আজ বৃহস্পতিবার | ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬ | রাত ৯:২৪

না’গঞ্জে গ্যাস সংকটের অজুহাতে সিলিন্ডার ব্যবসায়ীরা পোয়াবারো

ডান্ডিবার্তা | ২৫ জানুয়ারি, ২০২৪ | ৩:৩৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট

রান্নার চুলা জ্বালাতে না পেরে আবাসিক গ্রাহকেরা পড়েছেন বেশি ভোগান্তিতে। পাইপলাইনে গ্যাস না থাকায় আবাসিক গ্রাহকদের বাধ্য হয়ে এলপিজি সিলিন্ডার, ইলেকট্রিক চুলা (ইনডাকশন) ও লাকড়ির চুলা ব্যবহার করতে হচ্ছে। সুযোগটি ব্যবসায়ীরা হাতছাড়া করেননি। যথারীতি চাহিদা বাড়ায় গ্যাস সিলিন্ডার ও ইলেক্ট্রিক চুলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। নাম না জানা কোম্পানীর ১২ কেজির গ্যাস সিলিন্ডারের দাম এখন ১৫০০ টাকা। বসুন্ধরাসহ ভালো কোম্পানীর সিলিন্ডারে ১৫৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে মহল্লার দোকানদাররা। বন্দরের চৌধুরী বাড়ি এলাকার গৃহিণী আমেনা বেগম বলেন, ‘গ্যাস না থাকায় ইলেকট্রিক চুলা ব্যবহার করছি। এতে প্রতি মাসে বাড়তি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল দিতে হচ্ছে। আবার তিতাস গ্যাসকেও বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে।’ শহরের মাসদাইর এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী মাকসুদা বেগম জানান, গভীর রাতে গ্যাস এলেও সকাল ছয়টার আগে চলে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তর মাসদাইর এলাকার গৃহিণী বুলবুলি বেগম বলেন, গ্যাস নেই, এলপিজি কেনার সামর্থ্য নেই; তাই মাটির চুলায় রান্না করতে হয়। এমন দুর্ভোগ শুধু তাঁর একার নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতেও রান্নার জন্য গ্যাস পাচ্ছেন না অনেক গ্রাহক। পাইকপাড়া, বাবুরাইল, দেওভোগ, নিমতলা, নিতাইগঞ্জ, তামাকপট্টি, আমলাপাড়া, কালিরবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তিতাসের অভিযোগকেন্দ্রে গ্রাহকের ফোন আসছে গ্যাস না পেয়ে। খানপুরের বাসিন্দা হাজেরা বেগম বলেন, মধ্যরাতে গ্যাস আসে, এরপর সকাল আটটার মধ্যেই চলে যায়। শহরের দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা আরাফাত হোসেন বলেন, ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সকালে খেয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। প্রতিদিনই বাইরে থেকে নাশতা কিনতে হচ্ছে। কিন্তু এভাবে কত দিন চলতে পারব। সবসময় বাইরে থেকে নাশতা কেনার সামর্থ্য নেই। খুব সীমিত আয়ে আমাদের দিন পার করতে হয়। শহরের গলাচিপা এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম রকি বলেন, আগে দিনের কোনো না কোনো সময় গ্যাস মিললেও এখন সারাদিনই পাওয়া যাচ্ছে না। সকালে বাসা থেকে না খেয়ে বের হতে হয়। দুপুরেও বাসায় গিয়ে খেতে পারি না। রাতেরটা খেতে হয় ১২টায়। কিন্তু মাস শেষে ঠিকই বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। বিল না দিলে আবার লাইন কেটে দেয়। এভাবে চলতে থাকলে রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় থাকবে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের বাবুরাইল, পাক্কারোড, দেওভোগ আখড়া, পালপাড়া, ভূঁইয়ারবাগ, নন্দীপাড়া, আমলাপাড়া, গলাচিপা, কলেজ রোড, জামতলা, উত্তর চাষাঢ়া, মাসদাইর, মিশনপাড়া, খানপুর, মেট্রো হল, দক্ষিণ সস্তাপুর, সস্তাপুর, কাঠেরপুল ও তল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের তীব্র সঙ্কট চলছে। এসব এলাকার মানুষ সময়মতো রান্না করতে পারছেন না। শহরের দেওভোগ আখড়া এলাকার সিঁথী রানী সাহা প্রতিদিন গভীর রাত ২টা পর্যন্ত জেগে থেকে রান্না করেন। কারণ দিনের বেলায় তো গ্যাস থাকেই না আর সন্ধ্যার পর যা থাকে তাতে রান্না চড়ানো যায় না। রাত ২টা অবধি রান্নার পর পরের দিন তিন বেলাতেই ছেলে মেয়ে আর পরিবারের লোকজনদের খেতে হয় ঠান্ডা খাবার। কাশীপুর বাংলাবাজারের বাসিন্দা জুয়েল আহমেদ, আফরোজা খাতুন, বলেন, ‘সারা দিন গ্যাস থাকে না। আগে কুপির মতো একটু জ্বলতো। তাতে টিপটিপ করে ভাতটা অন্তত ফুটতো। এখন তো তাও নাই। তিনি আরো বলেন, ‘যেই বাড়িতে কাজে যাই সেইখানেও গ্যাস নাই। একজনের বাড়িতে এলপি গ্যাস আর আরেকজনের স্টোভ দিয়ে রান্না করি। তাগো ট্যাকা আছে তারা পারে, আমগোর জীবন কষ্টের!’ নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের দাবিতে বছরজুড়ে অরাজনৈতিক সংগঠন ‘আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’র উদ্যোগে তিতাসের নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচি শেষে নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি নূর উদ্দিন আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জে জ্বালানি গ্যাসের সঙ্কট চলছে। সঙ্কট সমাধানে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগিদ দেয়া হলেও কোনো উদ্যোগ নেই। তিতাস কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণেই গ্যাসের এই অবস্থা। তাদের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। আমরা তিতাসের কাছে আমাদের অভিযোগ জানানোর পর আরো গ্যাস সঙ্কট প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার আবাসিক ও শিল্প গ্রাহকদের রান্নায় দুর্ভোগের শেষ নেই। দিন দিন আবাসিক ও শিল্প গ্রাহকরা গ্যাসের সংকটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। শহরের দেওভোগ, কাশিপুর, বাবুরাইল, পাইকপাড়া, শহীদ নগর, নলুয়াপাড়া, ভূঁইয়ারবাগ, চাঁনমারী, ইসদাইর, মাসদাইর, পশ্চিম মাসদাইর, জামতলা, দাতা সড়ক প্রভৃতি এলাকায় গ্যাস সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা কাশীপুর, মাসদাইর, বাড়ৈভোগ ও বিসিক শিল্প নগরীর আশপাশ এলাকায়। এসব এলাকায় দিনের বেলায় গ্যাস থাকে না বললেই চলে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৫৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৫
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০২
  • ১১:৪৭
  • ১৫:৩৬
  • ১৭:১৫
  • ১৮:৩১
  • ৬:১৬
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা