ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
দ্বাদশ নির্বাচনের পর রাজপথে খরা যাচ্ছে ইসলামী দলগুলোর। নেই কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম। নেই কোনো তৎপরতা। সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত যেসব দল মাঠে সক্রিয় থাকার কথা তারাও নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। একইভাবে সরকার সমর্থিত ইসলামী দলগুলোর অবস্থাও একই রকম দেখা যাচ্ছে। আর গেল দ্বাদশ নির্বাচনে সরকার সমর্থিত ইসলামী দলগুলোর নেতাদের শোচনীয় ভরাডুবির পর একবারেই মুখ থুবড়ে পড়েছে তাদের কার্যক্রম। প্রায় গত ৭ মাসে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে মাঝেমধ্যে ইসলামী দলগুলোর নেতারা প্রতিবাদ বা বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দেয়ার চেষ্টা করে। বিশেষ করে ভোটে অংশ নেয়া ইসলামপন্থি দলগুলোর কোনো তৎপরতাই মাঠে দৃশ্যমান নয়। তবে চরমোনাইয়ের পীরের দল ইসলামী আন্দোলনসহ ভোট বর্জনকারী কয়েকটি ইসলামী দল স¤প্রতি নতুন ইস্যু ট্রান্সজেন্ডার ও পাঠ্যপুস্তকে নানা অসংগতির অভিযোগে সভা-সেমিনার ও বিবৃতিতে সক্রিয় রয়েছে। ইসলামপন্থি দলগুলোর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংসের অভিযোগে ঘরোয়া কর্মসূচি পালন করছে। সর্বশেষ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বিনষ্টের অভিযোগ করে দলটি সরকারবিরোধী বক্তৃতা-বিবৃতিতে তৎপর রয়েছে। গত কয়েক বছরে নানা বিতর্কিত, অন্তর্ঘাত ও আপসমূলক কর্মকাÐের মাধ্যমে ইসলামী দলের নেতারা তাদের সম্মানের জায়গাটুকুও ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর প্রতিফলনই নির্বাচনে ঘটেছেÑ এমন মন্তব্য করেছে দলগুলোর একাধিক নেতা। তবে আরেক পক্ষের দাবি, তারা সাংগঠনিক তৎপরতার পাশাপাশি রাজনৈতিক কর্মসূচিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, নির্বাচনে আমরা শুধু ভোট বর্জন নয়, এই সংসদ, এই সরকারকেও বর্জন করছি। কারণ, এটা শুধু একদলীয় নয়, এক ব্যক্তির সংসদ। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, ডান হাতও তার, বাঁ হাতও তার। অর্থাৎ সরকারও তার, বিরোধী দলও তার। ইসলামপন্থি ছয়টি দল যে ভোট পেয়েছে, তা দলগুলোকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। ছয়টি দলই সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ভোটের পর এমন ফলাফল নিয়ে দলগুলোর নেতারা প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে না চাইলেও ব্যক্তিগত আলোচনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রাজনীতিতে পরিচিত ধর্মভিত্তিক পাঁচটি দল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। সেগুলো হলো জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও খেলাফত মজলিস। যদিও নির্বাচন কমিশনে জামায়াতের নিবন্ধন নেই। স¤প্রতি সবকটি দলই জাতীয় পাঠ্যক্রম নিয়ে বক্তৃতা-বিবৃতিতে সরব রয়েছে। এর বাইরে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম এ মুহূর্তে কোনো কর্মসূচিতে নেই। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২৯ ডিসেম্বর সংগঠনটি কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ আরও কিছু দাবিতে ঢাকায় সমাবেশ ডেকেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সমাবেশ স্থগিত করা হয় অজ্ঞাত কারণে। এ নিয়ে তখন সংগঠনের নেতাকর্মীদের একটি অংশে প্রতিক্রিয়া হয়। এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সমাবেশ করা হয়নি। সংগঠনের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, দুটি বিষয়ে আপত্তি তুলেছে হেফাজতে ইসলাম। এরমধ্যে গত ফেব্রæয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে আহমদিয়া স¤প্রদায়ের বার্ষিক সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। অন্যটি হচ্ছে জাতীয় পাঠ্যক্রমে ট্রান্সজেন্ডার মতবাদের বিষয়। ভোটের পর তাদের কোনো প্রকাশ্য তৎপরতা নেই। ইসলামপন্থি দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছয়টি নিবন্ধিত দল এবারের সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। দলগুলো হলো বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, জাকের পার্টি। এরমধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও ইসলামী ঐক্যজোট কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক দল। এবার ইসলামপন্থি ছয়টি দল যে ভোট পেয়েছে, তা দলগুলোকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। ছয়টি দলই সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ভোটের পর এমন ফলাফল নিয়ে দলগুলোর নেতারা প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে না চাইলেও ব্যক্তিগত আলোচনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ইসলামী দলগুলোর ভোট বিপর্যয়ের ব্যাপারে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা মুভ ফাউন্ডেশনের প্রধান সাইফুল হক বলেন, আমাদের সমাজ আলেম-ওলামা বা ইসলামী দলের নেতাদের ধর্মীয় কারণে ভক্তি করে থাকেন। তাই তাদের সংশ্লিষ্ট কাজে শ্রদ্ধা, সম্মান ও গুরুত্ব দিলেও সামাজিক বা রাজনৈতিক কর্মকাÐে তাদেরকে ততটা উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য মনে করেন না। সেইসঙ্গে ইসলামী দলগুলোর রাজনৈতিক আদর্শ সুনির্দিষ্ট নয়, লক্ষ্য উদ্দেশ্যবিহীন এবং কর্মপরিকল্পনা অগোছালো। আবার যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে বা দিতে চায়, ভোটের মাঠে তাদের গ্রহনযোগ্যতা একেবারেই নেই। সমাজে ক্রিয়াশীল ও প্রভাব রাখা নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথেও তাদের যোগাযোগ ও আন্তঃসম্পর্ক সুখকর নয়। সবকিছুকেই সন্দেহের চোখে দেখে নিজেরাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, নিজ মাদ্রাসার ছাত্র-কেন্দ্রিক (যাদের অধিকাংশই ভোটার নয়) জনপ্রিয়তা ও জনসমাগমকে রাজনীতির মাঠের জনপ্রিয়তা মনে করা এক ধরনের বোকামি। প্রতিদ্বদ্বী আওয়ামী লীগ, বিএনপির মতো বড় দলগুলোর রাজনৈতিক শেকড় অনেক গভীরে এবং এসব দলের অধিকাংশ নেতারই সামাজিক অবস্থান অনেক সুসংহত। তবে নারায়ণগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের মাঝে মধ্যে কিছু কর্মসূচি দেখা গেলেও অন্যান্য দলগুলির কোন কর্মসূচি দেখা যায় না।
হাবিবুর রহমান বাদল বাংলাদেশের স্বৈরশাসকের পতনের ৪০ দিন পার হলো। এ লেখা যখন লিখছি, তখন আওয়ামী শাসনের ৪০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটে। ছাত্ররা কোটা বাতিলের দাবিতে প্রথমে আন্দোলনে নামলেও পরবর্তিতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি, অনিয়ম আর লুটপাটের অবসান দাবি করে আন্দোলন বেগবান করে। এই আন্দোলনে এক সময় ছাত্রদের সাথে […]
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলন চলাকালেও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের অনেক সিনিয়র নেতাকর্মীদের বলতে শুনেছি, কেন্দ্রের নির্দেশনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে মাঠে আছি। ওই সময় অনেকেই ছিলেন বেশ প্রাণবন্ত। অতীতের মতোই অনেকের ভাষ্য ছিল- ‘শেখের বেটি’ থাকতে ভয় নাই। তিনি ‘শেষ রক্তবিন্দু থাকতে লড়ে যাবেন।’ অর্থাৎ ওই সময় তাদের বিশ্বাস ছিল, সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯