আজ শুক্রবার | ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | ৩০ কার্তিক ১৪৩১ | ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬ | দুপুর ১২:৩০

গরমে কদর বেড়েছে তালের শাঁসের

ডান্ডিবার্তা | ১৬ জুন, ২০২৪ | ৫:৪৪ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
গ্রীষ্মকালীন নানা ফলের ভিড়ে রূপগঞ্জে বেড়েছে তালের শাঁসের কদর। তালের শাঁসে ফরমালিনের ঝ্ুঁকি না থাকায় দাম বেশি হলেও নারী পুরুষসহ শিশুরাও আগ্রহ করে কিনে খাচ্ছেন। ভ্যাপসা গরমে শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে বেশ ভূমিকা রাখে এ ফলটি। প্রচন্ড গরমে একটু স্বস্তি পেতে রাস্তার পাশে ফুটপাতে বিক্রি হওয়া রসালো এ ফলের স্বাদ নিচ্ছেন অনেকে। ক্লান্ত পরিশ্রমী মানুুষগুলো তালের শাঁসে প্রশান্তি খুজে পান। এ ফলটি খেতে খুবই সুস্বাদু। এতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। যা অনেকটা ডাবের পানির মতো। এছাড়া পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন,ফাইবার ও খনিজ উপাদান রয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, ডাবের পানি এবং তালের শাঁসের গুণাগুণ একই রকমের। দুইটিই খোলসের ভিতরে থাকে। ডাবের পানির পুরোটাই তরল, অন্যদিকে তালের শাঁসে কিছুটা শক্ত অংশ থাকে। গ্রীষ্মে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে তালের শাঁস। প্রচÐ গরমে তালের কচি শাঁস এবং এর ভেতরের মিষ্টি পানি তৃষ্ণা মিটিয়ে শরীরে এনে দেয় আরামদায়ক অনুভূতি। এছাড়া এ সময় তাপমাত্রার কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চুল পড়া ইত্যাদি রোধ করতে সাহায্য করে এটি। অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীর থেকে যে পানি বেরিয়ে যায় তা পূরণ করতে সাহায্য করে তালের শাঁস। তালের শাঁসকে গ্রাম্যভাষায় বলা হয় তালের বিচি,তালকুর বা আশারি। প্রাণ সতেজ করতে তালের বিচির জুরি মেলা ভার। বাংলাদেশে তালের ব্যাপক চাষ হলেও ফলটির আদি নিবাস আফ্রিকা। কেউ কেউ বলেন এর জন্মস্থান আমাদের উপমহাদেশেই। তবে এর জন্ম যেখানেই হোক, ফলটি আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গেছে এটাই সত্য। বারো মাস গাছে তাল ফললেও কচি তালের শাঁস ঠিক এই সময়টিতেই বাজারে পাওয়া যায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা তাল গাছ থেকে অপরিপক্ক তাল ফল পাইকারী কিনে এনে বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করে দেয়। পরে আড়ত থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনে রাস্তার পাশে, ফুটপাতে, পড়া মহল্লার অলিতে গলিতে, হাট বাজারেও বিক্রি করেন। আবার কেউ কেউ ভ্যানযোগেও বিক্রি করেন। নরম অবস্থায় তালের শাঁসের দাম বেশি। কিন্তু দিন যতই যেতে থাকে এ তাল শাঁস শক্ত হতে থাকে। তখন শাঁসের দামও কমতে থাকে এবং এক সময় তাল পরিপক্ব হয়ে গেলে তখন এ শাঁস খাওয়া সম্ভব হয় না। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, মুড়াপাড়া, ভোলাব, আতলাপুর, বাজার কাঞ্চন বাজার, স্বর্ণখালি বাজার, গাউছিয়া বাসস্ট্যান্ড, ফুটপাত ও এলাকার রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন জায়গায় তালের শাঁস বিক্রির ধুম পড়েছে। প্রচন্ড গরমে স্বস্তি পেতে তালের শাঁসের স্বাদ নিচ্ছেন অনেকে। বিক্রেতা এ সুস্বাদু ফলটি ধারালো দা দিয়ে কেটে শাঁস বের করছেন এবং ক্রেতারাও আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছেন। ক্রেতারা বলছেন, তালের শাঁসের দাম একটু বেশি হলেও গরমে বেশ স্বস্তি মিলে। এছাড়া তালের শাঁস মৌসুমি ও সুস্বাদু ফল হওয়ায় এর প্রতি আগ্রহের কমতি নেই তাদের। তালের চাহিদা থাকায় বিচি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। বড় তালের বিচি বা শাঁস ১০টাকা করে তিন বিচি ৩০টাকা। আর ছোট তালের বিচি বা শাঁস ৮টাকা আবার কোথাও কোথাও পাঁচ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা মূল্যের দিকে না তাকিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে কিনে নিচ্ছেন। বর্তমানে কচি তালের শাঁস অনেক জনপ্রিয় একটি ফল। এর বেশিরভাগ অংশ জলীয় হওয়ায় এটা খেলে দ্রæত শরীরে পানিশূন্যতা দূর করে শরীর সুস্থ রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। উপজেলার স্বর্ণখালি বাজার এলাকার তালের শাঁসের খুচরা বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম জানান, গত পনের বছর ধরে গরম এলেই তিনি তালের শাঁস বিক্রি করেন। বেচাকেনাও ভালো। সব খরচ বাদ দিয় দৈনিক সাত-আটশ’ টাকা লাভ থাকে। গরম যতো বাড়ে তালের শাঁসের চাহিদাও তত বাড়ে বলে জানান তিনি। উপজেলার গোলাকান্দাইল বাসস্ট্যান্ডের পাশে ভ্যাগযোগে তালের শাঁস বিক্রেতা হালিমের সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিক তানজিলাকে বলেন, গতবছর গোলাকান্দাইল চৌরাস্তায় তালের শাঁস বিক্রি করেছিলাম। কিন্তু এ বছর গোলাকান্দাইল চৌরাস্তায় দোকান পাট বসানো নিষেধ ও বাঁশ ঘেরাও দেয়ায় ভ্যানে করে বিক্রি করছি। তবে পুলিশের জালায় ঠিকমতো একজায়গাও বিক্রি করতে পারছি না,যেখানে ভ্যান থামিয়ে বিক্রি করতে নেই সেখানে পুলিশের দৌড়ানি খাচ্ছি। আমি প্রতিবছরই এই মৌসুমে আড়ত থেকে কিনে তালের শাঁস বিক্রি করি। এবছর ভ্যানে করে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছি। দৈনিক ২থেকে ৩হাজার টাকা বিক্রি করতে পারি। ছোট-বড় সব বয়সের মানুষের পছন্দের খাবার হিসেবে সমাদৃত তালের শাঁস। মানুষের চাহিদা থাকায় পুরো উপজেলাজুড়ে ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে এ ফল। উপজেলার গুতুলিয়া এলাকার মরিয়ম পরিবারের সবার জন্য তালের শাঁস কিনেছিলেন। তিনি সাংবাদিক তানজিলাকে বলেন, তালের শাঁসে কোনও ধরনের ভেজাল নেই। তালের শাঁস সুপারশপে বিক্রি হয় না, এটা কেবল ফুটপাত বা মহল্লার অলিগলিতে পাওয়া যায়। তালের শাঁস দামও নাগালের মধ্যে থাকায় সবাই খেতে পারছে। অনার্সে পড়ুয়া সোহানা নামে এক শিক্ষার্থী জানান, তালের শাঁস আমার খুব পছন্দের একটি ফল। এটি যদি বারো মাস পাওয়া যেত আমি বারো মাসই কিনে খেতাম। উপজেলার বীর হাটাব তার বাসা। তিনি আক্ষেপ ও হতাশা প্রতাশা প্রকাশ করে সাংবাদিক তানজিলাকে জানান, তালগাছ এখন দেখাই যায় না। তাল গাছে বাবুই পাখির বাসা কতো সুন্দর লাগতো। এখন ত তাল গাছ বিলুপ্তির পথে। কেননা বর্তমান প্রজন্মের শিশুরা তালের শাঁস খাচ্ছে ঠিকি কিন্ত তাল গাছ দেখতে কেমন হয় তা জানে না। সবাই যদি একটি করে গাছ লাগাতো কতই না ভালো হতো।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৫৪
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৭:১৬
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৫৯
  • ১১:৪৭
  • ১৫:৩৭
  • ১৭:১৬
  • ১৮:৩২
  • ৬:১৩
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা