আজ রবিবার | ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ | ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ | সকাল ১১:০২

টানা দ্বিতীয়বার কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

ডান্ডিবার্তা | ১৫ জুলাই, ২০২৪ | ১২:২০ অপরাহ্ণ

আজকের জয়ে কোপায় সর্বকালের সবচেয়ে সফল দলের তকমা পেয়েছে আর্জেন্টিনা। এটি আলবিসেলেস্তাদের ১৬তম শিরোপা। এর আগে আর্জেন্টিনার সমান ১৫টি শিরোপা জিতেছিল উরুগুয়ে।নানান নাটকীয়তার পর অবশেষে শেষ হলো কোপা আমেরিকার ফাইনাল। ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের গোলে কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার কোপা আমেরিকা জিতে নিল আর্জেন্টিনা।

দর্শক–বিশৃঙ্খলার কারণে প্রায় ১ ঘণ্টা ২২ মিনিট দেরিতে শুরু হওয়া আর্জেন্টিনা–কলম্বিয়া ফাইনালের নির্ধারিত ৯০ মিনিটেও ছিল নানা নাটকীয় ঘটনা। চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গেছেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনার অধিনায়কের জায়গায় মাঠে নামা নিকো গঞ্জালেস বল জালে জড়ালেও অফসাইডের কারণে গোল বাতিল করেন রেফারি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলশূন্য থাকা ম্যাচ গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে লাওতারো মার্তিনেজের ১১২ মিনিটের গোলে কলম্বিয়াকে হারিয়ে ত্রিমুকুট জিতেছে আর্জেন্টিনা। মহাদেশীয় শিরোপা, বিশ্বকাপ, আবার মহাদেশীয় শিরোপা—স্পেনের পর এই ত্রিমুকুট জেতা দ্বিতীয় দল এখন আর্জেন্টিনা। ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার পর ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ জেতা আর্জেন্টিনা জিতল ২০২৪ সালের কোপা আমেরিকা। স্পেন এই কীর্তি গড়েছিল ২০১০ বিশ্বকাপের আগে ও পরে ইউরোর শিরোপা জিতে। ইউরোর শিরোপা দুটি তারা জিতেছে ২০০৮ ও ২০১২ সালে।

দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে প্রথম আক্রমণটা করেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু এরপর থেকেই ম্যাচে শুরু হয় কলম্বিয়ার আধিপত্য। পুরো প্রথমার্ধেই আর্জেন্টিনার ওপরে ছড়ি ঘুরিয়েছেন হামেস রদ্রিগেজ–লুইস দিয়াজরা। আর্জেন্টিনাকে কোণঠাসা করে রাখা কলম্বিয়া ম্যাচে প্রথম সুযোগ পায় ৫ মিনিটে। বাঁ প্রান্ত দিয়ে বক্সের বাইরে থেকে লুইস দিয়াজের গড়ানো শট এমিলিয়ানো মার্তিনেজ সহজেই গ্লাভসে নেন। পরের মিনিটেই ডান প্রান্ত থেকে হামেস রদ্রিগেজের ছোট ক্রস থেকে বক্সের মধ্য থেকে ভলি করেন করদোবা, কিন্তু বল দূরের পোস্টে লেগে চলে যায় বাইরে।

এরপর ১৯ মিনিটে দি মারিয়ার দুর্দান্ত এক নিচু ক্রস থেকে বক্সের মধ্যে বল পান আর্জেন্টিনার অধিনায়ক মেসি। প্রথম স্পর্শটাই ছিল গোলমুখী তীব্র গতির শট। কিন্তু আর্জেন্টিনারই এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বলের গতি কমে যায়। কলম্বিয়ার গোলকিপার ভারহাস সহজেই বল গ্লাভসে নেন। ২৬ মিনিটে হালকা চোট পান মেসি। ক্রস করতে গিয়ে তাঁর পায়ে পা লাগে কলম্বিয়ান ডিফেন্ডারের। মাঠের বাইরেও চলে যেতে হয়েছিল। তবে একটু পরই মাঠে ফেরেন তিনি। ৪২ মিনিটে বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি–কিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির ফ্রি–কিক থেকে তালিয়াফিকোর হেড চলে যায় বারের ওপর দিয়ে।

৬৩ মিনিটে দিয়াজের কাছ থেকে বল কেড়ে নিতে গিয়ে পেশিতে টান লাগে মেসির। মাঠে পড়ে যান তিনি। মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার কিছুক্ষণ পর বাইরে চলে যান আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। তাঁর জায়গায় আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি মাঠে নামান নিকোলাস গঞ্জালেসকে। মাঠ ছাড়ার সময় হতাশায় বারবার মুখ ঢাকছিলেন মেসি। গ্যালারিতে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের চোখেমুখেও ছিল একই রকম হতাশা। একটু পর মেসি ডাগআউটে বসে কেঁদেওছেন।

এরপরই দারুণ এক সুযোগ পেয়ে যায় কলম্বিয়া। কিন্তু সেটি কাজে লাগাতে পারেনি তারা। উল্টো করদোবা ফাউল করেন ম্যাক অ্যালিস্টারকে। কিন্তু পায়ে ব্যথা পান করদোবাও। এ কারণে সম্ভাব্য পেনাল্টি চেক করেন রেফারি। পরে অবশ্য আর্জেন্টিনাকেই ফাউল দেন রেফারি।

সেই ফ্রিক–কিক থেকে কলম্বিয়ার বক্সের ঠিক বাইরে বল পেয়ে যান দি মারিয়া। তিনি বক্সের মধ্যে বল বাড়ান তালিয়াফিকোকে। তিনি বল দেন নিকো গঞ্জালেসকে, বল তিনি জালেও জড়ান। কিন্তু এর আগেই সহকারি রেফারি অফসাইডের জন্য পতাকা তোলেন। পরে ভিএআরেও দেখা গেছে তালিয়াফিকো ছিলেন অফসাইডে।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলশূন্য থাকা ম্যাচ গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে ৯৪ মিনিটে রদ্রিগো দি পলের ক্রসে শট না নিয়ে ডামি করেন দি মারিয়া। বল পেয়ে যান তাঁর পেছনে থাকা নিকো গঞ্জালেস, গোললাইন থেকে সেটি বাঁচিয়েছেন ভারহাস। ১০১ মিনিটে আবার দুর্দান্ত এক আক্রমণ থেকে গোল পায়নি কলম্বিয়া। ১০৭ মিনিটে দি মারিয়ার ক্রসে পা লাগাতে পারলেই গোল পেতেন হুয়ান আলভারেজের জায়গায় ৯৭ মিনিটে মাঠে নামা লাওতারো মার্তিনেজ। কিন্তু তিনি তা পারেননি।

১১২ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে রদ্রিগো দি পলের পাস মাঝমাঠে খুঁজে নেয় জিওভান্নি লো সেলসোকে । তিনি বল বাড়ান ডান প্রান্তে বক্সের কাছাকাছি থাকা মার্তিনেজকে। ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়ান ইন্টার মিলানের ফরোয়ার্ড। এ নিয়ে এবারের কোপা আমেরিকায় তাঁর গোল হলো ৫টি। সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারটা উঠছে তাঁরই হাতে। মেসি মাঠ থেকে উঠে যাওয়ার পর ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে নেতৃত্ব পেয়েছিলেন দি মারিয়া। কিন্তু এগিয়ে যাওয়ার তাঁকে তুলে কোচ লিওনেল স্কালোনি মাঠে নামান ডিফেন্ডার নিকোলাস ওতামেন্দিকে।

দি মারিয়া মাঠ থেকে নেমে ডাগআউটে গিয়ে কান্নাভেজা চোখে জড়িয়ে ধরেন মেসিকে। মেসিও কাঁদলেন দি মারিয়াকে জড়িয়ে ধরে। ১৬ বছরের সতীর্থকে বিদায় দেওয়ার কষ্টের সঙ্গে মেসির এবারের কান্নায় মিশে ছিল কিছুক্ষণ পরই কোপা আমেরিকার শিরোপা জিততে যাওয়ার আনন্দও। মেসি–দি মারিয়ারা আনন্দ–বেদনার কান্না যখন মাখামাখি, মাঠে ছড়িয়ে পড়ে তুমুল উত্তেজনা। পিছিয়ে পড় কলম্বিয়ার খেলোয়াড়েরা কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছিলেন না সম্ভাব্য হার। একটা পর্যায়ে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। রেফারি মধ্যস্থতায় থামে সে মারামারি। এরপর…? মেসি–দি মারিয়াদের ইতিহাস, আর্জেন্টাইনদের আনন্দে মেতে ওঠা!




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:২৩
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৮:১৬
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:২৮
  • ১২:০০
  • ১৬:২৬
  • ১৮:১৬
  • ১৯:৩১
  • ৫:৪১
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024