না’গঞ্জে দুইদিনে ১৬ লাঁশ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট

ঢাকার পাশ^বর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জে দুবৃত্তকারীদের সাথে আইনশৃংখলা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কারফিউ ভেঙ্গে দুষ্কুতিকারীরা রাজপথে নামার চেষ্টা করলে আইনশৃংখলা বাহিনীর বাধার সম্মুখিন হন। এসময় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দুষ্কৃতিকারীেদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে দুষ্কৃতিকারীরাও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় দুষ্কৃতিকারী এবং আইনশৃংখলা বাহিনীর মুখোমুখি অবস্থানের ফলে পুৃরো নারায়ণগঞ্জে রণক্ষেত্রে পরিনত হয় এবং দুষ্কৃতিকারীরা শহরব্যাপি ব্যাপক তান্ডবলীলা চালায়। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাল্টাগুলিতে ১৬ জন নিহত হয় বলে জানা গেছে। নিহতরা হলেন রকিব (৩০), আকাশ (১৫), মিলন (৩৮), সজীব (২০), হৃদয় (২৫), সজল (২২), মেহেদী (২০), শাহীন (২৩), মিনারুল ইসলাম (২৫), সুমাইয়া আক্তার সুমি (২০), আলাউদ্দিন (৩৫), সেলিম (২৯), আব্দুস সালাম (২২) এবং সোহেল (২১)।  জানা যায়, কারফিউ চলাকালে গত ২ দিনে দফায় দফায় দুষ্কৃতিকারীদের সাথে আইনশৃংখলা বাহিনীর দফায় দফায় সংয়ঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় যৌথ বাহিনীর গুলিতে গত শুক্রবার ৫ জন এবং শনিবার ৮ জন দুষ্কুতিকারী নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এসময় আহত হয়েছেন শতাধিক দুষ্কৃতিকারী। আহতদের নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হানসপাতালে চিকিতৎসার জন্য প্রেরন করা হয়েছে। এদিকে, জনগনের যানমালের নিরাপত্তার সাথে নিজেদের টহল জোরদার করেছে যৌথবাহিনী। গত সোমবার সকালে কারফিউ চলাকালে কোটা সংষ্কার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ওেক ঘিরে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ-শিমরাইলমোড় থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। টায়ারে আগুন জ¦ালিয়ে বিভিন্ন  উপকরন দিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দুষ্কৃতিকারীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকেব সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এবং ঢাকা-নারায়ষগঞ্জ লিংকরোডের দুদিক দিয়ে অভিযানে নামেন যৌথ বাহিনী। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিমরাইলমোড়ে অবস্থানরকারী দুষ্কৃতিকারীরা যৌথবাহিনীর এলোপাতারী গুলিতে গুলিবিদ্ধহন। এসময় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা এলাকার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তুলার জন্য কঠোর হস্তে দুষ্কৃতিকারীদের প্রতিহত করেন। এসময় যৌথ বাহিনীর মুহুমুহু গুলির শব্দে চারিদিকে আতংক ছড়িয়ে পরে। একই ভাবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডে অবস্থানরত দুষ্কৃতিকারীদেরকেও ছত্রভঙ্গ করে দেন যৌথ বাহিনী। যৌথ বাহিনীর অভিযান চলাকালে হেলিকাপ্টার যোগে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েও দুষ্কৃতিকারীদের ছত্রভঙ্গ করেন র‌্যাব সদস্যরা। এসময় রাকিব নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তাকে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। নিহত রাকিবের বাড়ি ফতুল্লার খোঁজপাড়া এলাকিায় বলে জানা গেছে। বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের কাজীপাড়া ষ্ট্যান্ড ও ভ’ইঘর ষ্ট্যান্ড এলাকায় যেীথ বাইহনীর অভিডযানে ৬ থেকে ৭ জন হতাহত হয়। এরর মধ্যে হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুডিলতে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী (৬৫) বছরের এক বৃদ্ধ মারা যায়। সিদ্ধিরগঞ্জের হতাহতের মধ্যে ৩ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন আকাশ, মিলন এবং সজীব। এর মধ্যে আকাশ এসএসসি পরীক্ষার্থী। তারা বাবা আকরাম হোসেনের সাথে ভ্যানগাড়ীতে করে ফলের ব্যবসা করতেন। একইদিন বিকালে শহরের চাষাড়া বাগে জান্নাত মসজিদের সামনে সড়কে টায়ার জ¦ালিয়ে আগুন দেয় দুবৃত্তরা। খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান ঘটনাস্খলে ছুটে আসেন এবং গাড়ীবহর নিয়ে শহর ঘুরে মহড়া দেন। পরে যৌথ বাহিনী জেলাজুড়ে টহল জোরদার করে। এদিকে, একই দিন বিকালে চাষাড়া মোড়ের উত্তর পাশে পুলিশের সামনে লাঠিসোটা, লোহার রড, পাইপ ও ধারালো আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে একদল যুবকককে প্রকাশ্যে ঘুরপাক করতে দেখা গেছে। এসময় শনিবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, হৃদয়, সজল, মেহেদী, শাহিন, মিনারুল ইসলাম, সুমাইয়া আক্তার সুমি, আলাউদ্দিন। এছাড়াও হাসপাতালে অজ্ঞাত এক ব্যাক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। নারায়ণগঞ্জ খাঁনপুর ৩০০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের ডা. অপু কুমার সাহা জানান, মিনারুল নামের একজন তাদের হাসপাতালে মারা গেছে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। এদিকে. দুস্কৃতিকারীরা গত ২দিনে পিবি আই অফিস ও পার্সপোট অফিস, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর অফিস ও শীতল বাস ডিপোতে অগ্নিসংযোগ করে। নারায়ষগঞ্জ ক্লাবে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। ২নং রেলগেইটে পুলিশ বক্স ও আওয়ামীলীগ অফিসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। আলী আহাম্মদ চ’নকা মিলনায়তন ও পাঠাগারে এবং পাশের সিটি কর্পোরেশনের মার্কেটে হামলা চালায়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত শহরময় তান্ডব চললেও শনিবার শহরে সেনাবাহিনী টহল শুরু করলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে শান্ত হতে শুরু করে।