ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়নগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের অবস্থা নাজুক। বিরোধ দিন দিন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তৃনমূল নেতাকর্মী থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতারা। ক্ষোভ প্রকাশ করে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটি গঠনতান্ত্রিক দল। মাঝে মাঝে আষাঢ়ের বৃস্টি আসবে আবার চলে যাবে। কিন্তু ত্যাগীরা থেকে যাবে। বন্দরে বিভিন্ন প্রোগ্রামে আমার নামে বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে সেটা নিয়ে কোন মন্তব্য নেই। তবে আমি ত্যাগী নেতা বিভিন্ন সময় আমি জেল খেটে অত্যাচার সহ্য করে রাজনীতি করছি। বর্তমান সভাপতি-সেক্রেটারীর বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। তবে মনে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছেন আত্মসমালোচনা করতে, অন্যের সমালোচনা করতে না। নারায়ণগঞ্জ বহু ত্যাগী নেতা আছে। কিন্তু যথেষ্ঠ মূল্যায়নের অভাবে তারা দুরে। কি হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে? আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আপনি ধমক দিবেন তাদের যারা আপনার মাখা তামাক খায়। আমাদের বেলায় কথা বলতে গেলে খুব সাবধান। আমরাও আপনার ধমকের জবাব দিতে জানি। এছাড়া নাসিক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে পল্টিবাজ ও সুযোগ সন্ধানী বলে আখ্যায়িত করে বলেন, আনোয়ার ভ্ইা এক সময় আইভী পন্থি এক সময় শামীম ওসমান পন্থি। দুজনেই আওয়ামীলীগের নেতা। এখানে পন্থি হতে হবে কেন। আমরা উভয়কে শ্রদ্ধ করি। তারা উভয়েই আওয়ামীলীগের নেতা। তারা দলের ভাল চায়। কিন্তু আপনি দলকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন। আপনি যেখানে সুবিধা মনে করেন সেখানেই চলে যান। আর দলীয় নেতাদের বিরোধীতা করেন। আপনি কিসের নেতা। দলকে ধ্বংস করছেন। ত্যাগীদের মূল্যয়ন করছেন না। যাকে খুশি তাকে দলের নেতা বানাচ্ছেন। এইগুলি ছাড়েন নয়তো আগামী দিনে আপনাকে আর সন্মান করার কর্মী থাকবে না। নিজের উজ্জতের সাথে দলের ভাবমূর্তি রক্সা করুন। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ১৭টি ওয়ার্ড কমিটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়। তবে সেই বিতর্ক নিভু নিভু অবস্থাতে চলে গেলেও ফের জাগ্রত হয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলে এর আগেও কমিটি ঘোষণার পর পরই নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু পূণরায় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় জি এম আরাফাতকে দমাতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা মালাকে উস্কে দিচ্ছেন আনোয়ার-খোকন। যার ফলশ্রæতিতে বন্দরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর নামে মাহমুদা মালাকে বক্তব্যের সুযোগ করে দিয়ে জিএম আরাফাত তথা দক্ষিণ বলয়ের নীতি নির্ধারক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে টার্গেট করে তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল করে বক্তব্য দেয়ান। সূত্র বলছে, গত ১২ ফেব্রæয়ারী নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ১৭টি ওয়ার্ড কমিটি প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ১৭ ফেব্রæয়ারী এসকল কমিটির প্রতিবাদে এক বৈঠক হয়। আর সেই বৈঠকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। এছাড়াও নেতাকর্মী ক্ষুদ্ধ হয়ে পাল্টা কমিটি করার ঘোষণা দেন। এমনকি মহানগর আওয়ামীলীগ অফিসে নেতাকর্মীরা ক্ষোভে তালা ঝুলিয়ে দেন। তবে একটা সময় এসকল বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ থেমে গেলে ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে গেলেও ফের জাগ্রত হয়। গত ২৩জুন বন্দরে ওয়ার্ড পদবঞ্চিত নেতাদের নিয়ে সভা করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে এক সভায়ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহাকে তুলোধনা করে বক্তব্য রাখেন। এরপর থেকেই আনোয়ার হোসেন এবং খোকন সাহার দ্বারা গঠিত ওয়ার্ড কমিটির বিতর্ক ফের আলোচনায় আসে। তবে ফের বিতর্কিত কমিটিগুলোর বিরুদ্ধে আলোচনায় আসায় আনোয়ার হোসেন এবং খোকন সাহার নির্দেশে বন্দর এলাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন করে ওয়ার্ড নেতারা। সেখানে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে টার্গেট করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাতকে টার্গেট করে বিভিন্ন ভাবে বক্তব্য দেন আনোয়ার-খোকনের প্রেসক্রিপশনে চলা নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা মালা। গত ১ জুলাই বন্দরের ২৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ কমিটির উদ্যোগে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে নেতাকর্মীরা আরাফাতের বক্তব্য টেনে তাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্ল করে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মাহমুদা মালা বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যেই ছোট একটি গ্রæপ আনোয়ার ভাই ও খোকন দা’র বিরুদ্ধে সমালোচনা করছেন। ১৭টি ওয়ার্ড কমিটি হওয়ার পরই তারা এটি শুরু করেছি। আমাদের একটা স্বভাব হলো, আমি যখন কোন কিছু থেকে বাদ পরে যাই; তখন আমি বাদে সবাই খারাপ। তারা কমিটি গঠনের সময় না এসে, এখন বলছে টাকা খেয়ে নাকি কমিটি হয়েছে। আপনাদের আমি অনুরোধ করবো, একদিন ডিএন রোডে অবস্থিত সাধারণ সম্পাদকের বাসায় ঘুরে আসবেন। সভাপতিও নিজের চাকরি করে মোটামোটি অবস্থানে আছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ মহানগরের জন্য আনোয়ার ভাই ও খোকন সাহা ব্যতিত অন্য কাউকে মহানগরের দায়িত্ব দেন নাই। এখন কেউ কি মনে করছে, যে একটু বেয়াদবি করতে পারেলেই মহানগরের সাধারণ সম্পাদক হয়ে যাবেন, সভাপতি হয়ে যাবেন। এছাড়াও গত ৩ জুলাই বন্দরের ২২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ কমিটির উদ্যোগে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মাহমুদা মালা বলেন, মেয়র আইভীকে তার পূর্বের বক্তব্যকে উদ্দেশ্য করে বলেন মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ আপা! আনোয়ার হোসেন খোকন সাহা কোনো আপার দয়ায় এখানে বসে নাই। বিদেশে ঘুরে বেড়িয়ে ডাক্তরি পড়ার নামে ১৮ বছর পার করে যখন আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করতে করতে ক্লান্ত ২০০৩ সালে নানা কৌশল ঈসার টুপি মুসাকে পাড়িয়ে চেয়ারম্যান হয়ে গেলেন। নেতাকর্মীদের মতে, মাহমুদা মালার এমন বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে আর ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে নিজেদের দোষ নিয়ে চলা প্রতিবাদকে আটকে দিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা মালার মাধ্যমে নানা রকম বক্তব্য দেয়ান।
হাবিবুর রহমান বাদল বাংলাদেশের স্বৈরশাসকের পতনের ৪০ দিন পার হলো। এ লেখা যখন লিখছি, তখন আওয়ামী শাসনের ৪০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটে। ছাত্ররা কোটা বাতিলের দাবিতে প্রথমে আন্দোলনে নামলেও পরবর্তিতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি, অনিয়ম আর লুটপাটের অবসান দাবি করে আন্দোলন বেগবান করে। এই আন্দোলনে এক সময় ছাত্রদের সাথে […]
হাবিবুর রহমান বাদল ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলন চলাকালেও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের অনেক সিনিয়র নেতাকর্মীদের বলতে শুনেছি, কেন্দ্রের নির্দেশনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে মাঠে আছি। ওই সময় অনেকেই ছিলেন বেশ প্রাণবন্ত। অতীতের মতোই অনেকের ভাষ্য ছিল- ‘শেখের বেটি’ থাকতে ভয় নাই। তিনি ‘শেষ রক্তবিন্দু থাকতে লড়ে যাবেন।’ অর্থাৎ ওই সময় তাদের বিশ্বাস ছিল, সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯