আজ বৃহস্পতিবার | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১ | ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ | রাত ১০:১৯

কোটা আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে রাখায় নানা প্রশ্ন

ডান্ডিবার্তা | ৩১ জুলাই, ২০২৪ | ১২:০৬ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা অবস্থায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের ৬ সমন্বয়কের বিবৃতি ঘিরে প্রশ্ন তুলেছেন আইনজ্ঞরা। তারা বলেছেন, সমন্বয়কদের আটকে রাখা এবং বিবৃতি দেওয়ার ঘটনা সম্পূর্ণ বেআইনি। গোয়েন্দা পুলিশ আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করছে। অন্যদিকে সাবেক এক আইজিপি বলেছেন, কোটা আন্দোলন ঘিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। সরকার আলোচনার মাধ্যমে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে দ্রæত সমাধান হওয়া দরকার, নয়তো পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। গতকাল সোমবার সমকালকে তারা এসব কথা বলেন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। গত রোববার সেখান থেকেই তারা দাবি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। কিন্তু পরে বিষয়টি অস্বীকার করে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন কেউ কেউ। ওই সমন্বয়করা এখনও গোয়েন্দা কার্যালয়ে রয়েছেন। বিষয়টি গড়িয়েছে উচ্চ আদালতে। গতকাল মঙ্গলবার তাদের পরিবারের হেফাজতে দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। সমন্বয়কদের ডিবি কার্যালয়ে রাখার বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্‌দীন মালিক বলেন, ‘পুলিশের এই বেআইনি আচরণের কারণ হলো, তাদের কোনো জবাবদিহি নেই। এ জন্য বেসামাল আচরণ করছে। যেখানে গণতন্ত্র সীমিত থাকে সেখানে জবাবদিহির ঘাটতি দেখা যায় এবং এ ধরনের বেআইনি আচরণ করতে দেখা যায়। দেশে কর্তৃত্ববাদী সরকার ব্যবস্থা কার্যকর থাকলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেপারোয়া হয়ে ওঠে। ইদানীং যেসব বিষয় সামনে এসেছে সেগুলো তারই প্রতিচ্ছবি। কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক শিক্ষার্থীদের গোয়েন্দা হেফাজতে নিয়ে বিবৃতি দেওয়া, সেফ কাস্টডির নামে আটকে রাখা, নির্যাতন, তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির না করাসহ যেসব কর্মকান্ড সামনে এসেছে তা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অপরাধমূলক কাজ।’ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় দেশে যা ঘটেছে, তা স্বাধীনতার পর আর ঘটেনি। প্রাণহানি, অগ্নিসংযোগসহ অনেক কিছুই ঘটেছে। রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল। এমনকি অনলাইন মাধ্যমও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অথচ শিক্ষার্থীদের দুটি দাবি ছিল। তারা কোটা সংস্কার এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবি করেছিল। এমন একটি বিষয় নিয়ে আমরা যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি তাতে আলাপ-আলোচনা অপরিহার্য। বিষয়টি আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ঠিক হবে না। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিষয়টি দেখতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডিবির হেফাজতে যে শিক্ষার্থীরা রয়েছেন, তাদের যদি কোনো ধরনের থ্রেট থাকে বা আশঙ্কা থাকে তাহলে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারে। এখন প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষার্থীদের আটকে রেখে বিবৃতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটি তো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। সরকার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। দ্রæত সমাধান হওয়া উচিত। নয়তো পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। সেটা সরকারের জন্য যেমন ভালো হবে না, তেমনি জনগণের জন্যও অস্বস্তিকর হবে।’ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ডিবি পুলিশের কাজ হচ্ছে গোপনে তথ্য সংগ্রহ করা, যাতে দেশে কোনো বড় অসন্তোষ ঘটার আগেই সরকার সতর্ক হতে পারে বা কোনো বড় অপরাধ আর অপরাধী যেন সরকারের নজরদারির বাইরে না থাকে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, গোয়েন্দা পুলিশ আইনের পরিধির বাইরে বেশ কিছু কাজ করছে এবং তা প্রকাশে বিন্দুমাত্র সংকোচ হচ্ছে না। সব সীমা ছাড়িয়ে এবার ছাত্র আন্দোলনের কয়েক সমন্বয়ককে নিরাপত্তা প্রদানের যুক্তিতে গোয়েন্দা হেফাজতে রাখা হয়েছে। এমন নিরাপত্তা বা হেফাজতের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শুধু ডিবি হেফাজতেই রাখা হয়নি; গোয়েন্দা দপ্তর থেকে তাদেরকে দিয়ে আন্দোলন বিষয়ে একটি টাইপ করা বিবৃতি পাঠ করানো হয়েছে। এতে প্রশ্ন উঠেছে এই বিবৃতি কে টাইপ করল। টাইপ করা বিবৃতিতে সমন্বয়করা নিরাপত্তার কারণে নিজেরাই গোয়েন্দা হেফাজতে যেতে চেয়েছেন এমন কিছু উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু তাতে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা রয়েছে! তাহলে এটা নিরাপত্তার হেফাজত কীভাবে হলো?’ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘মানুষকে বোকা ভাবা ঠিক না; আর সব কৌশল সব সময় কাজ করে না এটা গোয়েন্দা পুলিশ না বুঝলে কীভাবে হবে! আন্দোলনের সমন্বয়কারী এবং তাদের অসহায় স্বজনদের আপ্যায়ন করা হলো। আবার সেই ছবি প্রকাশ করা হলো। আটক নয় এমন নাগরিককে এ রকম নিরাপত্তা ও আপ্যায়ন দেওয়া নজিরবিহীন। পরিবার যেখানে মুক্তি দাবি করছে, চিকিৎসকরা যেখানে নির্যাতনের আঘাতের চিকিৎসা দেওয়া জরুরি বিবেচনায় হাসপাতাল থেকে ছাড়তে রাজি ছিলেন না; সেখানে মুক্তি আর চিকিৎসা না দিয়ে হেফাজত, নিরাপত্তা আর আপ্যায়ন করা আসলে সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি।’ সমন্বয়কদের বেআইনি হেফাজতের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত আসা জরুরি বলে মন্তব্য করেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:২৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৮:০৬
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৩২
  • ১১:৫৭
  • ১৬:১৯
  • ১৮:০৬
  • ১৯:২০
  • ৫:৪৪
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024