আজ মঙ্গলবার | ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ৩০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬ | রাত ১১:২১

লোকশানের মুখে না’গঞ্জের হোসিয়ারি শিল্প

ডান্ডিবার্তা | ০৩ মার্চ, ২০২৪ | ১০:২০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ভালো নেই নারায়ণগঞ্জের হোসিয়ারি শিল্পে সংশ্লিষ্ট মালিক, শ্রমিকরা। এককের পর এক ধাক্কায় লোকসানের মুখে পড়েছে এ শিল্প। মহামারি করোনার ধাক্কা সামলে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পরে এ শিল্পে। কোন রকম এ ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই শুরু হয় বিএনপি-জামায়াতের টানা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিত। এরফলে পথে বসার অবস্থা হয়েছে ব্যবসায়ীদের। শীত মৌসুমে শীতের পোশাক তৈরি এবং বিক্রি করে যে মুনাফা অর্জন করার কথা ছিল তা করতে পারেনি। উল্টো লোকসানের মুখে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। তবে সামনে ঈদকে ঘিরে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে হোসিয়ারি মালিকরা। সংশ্লিষ্টরা সূত্র জানায়, এবারের শীত মৌসুমে হরতাল-অবরোধের কারণে কাঙ্খিত মুনাফা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে হোসিয়ারি মালিকরা। সময়মতো তৈরি পন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠাতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। যে কারণে কাঙ্খিত মুনফা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যবসায়ীদের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কাঁচামাল আমদানি করতে না পারা, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া এবং দেশের ব্যাংকগুলো এলসি সুবিধা না দেয়ায় ভোগান্তিতে পরেছিলো ব্যবসায়ীরা। শীত মৌসুম উপলক্ষে অধিকাংশ কারখানায় উৎপাদিত পণ্য বিক্রি না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়েছে। কাজে ব্যস্ত থাকার কথা থাকলেও শ্রমিকরা অলস সময় কাটাচ্ছে। কারখানাগুলোতে কাজ কমে যাওয়ায় শ্রমিকদের রোজগারও অনেক কমে গেছে। শ্রমিকরা জানান, আর্থিকভাবে অনেক কষ্টে আছি। ঘরভাড়া, সন্তানের স্কুল, সব কিছু নিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। হোসিয়ারি শিল্পের সাথে জড়িত একাধিক শ্রমিক জানায়, আমরা দীর্ঘদিন ধরে হোসিয়ারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত আছি। করোনায় আমরা অনেক কষ্টে দিনযাপন করেছিলাম। যুদ্ধেও আমরা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। এবার হরতাল-অবরোধের কারণে বেকার সময় কাটাতে হয়েছে। ফলে আমাদের সংসার চালাতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে। এরমধ্যে আমরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পরেছি। হোসিয়ারি মালিক পলাশ জানায়, উৎপাদিত পন্যগুলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরণ করি। কিন্তু নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতায় আমরা লোকসানের মুখে পরেছি। যে সময় শীতের পোশাক বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর কথা ছিল, সে সময় টানা হরতাল-অবরোধ ছিল। আর এসময়টা শীত মৌসুমের পোশাক বিক্রি করে আমরা অনেক মুনাফা অর্জন করে থাকি। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই আমরা বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছি। এই লোকসান সামলে উঠতে পারবো কিনা তা জানি না। নারায়ণগঞ্জ শহরের নয়ামাটিতে গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে হোসিয়ারি পণ্য উৎপাদন শুরু হয়।শহরের উকিলপাড়া, নয়ামাটি ও দেওভোগ এলাকায় কারখানা গড়ার মাধ্যমে হোসিয়ারি ব্যবসার যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে শুধু স্যান্ডো গেঞ্জি ও নারী-পুরুষের অন্তর্বাস তৈরি হলেও নব্বইয়ের দশকে যুক্ত হয় ট্রাউজার, টি-শার্ট, পলো শার্ট, সোয়েটার, মাফলার, টুপি, মোজা, বাচ্চাদের পোশাক ইত্যাদির উৎপাদন। পাশাপাশি পলিব্যাগ, বোতাম, লেবেলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরির কারখানাও আছে এখানে। ফলে হোসিয়ারি ব্যবসা নয়ামাটি থেকে শহরের উকিলপাড়া, দেওভোগ, সোহরাওয়ার্দী মার্কেট ও থানার পুকুরপাড়ে বিস্তৃত হয়েছে। হোসিয়ারি ঐতিহ্যের কারণেই নারায়ণগঞ্জে রফতানিমুখী নিট পোশাক কারখানা গড়ে ওঠা সহজ হয়েছে। স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে ছোট বড় কয়েক হাজার কারখানা ও শোরুম গড়ে ওঠে। আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় হোসিয়ারি শিল্পটি রফতানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে রূপান্তরিত হয়। সেখানে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলেন, সারা দেশের চাহিদার বড় অংশ পূরণ করে নয়ামাটির হোসিয়ারি পল্লী। এখানকার পোশাকের দাম হাতের নাগালে হওয়ায় প্রতি বছর চাহিদা বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যবসায়ীর সংখ্যাও। ফলে এখানে ব্যবসায় প্রতিযোগিতাও তীব্র। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা হোসিয়ারি পণ্য গেঞ্জি, ছোট শিশুদের পোশাক, টি শাট, শার্ট, স্যান্ডো গেঞ্জি ও নারী-পুরুষের অন্তর্বাস, পলো শার্ট, টুপি, মোজাসহ আরো অনেক পণ্য নারায়ণগঞ্জ থেকে কিনে নিয়ে তাদের নিজ নিজ এলাকার দোকানে বা মার্কেটে বিক্রি করে থাকেন। বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ নাজমুল আলম সজল বলেন, করোনা, যুদ্ধ শবশেষ বিরোধী দলগুলোর সরকার বিরোধী আন্দোলনে স্বাভাবিকভাবেই হোরিয়ারি ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। হোসিয়ারি শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা প্রতি বছর শীতের অপেক্ষায় থাকেন। শীত আগমনের পূর্ব-মুহূর্তে বেচাকেনা করে তারা সারা বছরের আয় অর্জন করেন। কিন্তু এবার লোকসানের মুখে পড়েছে। কাঙ্খিত লক্ষমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। উল্লেখ্য, সরকার অনুমোদিত এক হাজার ২০০ হোসিয়ারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্ভূক্ত। তবে এর বাইরে আরো দশ হাজারের অধিক কারখানা পরিচালিত হচ্ছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:০৩
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৪
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১০
  • ১১:৫১
  • ১৫:৩৫
  • ১৭:১৪
  • ১৮:৩২
  • ৬:২৪
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা