আজ বুধবার | ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ | দুপুর ২:৪৬

কবে হবে মানবিক নারায়ণগঞ্জ?

ডান্ডিবার্তা | ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ | ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ

হাবিবুর রহমান বাদল

বসবাসের অযোগ্য নারায়ণগঞ্জ শহর দিন দিন যেন অমানবিক হয়ে উঠছে। কতিপয় ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিকদের মানবিকতা নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। গত সোমবার মধ্য রাতে শহরের শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী রোডে আটকে পড়া আকলিমার আর্তনাদ পরিবহন শ্রমিকদের মন গলাতে পারেনি। রাত তখন সাড়ে ১১টা। সন্ধ্যার পর থেকেই শহরের সোহরাওয়ার্দ্দী সড়ক ও নবাব সিরাজদৈৗল্লাহ সড়কটি পরিবহনের দখলে চলে যায়। এই সড়ক দু’টি পরিনত হয় বাস ডিপোতে। প্রতিদিন এই সড়ক দু’টি দিয়ে অবর্ননীয় যন্ত্রনার মধ্যে পথচারিদের চলাচল করতে হয়। বন্দরের বাসিন্দাদের যাওয়ার একমাত্র পথ এই সড়কটি নগরবাসীর জন্য তখন এক আতঙ্কের সড়কে পরিনত হয়। বাস টার্মিনাল থেকে ২নং রেল গেইট পর্যন্ত যেতে কতক্ষণ সময় লাগবে এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারেনা। রাত ৯টার পর ভোর রাত পর্যন্ত এ সড়কটি অনেকটাই যেন অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকে। অথচ ঘটনাস্থল থেকে ১শ’ গজ দুরে সদর থাকার অবস্থান হলেও থানা পুলিশকে এ ব্যপারে কখনো উচ্চবাচ্চ করতে দেখা যায়নি। বরং মাঝে মধ্যে দেখা যায়, পুলিশের গাড়িও ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে বসে থাকে। এর পিছনে কি রহস্য কাজ করছে তা নগরবাসী খুব সহজেই বুঝতে পারে। অথচ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোন ঘটনা ঘটলে পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌছতে পারবে কিংবা কোথায় আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিস সময়মত পৌছতে পারবে এমন নিশ্চয়তা দেয়ার মত অবস্থা তখন থাকে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, শহরে আইনের শাসন যেন উবে গেছে। কেউ আইনের প্রতি তোয়াক্কা করছে না। সাধারণ রিকশা যাত্রীরা কখনো এর প্রতিবাদ করলে পরিবহন মাস্তানদের হাতে নাজেহাল হতে হয়। এই যখন অবস্থা তখন সোমবার মধ্য রাতে অন্তস্বত্ত¡া আকলিমাকে নিয়ে তার পরিবার হাসপাতালে ছুটার পথে চেস্বার রোডের মাঝ খানে আটকে পড়ে তাদের রিকশা। দুই দিকে সারি সারি করে রাখা বাসের মাঝখানে কোনমতে রিকশাটি যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। তখন মাঝপথ দিয়েই আরো কয়েকটি বাস টার্মিনালের দিকে ঢুকার চেষ্টার করে। যানজটের সৃষ্টির মধ্যে টার্মিনালের দিক থেকে আরো দু’টি বাস এসে পিছনে দাঁড়ালে অন্তস্বত্ত¡া আকলিমাকে নিয়ে তার পরিবার বিপাকে পড়ে। এ অবস্থায় আকলিমার আর্তচিৎকারও পরিবহন শ্রমিকদের মন গলাতে পারেনি। কয়েকজন রিকশা যাত্রী আকলিমার এই অসহায়ত্ব দেখে রিকশা থেকে নেমে পরিবহন শ্রমিকদের কাছে শত অনুনয় বিনয় করে ব্যর্থ হয়ে যখন অন্য যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে এগিয়ে আসে তখন পরিবহন শ্রমিকদের টনক নড়ে। সামনের দু’টি বাস আস্তে আস্তে পিছনে যাওয়া শুরু করে উত্তেজিত যাত্রীদের ভয়ে। ততক্ষনে রাত ১২টা পার হয়ে গেছে। এত ঘটনা ঘটে গেলেও শহরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্যকেই দেখা যায়নি। এ যেন শহরে এক রাম রাজত্ব শুরু হয়েছে। আইনের প্রতি এইসব পরিবহন শ্রমিকদের নেই কোন সামান্য শ্রদ্ধা, পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের নির্লিপ্ততার মধ্যেই শহরবাসী প্রতিদিন দুর্ভোগ আতঙ্ক আর অনেকটা জিম্মি হয়ে রাতের শহরে চলাচল করছে। নারায়ণগঞ্জের মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে, আসলেকি আমাদের মধ্য থেকে মানবিকতা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে? আমরা কোন শহরে বাস করছি? যেখানে হাসপাতালে অন্তস্বত্ত¡া আকলিমার গতিরোধ করায় রিকশায় তাকে কাতরাতে হয়, কিংবা জরুরী প্রয়োজনে নদীর পূর্বপাড়ের মানুষকে ঘন্টার পর ঘন্টা শুধু মাত্র পরিবহন শ্রমিকদের কারণে পথে মধ্যে অপেক্ষা করে এই রাতে গন্তব্যে পৌছতে হয়। অথচ যতটুকু জানা আছে, পরিবহন সড়কে নামানোর আগেই সেইসব পরিবহনের গ্যারেজের ঠিকানা দিকে হয়। এ অবস্থা কতটুকু মানা হচ্ছে তা জানা না গেলেও জনদুর্ভোগ শুধু নয়, এ ধরণের আকলিমাদের যদি পরিবহন শ্রমিকদের কারণে বিনা চিকিৎসায় মরতে হয় তবে তার দায় নিবে কে? আমরা মানবিক নারায়ণগঞ্জ চাই। শহরবাসী একটি মানবিক প্রশাসন কামনা করে। এমন একটি শহর গড়ে উঠুক যেখানে নগরবাসী নিশ্চিন্তে বাধাহীন ভাবে পথ চলতে পারবে, থাকবে না পরিবহন শ্রমিকদের প্রতিবন্ধকতা কিংবা দুস্কৃতিকারীদের কোন ভীতি। এমন মানবিক নগরী কবে গড়ে উঠবে এমন প্রত্যাশায় চরম দুর্ভোগের মধ্যেও আশা ছাড়েনি নগরবাসী।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:০৩
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৪
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১০
  • ১১:৫১
  • ১৫:৩৫
  • ১৭:১৪
  • ১৮:৩২
  • ৬:২৪
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা