ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
পর পর দুই দিন রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রবি ও সোমবার ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার মতো সময় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেতৃত্বে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা এবার সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার গণসংযোগের কর্মসূচির পর বুধবার থেকে সর্বাত্মক অবরোধ পালন করা হবে। গত দুই দিনের কয়েক ঘণ্টার কর্মসূচিতেই স্থবির হয়ে পড়ে পুরো রাজধানী, দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। এবার সর্বাত্মক অবরোধ পালন শুরু হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। মাসখানেক আগে সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করা নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পুলিশ তাদের শাহবাগে অবস্থান নেওয়ার সুযোগই দেয়নি। এমনকি আন্দোলনকারীদের ১২ জনকে গ্রেফতার করে মামলাও দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু কোটা আন্দোলনকারীদের ক্ষেত্রে পুলিশের নীরব ভূমিকাতেও প্রশ্ন উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, একটা বিচারাধীন বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছে। এজন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সদস্যদের ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। নাগরিক দুর্ভোগ হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করতে দেখা যায়নি। তবে সর্বাত্মক অবরোধে পুলিশের ভূমিকা পাল্টে যেতে পারে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনে পুলিশকে ধৈর্য ধরে পর্যবেক্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেউ যদি আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কোনও কার্যক্রম শুরু করে তবে পুলিশ অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেবে। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যাতে পুলিশের কোনও সংঘর্ষ না হয় সেজন্য সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আদালতের রায় বলে সরকারের পক্ষ থেকেও বিষয়টি প্রথমে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ‘নাছোড়বান্দা’র মতো আন্দোলনকারীরা একের পর এক কর্মসূচি দেওয়ায় সরকারও নড়েচড়ে বসেছে। তবে পরিস্থিতি যাতে উত্তপ্ত না হয় সেজন্য ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদসহ তিন শীর্ষ নেতার সঙ্গে গত রবিবার আলোচনাও করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কিন্তু শিক্ষার্থীরা কোটার যৌক্তিক সমাধান ছাড়া আন্দোলন থেকে পিছপা হবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, দিনের আংশিক সময় কোটাবিরোধীদের জন্য ছাড় দিলেও দিনভর সড়ক অবরোধে ছাড় দেওয়া হবে না। গতকাল মঙ্গলবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও চাইছেন, রাজনৈতিকভাবে বিষয়টি সমাধান হলে ভালো হয়। কোটার যৌক্তিক সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে ফেরাতে পারলে বিষয়টির সমাধান হতে পারে। তবে গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগের মতোই কোটাবিরোধী আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দেওয়ার চেষ্টা করছে। এজন্যই শিক্ষার্থীরা সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দিয়েছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের নজরদারির মধ্যে রেখেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী করণীয় নিয়েও আলোচনা চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোটাবিরোধীদের আন্দোলন নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনোভাবেই যেন ধ্বংসাত্মক কোনও পরিস্থিতি তৈরি না হয়। কারণ এমনিতেই অর্থনৈতিক নানা বিষয়, ডলার সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ নানামুখী চাপে রয়েছে। এই সময়ে শিক্ষার্থীরা ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে। এজন্য সর্বোচ্চ ধৈর্য নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচিতে কোনও ভাঙচুর বা জ্বালাও পোড়াও করেনি বলে তাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে। যদি তারা সর্বাত্মক কর্মসূচির নামে নাশকতার করার চেষ্টা করে তাহলে অবশ্যই তা ঠেকানোর চেষ্টা করা হবে। কারণ নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়াকে প্রাধান্য দেওয়াই হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ। অবরোধের কারণে সাময়িক দুর্ভোগ মেনে নেওয়া যেতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদি দুর্ভোগের দিকে নগরবাসীকে ঠেলে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এদিকে গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে গিয়েছেন। তিনি না দেশে না ফেরা পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলেও কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধি দলকে গণভবনে ডেকে প্রধানমন্ত্রী কথা বলে বিষয়টি সমাধান করার একটি পরিকল্পনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চালানো হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। তবে অপর একটি সূত্র জানায়, প্রথম দুদিনের মতো সর্বাত্মক কর্মসূচির প্রথম দিনও পর্যবেক্ষণ করা হবে। সর্বাত্মক অবরোধ কতটা কার্যকর হয় এবং এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কেমন হয়, তা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
হাবিবুর রহমান বাদল বাংলাদেশের স্বৈরশাসকের পতনের ৪০ দিন পার হলো। এ লেখা যখন লিখছি, তখন আওয়ামী শাসনের ৪০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটে। ছাত্ররা কোটা বাতিলের দাবিতে প্রথমে আন্দোলনে নামলেও পরবর্তিতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি, অনিয়ম আর লুটপাটের অবসান দাবি করে আন্দোলন বেগবান করে। এই আন্দোলনে এক সময় ছাত্রদের সাথে […]
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলন চলাকালেও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের অনেক সিনিয়র নেতাকর্মীদের বলতে শুনেছি, কেন্দ্রের নির্দেশনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে মাঠে আছি। ওই সময় অনেকেই ছিলেন বেশ প্রাণবন্ত। অতীতের মতোই অনেকের ভাষ্য ছিল- ‘শেখের বেটি’ থাকতে ভয় নাই। তিনি ‘শেষ রক্তবিন্দু থাকতে লড়ে যাবেন।’ অর্থাৎ ওই সময় তাদের বিশ্বাস ছিল, সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯