আজ বৃহস্পতিবার | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১ | ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ | রাত ১০:৩৮

শহরে তান্ডবের নায়ক কারা?

ডান্ডিবার্তা | ২৬ জুলাই, ২০২৪ | ১২:০০ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট

গত বৃহস্পতিবার শহরের ২নং রেল গেইট এলাকায় মধ্য রাত পর্যন্ত আন্দোলনের নামে এক ধরনের অরাজকতা চালানো হয়। রাত ১০টার পর পুনরায় পুলিশ বক্সে ও জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ শেষে একদল যুবককে দেওভোগ আওয়ামীলীগ কার্যলয়ে গিয়ে ভাংচুর করতে দেখা যায়। এসময় পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের কথিত আন্দোলনকারীরা মারধর করে। তবে এরা কেহই ছাত্র নয় বলে জানা গেছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্ত বিধানকারী পুলিশ সদস্যদের এসময় আশেপাশে দেখা যায়নি। এর আগে দিনভর নারায়ণগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ইসলামী আন্দোলনের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষে রনক্ষেত্রে পরিনত হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নারায়ণগঞ্জ সদর থানা ঘেরাও, জেলা আওয়ামীলীগ অফিস ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, ২নং রেল গেইটে পুলিশ বক্সে আগুন, পুলিশের গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগসহ নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডে হামলা ও ভাংচুর করা হয়েছে। দিনভর নারায়ণগঞ্জের অবস্থায় ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। পুলিশের টিয়ারসেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপে শতাধিক আহতে হয়েছে। দুপুর থেকে রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়কে দফায় দফায় পুলিশ ও ইসলামী আন্দোলন কর্মীদের মধ্যে ইটপাটকেল বিনিময় চলছিল। শতাধিক বছরের এলিট ক্লাবে হামলার পর কয়েকশত সদস্য চরম আতঙ্ক ও উৎকন্ঠার মধ্যে সময় পার করছে। এদিকে বিকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ মহিলা কলেজের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে এমন গুজবে আন্দোলনকারীরা আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠে। তবে পুলিশ কিংবা হাসপতাল সূত্রে ছাত্রী নিহত হওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা ও পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ-অবরোধ করছে শিক্ষার্থীরা। শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া গোলচত্তর ব্লক করে দিয়েছে তারা। এতে করে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা লিংক রোড, নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা পুরাতন সড়ক ও চাষাড়া-আদমজী-শিমরাইল সড়ক দিয়ে কোন যানবাহন শহরের ঢুকতে পারছে না আবার বেরও হতে পারছে না। শুধু ঔষুধের গাড়ি, এ্যামবুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস এবং রোগীবাহী রিকসা-অটো চলতে দেয়া হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে শহরের উত্তর ও দক্ষিন দিক থেকে একই সময় পৃথক দুটি মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্লে কার্ড ও পোস্টার দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কের দুই নাম্বার রেল গেইট ও চাষাড়া এলাকা প্রদক্ষিন করে। পরে একটি মিছিল দুই নাম্বার রেল গেইট এলাকায় ও একটি মিছিল চাষাড়া গোল চত্তরে বসে পড়ে। এতে শহরের চারটি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দেন, ‘আমরা নই রাজাকার, তুই বেটা স্বৈরাচার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে, লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, শেখ হাসিনা জবাব চাই’ ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, চাইলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’। এসময় পুলিশকে দেখলে ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও ঢাকার বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত নারায়ণগঞ্জের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের অংশ নিয়েছেন। এতে যানবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কার্যত অচল হয়ে আছে পুরো নারায়ণগঞ্জ শহর। এদিকে আইনশৃংখলাবাহিনীর সকাল থেকে শহরের চাষাড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সর্তক অবস্থানে রয়েছেন। চাষাড়ায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশের সাজোয়া যান। দুপুর সাড়ে ১২টায় শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক হয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশের একটি পিক আপ ভ্যান চাষাড়ার দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়িটি ভাংচুর করে। ভাংচুর করার পর গাড়িটি চাষাড়ায় গেলে শিক্ষার্থীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে এসময় গাড়িতে চালক ছাড়া কোন পুলিশ সদস্য ছিল না। এরপর পৌনে একটার দিকে পুলিশ এ্যাকশনে গিয়ে টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশও মুহুমুহ টিয়ারসেল ও গুলি ছুড়তে থাকে। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়ার চারদিকে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে শহরবাসীর মধ্যে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষে পুলিশের টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও ছররা গুলিতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে আহতের নাম পরিচয় জানা যায়নি। বিকালে শিক্ষার্থীরা শহরের ২নং রেল গেইটে পুলিশ বক্সে আগুন দেয়। পরে পাশে জেলা আওয়ামীলীগের অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ। পরে তারা নারায়ণগঞ্জ সদর থানা ঘেরাও করে। এ সময় পুলিশের সাথে শিক্সার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন শিক্ষার্থীদের পক্ষে শহরে মিছিল বের করে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এসময় পুলিশের সাথে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের গেইট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপর টিয়ারসেল ছোড়লে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডে প্রবেশ করে ভাংচুর চালায়। এসময় ক্লাবে থাকা সদস্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সন্ধ্যার পর থেকে ডিআইটি, মিশনপাড়া ও মেট্রোহল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই আন্দোলনকারীরা মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। কোনো যানবাহন ঢাকা থেকে বের হতে পারছে না। আবার কোনো যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ করতে পারছে না। নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত হাজারো যাত্রী হেঁটে যাচ্ছেন। এছাড়া, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিং রোডের জালকুড়ি অংশে অবরুদ্ধ করে রাখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে করে এই সড়কের যাবাহন চলাচল বন্ধ। এদিকে, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সাইনবোর্ড এলাকায় শক্ত অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। তাছাড়া মহাসড়কে টহল দিচ্ছে বিজিবি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।এ সময় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষার্থীরাও এই আন্দোলনে অংশ নেন। এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধর করে তাদের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে ওই দুই নেতার নাম জানা যায়নি। সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে মহাসড়কে উঠ। সকাল ১১ টার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও শিমরাইল আদমজী চাষাঢ়া সড়কে অবস্থান করেন তারা। এ সময় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধর করে তাদের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে ওই দুই নেতার নাম জানা যায়নি। এদিকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক মানুষকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দাবি আদায়ের জন্যে নেমেছি, কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা কররা জন্য না। আমরা কাউকে ভয় করি না। আমাদের ভাইদের রক্ত ঝরেছে আমরা তার বিচার চাই। আমরা যৌক্তিক আন্দোলন করছি। আমরা রাজাকার নই আমরা স্টুডেন্ট। মহাসড়কে অবস্থানরত সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের বুঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া সোনারগাঁ মোগরাপাড় চৌরাস্তা, কাচঁপুর মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা সকল সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:২৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৮:০৬
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৩২
  • ১১:৫৭
  • ১৬:১৯
  • ১৮:০৬
  • ১৯:২০
  • ৫:৪৪
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024