ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
কার ইশারায় দীর্ঘদিনেও হচ্ছে না নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এমন প্রশ্ন এখন তৃণমূল নেতাকর্মীদের মুখে মুখে। হবে হচ্ছে করেও কমিটি ঝুলে থাকায় নেতাকর্মীদের মধ্যেও এ নিয়ে বাড়ছে অসন্তোষ এবং তৈরি হচ্ছে নানা প্রশ্ন। বিশেষ করে, সম্মেলন হয়ে যাওয়ার পর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দেয়া পৃথক দুই খসড়া কমিটি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় দুই মেরুতেই। কমিটিতে নিজ বলয়ের আধিক্য বাড়াতে তখন অনেকেই ছুটেছেন কেন্দ্রের দিকে। এরই মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে থেমে যায় কমিটিকেন্দ্রীক আলোচনা। নির্বাচন শেষ হওয়ায় নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতি সেই আলোচনায় সরগরম। দীর্ঘ দুই যুগ পর ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে পূর্বের কমিটির সভাপতি আবদুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলকে স্বপদে বহাল রেখে ১৫ দিনের মধ্যে নতুন খসড়া কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যদিও মেরুগত টানাপোড়েনের ফলে কয়েক মাস পর পৃথকভাবে কমিটির খসড়া তালিকা কেন্দ্রে জমা দেন সভাপতি এবং সেক্রেটারি। গত বছর ১৮ মার্চ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই তার প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণ করেন। সেখানে তিনি যুগ্ম সম্পাদক পদে জাহাঙ্গীর আলম, ইকবাল পারভেজ এবং অ্যাডভোকেট মফিজ উদ্দিনের নাম প্রস্তাব করেন। এর প্রায় দেড় মাস পর, ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রে পৃথক খসড়া কমিটি প্রেরণ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল। সেখানে তিনি যুগ্ম সম্পাদক পদে ডা. আবু জাফর চৌধুরী বীরু, নাজমুল আলম সজল এবং মীর সোহেলের নাম প্রস্তাব করেন। পর্যালোচনায় দেখা যায়, উভয়ের খসড়ায় যুগ্ম সম্পাদক পদ ছাড়াও সহ-সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সদস্য পদসহ বেশ কয়েকটি পদের নামের তালিকায় অমিল রয়েছে। দুই খসড়া তালিকাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে বিদ্যমান দুটি মেরুতে পক্ষে-বিপক্ষে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। যদিও অনুসন্ধানের পর উভয়ের প্রস্তাবিত খসড়ার সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেবেন প্রধানমন্ত্রী এমনটাই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে নানা ব্যস্ততায় জেলা কমিটির অনুমোদন এখনও আসেনি। একদিকে জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান এবং অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভি দুজনেই নতুন কমিটিতে নিজস্ব লোক ঢুকিয়ে নিজ বলয় তৈরি করতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করছেন বলেও তৃণমূলের নেতারা অভিযোগ করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আব্দুল হাই ও শহীদ বাদলের নিজস্ব কর্মী বাহিনী নেই বললেই চলে। বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গেলে বা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হলে শামীম ওসমান ও ডা. আইভি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলেও মনে করেন অনেকে। ফলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের অদক্ষতা এবং নেতাকর্মী শূন্যতার কারণেই তারা নিজ উদ্যোগে দল গুছিয়ে কমিটি দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন বলে মনে করেন অনেক নেতাকর্মী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল হাই বলেন, ‘আমরা বহু আগেই কেন্দ্রে খসড়া কমিটির তালিকা পাঠিয়েছি। তবে আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে ব্যস্ত থাকায় পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন আসেনি। এখন যেহেতু নির্বাচন শেষ হয়েছে, সরকার গঠন হয়েছে, সেহেতু কিছুদিন পর আমরা জেলা কমিটির বিষয়ে কেন্দ্রে আলোচনা করবো। আশা করছি দ্রæত সময়ের মধ্যেই একটি শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার মধ্যকার সম্পর্কের রঙ বারবার বদলেছে। নানা বিষয়ে তাদের মধ্যে যেমন দ্বিমত রয়েছে, আবার ক্ষেত্র বিশেষে একে অপরের পাশেও তাদের দেখা গেছে। সবশেষ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর দুই নেতার মাঝে দূরত্ব প্রকাশ পেয়েছে। তারা সমন্বয় ছাড়াই পৃথকভাবে খসড়া তালিকা কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কার প্রস্তাবিত কমিটির অনুমোদন মিলবে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে আব্দুল হাই বলেন, ‘শুধু নারায়ণগঞ্জেই নয়, অন্যান্য জেলার ক্ষেত্রেও সভাপতি-সেক্রেটারি পৃথকভাবে কমিটি জমা দিয়েছিল। নেত্রীর নির্দেশনা ছিল যে, যেই জেলা থেকে একক কমিটি এসেছে, সেগুলোর অনুমোদন দিতে এবং যেসব জেলা থেকে পৃথকভাবে খসড়া কমিটি এসেছে সেগুলো সমন্বয় করে দেয়ার জন্য। এ ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ থেকে যে দুই খসড়া কমিটি দেয়া হয়েছে, তা সমন্বয় করেই পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা আসবে বলে আমি মনে করি। পৃথক কমিটি দেয়া হলেও এর মধ্যে ১৮টি পদে কমন প্রার্থী ছিল। এই ১৮টি বাদ দিয়ে বাকিগুলোতে সমন্বয় হবে। বলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এ বিষয়ে শহীদ বাদল জানান, কমিটির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তই আমাদের সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রীয় নেতারা যখন কমিটি দেয়ার কথা মনে করবেন তখনই হবে। আমাদের মাঝে কোনো বিরোধ নেই।
হাবিবুর রহমান বাদল বাংলাদেশের স্বৈরশাসকের পতনের ৪০ দিন পার হলো। এ লেখা যখন লিখছি, তখন আওয়ামী শাসনের ৪০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটে। ছাত্ররা কোটা বাতিলের দাবিতে প্রথমে আন্দোলনে নামলেও পরবর্তিতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি, অনিয়ম আর লুটপাটের অবসান দাবি করে আন্দোলন বেগবান করে। এই আন্দোলনে এক সময় ছাত্রদের সাথে […]
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলন চলাকালেও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের অনেক সিনিয়র নেতাকর্মীদের বলতে শুনেছি, কেন্দ্রের নির্দেশনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে মাঠে আছি। ওই সময় অনেকেই ছিলেন বেশ প্রাণবন্ত। অতীতের মতোই অনেকের ভাষ্য ছিল- ‘শেখের বেটি’ থাকতে ভয় নাই। তিনি ‘শেষ রক্তবিন্দু থাকতে লড়ে যাবেন।’ অর্থাৎ ওই সময় তাদের বিশ্বাস ছিল, সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯