্থানীয় নেতা কর্মীরা এখন ঢাকামুখী বেশি হচ্ছেন। তাদের আন্দোলন যেন এখন ঢাকামুখী। তাই নারায়ণগঞ্জ জেলা ঢাকার লাগোয়া হওয়ায় এখানকার নেতৃবৃন্দও আন্দোলন সংগ্রামে তাদের অববস্থান তুলে ধরছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিকট। বিশেষ করে বিএনপির তারুণ্যের শোভাযাত্রায় নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম ফারুক খোকন এবং সদস্য সচিব রনির নেতৃত্বে বিশাল মিছিল নিয়ে ঢাকায় যোগদান করেন। প্রতিটি কর্মসূচিতে তারা তাক লাগানো শোডাউন নিয়ে ঢাকার কর্মসূচিতে যোগদান করে থাকেন। অপরদিকে বিএনপির সাথে পাল্লা দিয়ে একই দিকে ভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠন শান্তি সমাবেশ করে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দাবী বিএনপি কোন ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে তাদের প্রতিহত করার জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ঢাকার লাগোব জেলা হওয়ায় প্রতিবারে ন্যায় এখান থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল এবং শোডাউন করে যোগদান করেন। কেন্দ্রীয় যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের যৌথ উদ্যোগে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই শান্তি সমাবেশকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল নিয়ে যোগদান করেন। যা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নজর কারেন নারায়ণগঞ্জের ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা। এছাড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আরেক সভাপতি প্রার্থী জামির হোসেন রনির নেতৃত্বে আলাদা মিছিল নিয়ে ঢাকার শান্তি সমাবেশে যোগদান করেন। তবে নারায়ণগঞ্জের যুবলীগের কাউকে তেমন কোন তাক লাগানো শোডাউন করতে দেখা যায় নাই। এছাড়া সোনারগাঁ স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারাও যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের যৌথ শান্তি সমাবেশে মিছিল নিয়ে শোডাউন করেন। দলীয় সূত্রমতে, বিএনপিকে সরকারবিরোধী আন্দোলন বা রাজনীতির মাঠ দখলের সুযোগ দেবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এমন মন্তব্য করে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথের যেকোনো কর্মসূচি প্রতিহত করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। কখনো শান্তি সমাবেশ আবার কখনো তারুণ্যের জয়াযাত্রা সমাবেশ নিয়ে মাঠে অবস্থান করছেন। তবে কেউই রাজনীতির মাঠ ছাড়ছে না। ইতোমধ্যে দুই দলের এক দফা নিয়ে জুলাই থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেশের রাজনীতির মাঠ। তাই বিএনপি আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে ঢাকার সমাবেশ সাফল্য মন্ডিত করার জন্য রাজনীতির প্রেক্ষপটে নারায়ণগঞ্জ এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের বিএনপি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে রাজনীতির মাঠ অনেকটা উত্তপ্ত হয়ে আছে। কিছু জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। সেপ্টেম্বর থেকে তারা মাঠে থাকবে এবং আন্দোলনের নামে কেউ সহিংসতা তৈরির চেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে মোকাবিলা করবে। সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতির মাঠ দখলে রাখতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি আওয়ামীলীগের জেলা ও মহানগর কমিটির দায়িত্বশীলরা রাজপথে তেমন সরব না থকলেও গত শনিবার শামীম ওসমান জেলা ও মহানগর কমিটির নেতাকর্মীদের এক সমাবেশে পুলিশ ছাড়াই ২৪ ঘন্টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ছাড়া করে দেয়ার ঘোষণা দিলে বিএনপি গতকাল রবিবার তাদের প্রতিক্রীয়ায় পাল্টা বক্তব্য দিয়েছেন। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর শামীম ওসমান আওয়ামীলীগের মহা সমাবেশ ডেকেছে। আর এই সমাবেশকে সফল করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে। শামীম ওসমানের বক্তেব্যের পর আওয়ামীলীগের নিষ্ক্রীয় নেতারা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ধারনা করা হচ্ছে চলতি মাসের শেষের দিকে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি মাঠে সরব থাকবে। আর এ কাররেণ নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি এখন দিনে দিনে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। নির্বাচনের আগে প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি যাতে রাজনীতির মাঠ দখলে নিতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথে অবস্থান করছে। কোনোভাবেই বিএনপিকে তারা রাজপথ দখলে নিতে দেবে না। রাজপথ বিএনপির দখলে গেলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা রয়েছে বলে তারা মনে করছেন। সূত্রমতে, বিএনপিও তাদের আন্দোলনের সাথে অন্যান্য দলকে সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে মানুষের অংশ গ্রহন বৃদ্ধি করছে। তারা তাদের আন্দোলনে মানুষ অংশ গ্রহন করে এই সরকারের পতন ঘটাক। অপরদিকে বিপরীতে একের পর এক আন্দোলন নিয়ে মাঠে রয়েছে বিএনপি। তারা কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকার পতন ঘটাতে মরিয়া হয়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে বিএনপি দেয়া এক দফা দাবী বাস্তবায়নের জন্য তারা ১৮ জুলাই জেলা মহানগরে পদযাত্রা করেন। তার আগের দিন শোক র‌্যালী করে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর বিএনপি। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে সাইনবোর্ড মহাসড়কে পদযাত্রা করেন। তাদের বিপরীতে শহরের খানপুর এলাকায় মহানগর বিএনপি সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের নেতৃত্বে পদযাত্রা করেন। তারা এই সরকারের পতন না ঘটিয়ে রাজপথ দখল ছাড়বে না। রাজনীতির পরিস্থিতি এখন দুই দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য এখন প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ বিএনপি এখন ঢাকা মুখি হয়ে উঠেছে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি চলতে পারে বলে মনে করেন সচেতন রাজনৈতিক মহল। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম বলেন, বিএনপির যে কোন অরাজাকতা কিংবা নৈরাজ্যকে দমন করার জন্য আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রস্তুত রয়েছি। আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কর্মীরা যে কোন কর্মসূচিকে বাস্তবায়নের জন্য সদা প্রস্তুত রয়েছি। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনামতে শান্তি সমাবেশকে সফল করার জন্য আমরা নারায়ণগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক লীগ কয়েক হাজার নেতা কর্মী নিয়ে শান্তি সমাবেশে যোগদান করি। আগামীতে যে কোন আন্দোলনের জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আরেক সভাপতি প্রার্থী জামির হোসেন রনি জানান, আমরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য নারায়ণগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক লীগ সব সময় প্রস্তুত রয়েছি। বিএনপির অযুক্তিক দাবী এই দেশের মানুষ প্রত্যাখান করেছে। তারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে তাদের প্রতিহত করার জন্য আমরাও মাঠে রয়েছি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা