আজ বৃহস্পতিবার | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১ | ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ | সকাল ৮:০২

যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের জেরে গাজী টায়ার্সে আগুন

ডান্ডিবার্তা | ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
রূপগঞ্জে সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন গাজী টায়ারস কারখানায় লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। কারখানাটিতে প্রথমে এলাকাবাসী লুটপাট চালালেও পরবর্তীতে লুটপাট করাকে কেন্দ্র করে তারাব পৌরসভার যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম ও পৌর ছাত্রলীগের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিন হোসাইন ওরফে রাফির নেতৃত্বে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এরই জের ধরে এদের একটি পক্ষ রাত ৯টার দিকে কারখানাটির নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এদিকে এই ঘটনায় ওই পৌরসভার বিভিন্ন পর্যায়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই ঘটনায় জড়িত রয়েছেন বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়। এর আগে, গত ২৪ আগস্ট রাতে ঢাকার শান্তিনগর এলাকা থেকে গাজী গ্রেপ্তার হওয়ার খবর পাওয়ার পরদিন ২৫ আগস্ট সকাল থেকেই রূপগঞ্জের খাদুন এলাকায় হাজার হাজার মানুষ লুটপাট করতে কারখানাটিতে একত্রিত হোন। পরবর্তীতে সংঘর্ষ থেকে আগুন ধরিয়ে দিলে কারখানাটিতে প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ আটকে পড়ার খবর পাওয়া যায়। কিন্তু কারখানাটি টায়ারসহ কেমিক্যাল সামগ্রী দিয়ে পরিপূর্ণ থাকায় আগুন দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ৩২ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। বর্তমানে এটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও এখনো মরদেহের জন্য কারখানার সামনে স্বজনরা ভিড় করছেন। কারখানার কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, রবিন ও তার ভাই বাবুর লোকজন কারখানায় লুটপাট শুরু করেন। শহিদুলের লোকজন পরে লুট করতে এলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। লুটপাটের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেল পাঁচটা নাগাদ বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার লোক লুটপাটে জড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে কে বা কারা রাত নয়টার দিকে ছয়তলা ভবনটির নিচতলায় আগুন দেয়। এদিকে আগুন লাগার পর কারখানার ভেতরে আটকে পড়া লোকদের স্বজনদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নিখোঁজদের তালিকা করা হয়। ১৭৫ জনের একটি তালিকা করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। তবে পরে ফায়ার সার্ভিস তালিকা তৈরির বিষয়টি অস্বীকার করে। পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নিখোঁজদের তালিকা করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রায় ৪৫ একর জায়গাজুড়ে কারখানাটির অবস্থান। ভেতরে শেডসহ অন্তত ১৬টি স্থাপনা রয়েছে। ২০০২ সালে কারখানাটির উৎপাদন শুরু হয়। কারখানাটিতে দেশে উৎপাদিত রাবার থেকে রিকশা, বাস, ট্রাক, পিকআপ ও অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনের টায়ার তৈরি হতো। গত রোববার জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি কারখানার চত্বরে একটি গণশুনানির আয়োজন করে। সকাল দশটা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত চলে গণশুনানি। এই সময় নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের সাথে কথা বলেন তদন্ত কমিটির লোকজন। তাদের কাছ থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য লিপিবদ্ধ করেন। গণশুনানিতে ৭৮টি পরিবার অংশগ্রহণ করেন বলে জানান কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান। গণশুনানি শেষে কারখানাটির ভেতরে ঢুকে পড়েন নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা। তাদের অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির তৃতীয় তলা পর্যন্ত উঠে যান। সেখানে তারা মেঝেতে পুড়ে যাওয়া বেশকিছু হাড় ও মাথার খুলি পান। “আমরা যখন গণশুনানি শেষে উপজেলা পরিষদে গিয়ে বসি তখন জানতে পারি স্বজনরা ভবনটির ভেতরে ঢুকে পড়েছে এবং সেখানে মানুষের কিছু হাড়গোড় পেয়েছে। পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে বিষয়টি জানালে তিনি আমাদের নির্দেশনা দেন। পরে আমরা এসব দেহাবশেষ সংগ্রহ করার জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেই। স্বজনরা খুঁজে পাওয়া দেহাবশেষ জমা দিয়েছেন। প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে এসব দেহাবশেষ শনাক্তের প্রক্রিয়ায় যাওয়া হবে”- বলেন হামিদুর। এদিকে, এদিন বেলা সাড়ে বারোটার দিকে গণশুনানি চলাকালে স্বজনদের একটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়ে সামনের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় ১০ মিনিট পর তদন্ত কমিটির সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্বজনদের নিভৃত করে সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। নারায়ণগঞ্জ জোন-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মন্নান জানান, টানা আগুনের কারণে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার অভিযান চালানো যায়নি। তবে, ভবনের বেজমেন্টে তল্লাশি চালানো হয়েছে, ড্রোন ও টিটিএলের (উঁচু মই) মাধ্যমে ভবনটির ভেতরেও পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে কিন্তু কোনো ভিক্টিম বা তাদের দেহাবশেষ মেলেনি। এর আগে, গত ২৮ আগস্ট ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ড্রোন ব্যবহার করে বাইরে থেকে হতাহতের অনুসন্ধান চালানো হয়। এদিন ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শারীরিকভাবে ভেতরে প্রবেশ করে হতাহতের খোঁজ করা যাচ্ছে না। এজন্য ড্রোন ব্যবহার করে বাইরে থেকে হতাহতদের অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তবে ড্রোন ব্যবহার করে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত চিহ্নিত করা যায়নি। ফিজিক্যালি সার্চ করার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হবে। ভবনের লোড ক্যাপাসিটির বিষয়ে ওই কমিটি প্রতিবেদন দিলে তার ভিত্তিতে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:২৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৮:০৬
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৩২
  • ১১:৫৭
  • ১৬:১৯
  • ১৮:০৬
  • ১৯:২০
  • ৫:৪৪
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024