আজ শুক্রবার | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ | রাত ৩:৩৯

ভঙ্গুর আ’লীগের তৃনমূলে আর্তনাদ

ডান্ডিবার্তা | ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের তৃনমূল নেতাকর্মীরা শীর্ষ নেতাসহ নারায়ণগঞ্জের যারা আওয়ামীলীগের নামে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন তারা আজ ত্যাগী ও যাদের দ্বারা আওয়ামীলীগের কর্মসূচি সফল করা হতো সেই সকল সুবিধাবঞ্চিত নেতাদের ফেলে বিদেশে পালিয়ে যাওয়াসহ দেশের ভিতরে আত্মগোপান করে থাকায় তাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। সেই সকল সুবিধাভোগীদের জন্য তাদেরও আজ বাড়ি ছাড়া হতে হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে এক শামীম ওসমানের প্রভাব খাটিয়ে বছরের পর বছর দুর্নীতি আর লুটপাট করে যারা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেছে তাদের আর্থিক অসুবিধা না থাকলেও তৃনমূল পর্যায়ের কর্মীরা রয়েছে বিপাকে। তারা পারছেনা বর্তমান পরিস্থিতিতে কারো সাথে মিশতে আবার পারছেনা এলাকায় ফিরতে। তাদের সকল প্রকার রোজি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বলে তাদের দাবি। ৭৫ বছর রাজনীতিতে থাকা দলের এমন করুণ পরিণতির জন্য মুষ্টিমেয় নেতাদের দুষছেন তৃনমূল নেতারা। তাদের অভিযোগ, এত বছর ক্ষমতায় থেকেও সংগঠনকে শক্তিশালী না করে ব্যক্তিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন এই নেতারা। ক্ষমতা তাদের কাছে কুক্ষিগত থাকায় মূল্যায়ন করা হয়নি ত্যাগী নেতাকর্মীদের। মুষ্টিমেয় নেতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ নেতা। তাদের মধ্যে একজন সাংগঠনিক সম্পাদক গণমাধ্যমকে বলেন, ওরা দেশটা গিলে খাইসে, আমাদের কথা শুনে নাই। আমার সঙ্গে কারো যোগাযোগ নাই। এখন রাজনীতিতে নাই। দেখি তারা কী করে। যারা আছে তারা দল চালাক। যাদের দিকে অভিযোগের তীর তারা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দলীয় প্রধানের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরপরই মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য ও দলের অনেক নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে যান। তাদের মধ্যে কেউ কেউ পরে স্থলপথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে চলে গেছেন। কেউ কেউ আকাশ পথেও বিদেশ যেতে সক্ষম হয়েছেন। কেউ পালাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন, বাকিরা এখনও দেশের ভেতরে আত্মগোপনে রয়েছেন। এই অভ্যুত্থানের পরে তো অবশ্যই, আগেও বেশ কঠিন সময় পার করতে হয়েছে আওয়ামী লীগকে। দুঃসময়ে কাউকে পাশে পায়নি না এবং এখনও পাচ্ছে না দেশের সব থেকে পুরনো রাজনৈতিক দলটি। এর জন্য মূলত দুর্নীতিবাজ আর দুর্বৃত্তপরায়ণ নেতাদের দুষছেন অনেক কেন্দ্রীয় নেতা। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন টানা ক্ষমতায় থাকা দলটি ত্যাগী নেতাকর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন করেনি। বরং ব্যবসায়ীমুখী প্রবণতা দেখা গেছে দলটির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে ৬০ শতাংশের বেশি সংসদ সদস্যের চেয়ার ছিল ব্যবসায়ীদের জন্য বরাদ্দ। যেখানেই টাকাওয়ালা সেখানে দেওয়া হয়েছে মনোনয়ন। জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়েও মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে। আবার এমপি কিংবা মন্ত্রীর আত্মীয়রাও ভাগিয়ে নিতেন উপজেলা বা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মনোনয়ন। সব জায়গায়ই আত্মীয়করণের প্রবণতা ছিল প্রবল। আত্মগোপনে থাকা কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা এমনই মত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি ছিল। সেটি নামেমাত্র ছিল। কমিটিকে এক সাইডে রেখে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ ছিল কয়েকজনের হাতে। তাদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তারাই আওয়ামী লীগকে পরিচালনা করেছে। অনেক বিষয়ে তারা জানতেন কিন্তু দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও জানতেন না। এরা দলের হাইকমান্ডকে দেশের সঠিক পরিস্থিতি বা সঠিক তথ্য দিত না। সে কারণে আজকে আওয়ামী লীগের এমন করুণ পরিণতি। আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আকার ছিল ৮১ সদস্য বিশিষ্ট। কিন্তু এখানে কয়জন সক্রিয় রাজনীতিবিদ ছিলেন? এমনও আছে, যাদের দেশের মানুষ চেনে না। প্রশ্ন হলো, আওয়ামী লীগের মতো দলে কেন অপরিচিত বা অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে ভেড়াতে হবে? তারা কী দলের দুর্দিনে থাকবে? এখন দেখেন তারা কিন্তু নেই। আমরা দলের থাকলেও দলের মধুটা কিন্তু উনারাই খেয়েছেন। সরকার পরিচালনা থেকে শুরু করে সব কিছুতেই তারা সামনের সারির লোক। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তারা বাড়াবাড়ি করেছে। তিনি আর বলেন, আওয়ামী লীগের একটি উপদেষ্টাম-লীর কমিটি রয়েছে। সেখানে অনেক অভিজ্ঞ নেতা ছিলেন। করোনা মহামারির আগ পর্যন্ত নেত্রী তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতেন। পরবর্তীতে হাইব্রিডরা নেত্রীর আশেপাশে ভিড়তে থাকে। তাকে সিনিয়রদের কাছ থেকে আলাদা করে। নেত্রীর আশেপাশে সিনিয়ররা থাকলেও এমন আন্দোলন মোকাবিলা করা কোনো বিষয় ছিল না। আমার কাছে মনে হয়, সঠিক তথ্যটাই নেত্রী পায়নি। দলটির সিনিয়র নেতারা জানান, দীর্ঘ দিন ক্ষমতা থাকার কারণে দলের অনেকগুলো উইংস দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তারা কোনো কাজ করতে পারত না। উপর মহলের নির্দেশ বাস্তবায়নে দিন পর করত। সেসব উইংসের যে নিজস্ব কিছু কাজ আছে সেগুলো ভুলে গিয়েছিল। সরকার পতনের এক মাস পেরিয়ে গেলো। অথচ এই সময়ের মধ্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিও দেওয়া গেলো না! এতেই প্রমাণিত হয় উইংগুলো কাজের যোগ্যতা হারিয়েছে। এতে করে বুঝা যায় এখন আওয়ামীলীগ ভঙ্গুর অবস্থায় পরিনত হয়েছে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
নামাজের সময়
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:২৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৮:০৬
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৩২
  • ১১:৫৭
  • ১৬:১৯
  • ১৮:০৬
  • ১৯:২০
  • ৫:৪৪
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024