ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ১০ বছর বয়সী শিশু হোসাইনের বাড়িতে এখনো চলছে শোকের মাতম। আন্দোলন চলাকালে গত ২০ জুলাই দুপুরে চিটাগাং রোড এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোলাগুলি ও সংঘর্ষ চলাকালে হোসাইনের বুক ও তলপেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। পরে গত ২২ জুলাই রাত ২টায় তার মামারবাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের বেতোরা গ্রামে লাশ দাফন সম্পন্ন হয়। গতকাল শনিবার বিকালে সরেজমিনে বেতোরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায় শোকার্ত মানুষের ঢল। স্বজন-প্রতিবেশীরা নিহত হোসাইনের মা-বাবাকে সান্ত¡না দেয়ার চেষ্টা করছেন। তারা কোনো সান্ত¡নাই মানছেন না। হোসাইনের বাবা-মা মোবাইল ফোনে সন্তানের ছবি দেখে শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। মা চিৎকার করে বলছেন,‘আন্দোলন আমার বুকের ধন কেড়ে নিল’। নিহত হোসাইনের মা মালেকা বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার দিন পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছিল। মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজ ও ককটেল বিস্ফোরণ, টিয়ারসেলে পুরো এলাকা প্রকম্পিত ও অন্ধকার হয়ে পড়ে। আতঙ্কিত বাসা- বাড়ির লোকজন দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়। কেউ ঘরে, কেউবা ছাদের ওপর থেকে গোলাগুলির দৃশ্য দেখছেন। মানুষের শোরগোল আর আর্তনাদ চলছিল। আমার মানিক ধনকে বলি বাবা ঘর থেকে বের হয়ো না। দুপুরের দিকে খাবার খাইয়ে দেই। সে আমাকে বলে, মা খেলনার গোলাগুলি হচ্ছে, পটকা ফুটাচ্ছে, ফাঁকা গুলি ছুড়ছে, কিছু হবে না, ভয় পেয়ো না। কিছুক্ষণ পর আমার ছেলেকে আর খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তখন তার বাবা বাসার বাইরে ছিল। পরে বুঝলাম, সে পপকর্ন, আইসক্রিম ও চকলেট ফেরি করে বিক্রি করতে বেড়িয়ে গেছে। তিনি জানান, বিকাল গড়িয়ে গেলেও বাসায় ফেরেনি হোসাইন মিয়া। তার বাবা বাসায় ফিরে আসে। পরে সন্তানের খোঁজে তার বাবা মানিক মিয়া বের হন। চিটাগাং রোডসহ আশপাশের এলাকা তন্নতন্ন করে খুঁজেও হদিস মেলেনি হোসাইনের। রাত নয়টার দিকে কেউ একজন এসে মুঠোফোনে হোসাইনের ছবি দেখান। মানিক ও মালেকা সন্তানের আহত অবস্থার ছবি দেখে চিনতে পারেন। তারা জানতে পারেন, হোসাইনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে এক রিকশাওয়ালাকে হাতেপায়ে ধরে রাত সাড়ে ১২টায় ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছান। চিকিৎসকদের কাছে গেলে তারা বলেন, চিটাগাং রোড এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ অনেককেই আনা হয়েছে। আহত সবার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকদের কাছে অনেক অনুরোধ করেও তাদের সন্তানকে দেখার সুযোগ পাননি। চিকিৎসকের কথায় হাসপাতালের বারান্দায় বসে অপেক্ষা করছিলেন, চিকিৎসা শেষ হলে সন্তানকে দেখতে যাবেন। রাত ২টায় একজন নার্স এসে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, তারা কেন এখানে বসে আছেন, পরে নিজের সন্তানের কথা বলেন। তখন ওই নার্স বলেন, ছেলের নাম কী হোসাইন ? তারা বলেন, হ্যাঁ। তখন তাদের লাশঘরের কাছে নিয়ে যান। অনেকগুলো মরদেহের সঙ্গে ছোট্ট হোসাইনের মরদেহ দেখে বাবা মানিক মিয়া জ্ঞান হারান। মা মালেকা বেগমের চিৎকারে ভারী হয়ে উঠে ঢাকা মেডিক্যালের পরিবেশ। যে বয়সে লেখাপড়া আর খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকার কথা, সে বয়সে বাবার সঙ্গে পরিবারের অভাব ঘোচাতে ১০ বছর বয়সী হোসাইন মিয়া ফুটপাতে, রাস্তায়-পার্কে- বাস ষ্ট্যাশনের ঘুরে ঘুরে পপকর্ন, আইসক্রিম ও চকলেট ফেরি করে বিক্রি করত। এদিকে হোসাইনের মরদেহ ২২ জুলাই রাত দুইটার দিকে নানাবাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বারের রাজামেহার ইউনিয়নের বেতরা গ্রামে দাফন করা হয়েছে। নিহত হোসাইনের মামা মোস্তফা কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘হোসাইনের পরিবার ঢাকায় থাকলেও তারার তেমন কিছু নাই। বাপ-ছেলে ফেরি করে যা পায়, তা দিয়ে তাদের সংসার চলত।’ নিহত হোসাইনের বাবা মানিক মিয়া বলেন, আমার ছেলে শনিবার বিকেলে মারা গেছে। তার বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে পেছন দিক দিয়ে বেড়িয়ে গেছে। আর একটি গুলি তলপেটে বিদ্ধ হয়েছে। তার লাশ আনতে গিয়ে আমাদের অনেক বিপদে পড়তে হয়েছে। এই অফিসে যাও, সেই অফিসে যাও। শাহবাগ থানায় গিয়ে জিডি করো। কত স্বাক্ষর দিতে হয়েছে, কত যে হয়রানির শিকার হয়েছি। তারপর সোমবার ১০ হাজার টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ায় ছেলের লাশ আনতে পেরেছি। এই লাশ আনতে গিয়েও বিপদের শেষ ছিল না। দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, তিনি গত শুক্রবার নিহত শিশুর বাড়িতে গিয়ে শোকার্ত পরিবারকে সান্ত¡না দিয়েছেন। সেইসঙ্গে নগদ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
হাবিবুর রহমান বাদল বাংলাদেশের স্বৈরশাসকের পতনের ৪০ দিন পার হলো। এ লেখা যখন লিখছি, তখন আওয়ামী শাসনের ৪০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটে। ছাত্ররা কোটা বাতিলের দাবিতে প্রথমে আন্দোলনে নামলেও পরবর্তিতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি, অনিয়ম আর লুটপাটের অবসান দাবি করে আন্দোলন বেগবান করে। এই আন্দোলনে এক সময় ছাত্রদের সাথে […]
হাবিবুর রহমান বাদল ঘুষ. দুর্নীতি, চাঁদাবাজি আর সন্ত্রাসের কারনে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও বিগত আওয়ামীলীগ শাসনামলে মুখ খুলতে পারেনি। জুলাই বিপ্লবের পর তাদের প্রত্যাশা ছিল সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর অন্তবর্তিকালিন সরকার গঠনের পরও চাঁদাবাজদের দৌরাত্বের অবসান হয়নি। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের ধাক্কায় কেবল চেহারা আর নামের বদল ঘটেছে, চাঁদাবাজি বন্ধ […]
হাবিবুর রহমান বাদল: সাংবাদিকতার নামে দলবাজি করলে শেষ পরিনতি কি হয় মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। মোজাম্মেল হক বাবুকে নিয়ে আলোচনা করার তেমন কিছু নেই। মাঠ পর্যায়ে কিংবা ডেক্সে সাংবাদিকতা করার অভিজ্ঞতা তার না থাকলেও একজন মেধাবী মানুষ হিসাবে তাকে বলা চলে। মোজাম্মেল বাবু কবে কোথায় সাংবাদিকতা করেছেন তা জানা না থাকলেও […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯