আজ রবিবার | ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ | ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ | সকাল ১০:৫৭

আতঙ্ক কাটিয়ে স্বস্তি ফিরছে না’গঞ্জে

ডান্ডিবার্তা | ২৭ জুলাই, ২০২৪ | ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক সহিংসতার পর যে ভয়-আতঙ্ক ছড়িয়েছিল, তা ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের সতর্কাবস্থানের কারণে স্বস্তি ফিরছে জনমনে। খুলছে ফুটপাত থেকে শুরু করে মার্কেটের দোকান, বাণিজ্যিক, ব্যাংক-বিমাসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠান। যদিও কারফিউ থাকার কারণে লোক সমাগম কম দেখা যাচ্ছে রাস্তায়। গতকাল শুক্রবার চাষাঢ়া ও আশপাশের প্রতিষ্ঠান, মার্কেট ও ফুটপাত ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, চাষাড়া তেকে শুরু করে ডিআইটি ও আশপাশের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। দোকান খুলেছে ফুটপাতেরও। কিন্তু পথচারী বা ক্রেতা কম থাকার কারণে এসব দোকানে বেচাকেনা আগের মতো নেই। দোকানদাররা বলছেন, আশপাশে বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে। এখন সেনাবাহিনী অবস্থান করছে। এতে ভাঙচুর বা কোনো ধরনের সন্ত্রাস হবে না বলে আমরা নিশ্চিত। কিন্তু ক্রেতারা আসছেন না। মানুষের মধ্যে এখনো আতঙ্ক রয়ে গেছে। তবে বিক্রেতারা আশা করছেন, স্বাভাবিক অবস্থা ফেরার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাও ধীরে ধীরে বাড়বে। চাষাড়ার একটি সুপার শপের ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আন্দোলন শুরু হওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল শুরু হলে গত ১৮ জুলাই দোকান বন্ধ করে দিই। বৃহস্পতি ও শুক্রবার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চলাকালে দোকানের টুল ও ত্রিপল নিয়ে গিয়ে আন্দোলনকারীরা রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। কারফিউ শিথিল হওয়ার পর গত ২৪ ও ২৫ জুলাই দোকান খুললেও তেমন বেচাকেনা হয়নি। আজকে আবার খুলেছি। পাশের মার্কেটে পোশাকের দোকানও খুলেছে। ১২টা পর্যন্ত দুইজন ক্রেতা এসেছেন একটি দোকানে। সেই দোকানের কর্মচারী রইসুদ্দিন বলেন, মানুষ আসা শুরু হয়েছে। তবে আগের মত নেই। আশা করছি আস্তে আস্তে ক্রেতা বাড়বে। মনে হচ্ছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। বাইরে থেকে থেকে ইটপাটকেল ছুড়ে বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পাশে অন্যান্য কয়েকটি ব্যাংক, সুপারশপ, জুতার শোরুম, ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্কেট থাকলেও সেখানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে এসব মার্কেটের বাইরের সিসি ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আঁখের শরবত বিক্রেতা ও আরেক লেবুর শরবত বিক্রেতা বসেছেন। বাকিরা এখনো আসেননি। তাদের একজন রাব্বি মিয়া বলেন, আজকে বিক্রি কম। মানুষ ভয়ে কম বের হচ্ছে। সকাল থেকে মাত্র ৬০ টাকার শরবত বিক্রি হয়েছে। অন্য গতকাল শুক্রবার এই সময়ে প্রায় এক হাজার টাকার শরবত বিক্রি হয়। সহিংসতা ও সাধারণ ছুটির মধ্যে মানুষ বাইরে কম বের হওয়ায় সংকটে পড়েছিলেন এখানকার চা বিক্রেতা, মৌসুমি ফল বিক্রেতা, বাদাম, জুস ও ঝালমুড়ি বিক্রেতার মতো কম আয়ের মানুষ। কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার মাধ্যমে মানুষকে অভয় দেওয়া, কারফিউ শিথিল করার মধ্য দিয়ে বাণিজ্যিক কার্যালয় খোলা ও মানুষের চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টায় গত বুধবার থেকে এসব প্রান্তিক মানুষও পণ্য বিক্রির জন্য বের হন। কথা হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে। তিনি আম ও পেয়ারা কেটে লবণ-মরিচ মেখে ও বিভিন্ন চাটনি ফেরি করে বিক্রি করেন। তিনি বলেন, বেচাবিক্রি বন্ধ থাকায় খুব কষ্টে ছিলাম। সারাদিন ফেরি করে যা লাভ হয় তা দিয়ে কোনো মতে সংসার চলে। যেদিন ব্যবসা চলে না সেদিন ধারদেনা করে খেতে হয়। কদিন তাই হয়েছিল। গত দুইদিন মানুষের চলাচল শুরু করলে ব্যবসা শুরু হয়। তবে খুব একটা বিক্রি হয়নি। পরশুদিন একেবারেই ছিল না। গতকাল থেকে কিছুটা হয়েছে। গত ১৮ জুলাই থেকে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া ও ২নং রেল গেইটে সহিংসতা শুরু হয়। এদিন দুপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা চাষাড়ায় নিলে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা চাষাড়ায় পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। আন্দোলনকারীরা মধ্যরাত অবধি দখলে রাখে চাষাড়া। পরদিন দুপুর পর্যন্ত পুলিশ-ছাত্র কোনো পক্ষ ছিল না। দুপুরে জুমার নামাজের পর ছাত্ররা আবার চাষাড়া দখলে নেয়। গত শুক্রবার সিটি করপোরেশনের আগুন দেয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে হেলিকপ্টারের ওপর থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের। শুক্রবার দিনগত রাত ১২টার পর কারফিউ জারির পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণে নেয়। ওই সহিংসতার শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থার অবসান হয় কারফিউ জারির মাধ্যমে সেনাবাহিনী নামার পর ২৪ জুলাই। এদিন সারা দেশের মতো নারায়ণগঞ্জে চার ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়। ফলে স্বল্প পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র খুলতে থাকে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:২৩
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৮:১৬
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:২৮
  • ১২:০০
  • ১৬:২৬
  • ১৮:১৬
  • ১৯:৩১
  • ৫:৪১
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024